ছবি: সংগৃহীত
লবণ শরীরের জন্য অপরিহার্য। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ গ্রহণ হৃদপিণ্ড এবং কিডনির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) প্রতিদিন ৫ গ্রাম বা তার কম লবণ গ্রহণের পরামর্শ দিলেও, অধিকাংশ মানুষ প্রক্রিয়াজাত খাবার এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে এই সীমা অতিক্রম করে।
অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ হাইপারটেনশন, হৃদরোগ এবং কিডনির ক্ষতির কারণ হয়। তাই লবণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্বাস্থ্যকর, কম সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের দিকে মনোযোগী হওয়া উচিত।
হৃদপিণ্ডের উপর প্রভাব
অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীরে তরল ধারণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে যা রক্তের পরিমাণ বাড়ায়। এর ফলে ধমনীতে চাপ বৃদ্ধি পায় যা হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি তৈরি করে—যা হৃদরোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। এই চাপ হৃদপিণ্ডকে অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করে। যার ফলে বাম ভেন্ট্রিকুলার হাইপারট্রফি (বাম হৃদপিণ্ডের পেশী বড় হওয়া) হতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত হৃদরোগের ঝুঁকি তৈরি হয়। অতিরিক্ত সোডিয়াম অগ্ন্যাশয় এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাধ্যমে অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (ধমনী সংকীর্ণ হওয়া) তৈরি করে যা হৃদযন্ত্রের আঘাত এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়।
কিডনির উপর প্রভাব
কিডনির প্রধান কাজ শরীরে সোডিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং কিডনির ছোট ফিল্টারিং ইউনিট যেগুলো নেফ্রন নামে পরিচিত, সেগুলোর ক্ষতি করতে শুরু করে। এটি সময়ের সাথে সাথে ক্রনিক কিডনি ডিজিজ (CKD) এর দিকে অগ্রসর হতে পারে এবং কিডনির বর্জ্য নিষ্কাশনের ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। উচ্চ সোডিয়াম স্তরের কারণে কিডনির পাথর তৈরি হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়, কারণ এটি শরীরে ক্যালসিয়ামের ক্ষয়কে উৎসাহিত করে।
সতর্কতা ও প্রতিকার
আপনার হৃদপিণ্ড এবং কিডনিকে সুস্থ রাখার জন্য প্রক্রিয়াজাত খাবার কমিয়ে দিন। তাজা উপাদান ব্যবহার করুন এবং লবণের পরিবর্তে হার্বস বা প্রাকৃতিক মসলার ব্যবহার করুন। একটি সুষম খাদ্য গ্রহণ দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতা নিশ্চিত করতে এবং হৃদরোগ ও কিডনির সমস্যা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিহাব