ছবি: সংগৃহীত
অ্যাসিডিটি একটি সাধারণ সমস্যা যা আমাদের খাদ্যাভ্যাস, জীবনযাপন এবং স্ট্রেসের কারণে সৃষ্টি হতে পারে। এটি গ্যাস্ট্রিক এসিডের অতিরিক্ত উৎপাদন থেকে শুরু হয় এবং পেটের ভিতরে অসস্থি, মাথাব্যথা, জ্বালা বা কাসির মত উপসর্গ তৈরি করতে পারে। তবে, কিছু সহজ লাইফস্টাইল পরিবর্তন এবং খাদ্যাভ্যাসে ছোট পরিবর্তন করে অ্যাসিডিটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।
১. খাবার খাওয়ার পর বেশি ভারী কাজ না করা:
খাবার খাওয়ার পর ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত বিশ্রাম করা উচিত। খাবারের পর ভারী কাজ করলে বা শোলে গেলে এসিডটি পেটের মধ্যে উপরে উঠে আসে, যা অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে। একবারে বেশি খাবার না খেয়ে ছোট-ছোট পরিমাণে খাবার খান। একসঙ্গে বেশি খেলে পেটে অতিরিক্ত এসিড উৎপন্ন হতে পারে। চেষ্টা করুন দিনে ৫-৬ বার খাবার খাওয়ার।
২. গরম খাবার এবং মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন:
অতিরিক্ত গরম, মসলাযুক্ত, অম্লীয়, চর্বিযুক্ত বা তেলতেলে খাবার অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে। এগুলো খাওয়ার আগে পরামর্শ নিন এবং এড়িয়ে চলুন। দ্রুত খাবার খাওয়া অ্যাসিডিটির কারণ হতে পারে, কারণ এতে খাবার পেটের মধ্যে যথাযথভাবে মেশে না এবং পেটের অ্যাসিড বৃদ্ধি পায়। তাই ধীরে ধীরে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং ভালভাবে চিবিয়ে খাবার গ্রহণ করুন।
৩. কফি, চা এবং অ্যালকোহল সীমিত করুন:
ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে, কারণ এগুলো এসিড উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে। এগুলো সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত, বিশেষত যাদের অ্যাসিডিটি সমস্যা রয়েছে। বিপরীতে দই পেটের জন্য উপকারী এবং এটি হজমে সহায়তা করে। প্রতিদিন খাওয়ার পর এক কাপ দই খাওয়া ভালো। এছাড়া, গরম পানি বা লেবুর পানি পানও অ্যাসিডিটি কমাতে সাহায্য করে।
৪. হালকা এবং পুষ্টিকর খাবার খান:
ভাত, সবজি, পুষ্টিকর স্যুপ, পনির, চাপাতি ইত্যাদি খাবার হালকা এবং সহজে হজম হয়, তাই এগুলোকে খাদ্যতালিকায় রাখুন। মিষ্টি আলু, ভাত এবং ভেজি স্যুপ উপকারী হতে পারে। ব্যায়াম হজম শক্তি বাড়ায় এবং পেটের এসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। তবে, ভারী ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রম খাবারের পর না করাই ভালো। ধূমপান অ্যাসিডিটি সৃষ্টি করতে সহায়ক, কারণ এটি খাদ্যনালীর শ্লেষ্মার কভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং অ্যাসিডিটির জন্য বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।
১০. এন্টাসিড গ্রহণ করুন (ডাক্তারের পরামর্শে):
যদি সমস্যা বেশি হয়, তবে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শে এন্টাসিড বা প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (PPI) সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে, এসব সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ অ্যাসিডিটি বাড়াতে পারে। স্ট্রেস কমানোর জন্য ধ্যান, যোগব্যায়াম, সঙ্গীত শোনা বা হালকা হাঁটাচলা করতে পারেন। এটি আপনার মনোযোগ শিথিল করে এবং শরীরের অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। অ্যাসিডিটি থেকে বাঁচতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং কিছু সাধারণ অভ্যাসের মাধ্যমে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। তবে, যদি সমস্যা বৃদ্ধি পায় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
মুহাম্মদ ওমর ফারুক