![মোটা হয়ে গেলে কি ক্যান্সার হতে পারে? মোটা হয়ে গেলে কি ক্যান্সার হতে পারে?](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/pabna-87-2502071804.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন শুধু দেহের আকৃতি পরিবর্তন করে না, এটি হতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ। সাম্প্রতিক গবেষণাগুলো বলছে, স্থূলতা কেবল হৃদরোগ বা ডায়াবেটিসই নয়, ক্যান্সারের ঝুঁকিও বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। ব্রিটেনের দাতব্য সংস্থা ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের গবেষণা অনুযায়ী, অন্ত্র, কিডনি, ওভারিয়ান ও লিভার ক্যান্সারের অন্যতম কারণ এখন ধূমপান নয়, বরং অতিরিক্ত ওজন।
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন যে, অতিরিক্ত ওজন এবং ক্যান্সারের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। ওজন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেহে অতিরিক্ত ফ্যাট জমা হয়, যা হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে এবং কোষ বিভাজনের হার বাড়িয়ে দেয়। ফলে দেহে ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।
ক্যান্সার রিসার্চ ইউকের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত ১৩টি ক্যান্সারের সঙ্গে স্থূলতার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
স্তন ক্যান্সার (মেনোপজের পর) – ওজন বেড়ে গেলে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়, যা স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
অন্ত্রের ক্যান্সার – ফ্যাট কোষ অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টি করে, যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
অগ্ন্যাশয় ক্যান্সার – অতিরিক্ত চর্বি ইনসুলিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা এই ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
খাদ্যনালীর ক্যান্সার – ওজন বেশি হলে গ্যাস্ট্রিক রিফ্লাক্স বেশি হয়, যা খাদ্যনালীতে ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
লিভার ক্যান্সার – অতিরিক্ত ওজন লিভারের ফ্যাট জমার প্রবণতা বাড়ায়, যা লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কিডনি ক্যান্সার – অতিরিক্ত ওজন রক্তচাপ বাড়ায়, যা কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে এবং কিডনি ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।
ওভারিয়ান ক্যান্সার – ওজন বেশি হলে দেহের ইনসুলিন মাত্রা বেড়ে যায়, যা ওভারিয়ান ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।
গলব্লাডার ক্যান্সার – বেশি চর্বি গ্রহণ করলে পিত্তথলিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা বাড়ে, যা ক্যান্সারের ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
কীভাবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়?
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞরা বলছেন:
-
চিনি এবং চর্বিযুক্ত খাবার কমিয়ে দেওয়া উচিত।
-
প্রতিদিন অন্তত ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটাচলা বা ব্যায়াম করা জরুরি।
-
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, যাতে শাকসবজি ও প্রোটিন বেশি থাকে।
-
পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।
স্থূলতা কেবল শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট করে না, এটি প্রাণঘাতী ক্যান্সারেরও অন্যতম কারণ হয়ে উঠছে। তাই সুস্থ ও দীর্ঘায়ু জীবনের জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি। ব্যক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার ও সমাজেরও কার্যকর ভূমিকা রাখা দরকার, যাতে স্থূলতা প্রতিরোধ করে ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস করা যায়।
তাবিব