ছবিঃ সংগৃহীত
সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস এক মহামারির রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে আমাদের দেশে, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের কারণে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সাধারণত আমরা মনে করি, শুধু মিষ্টি খেলেই রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস বাড়ার পেছনে আরও কিছু ‘গোপন’ কারণ রয়েছে, যা অনেকেরই অজানা।
লাইফস্টাইলই ডায়াবেটিসের বড় কারণ!
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু চিনি বা মিষ্টি নয়, আমাদের দৈনন্দিন কিছু ভুল অভ্যাস রক্তে শর্করার মাত্রাকে দ্রুত বৃদ্ধি করতে পারে। কী সেগুলো? আসুন জেনে নিই—
১. জাঙ্ক ফুড ও প্রক্রিয়াজাত খাবার:
ফাস্ট ফুড, প্যাকেটজাত স্ন্যাকস এবং অতিরিক্ত ভাজা খাবারে থাকা ট্রান্স ফ্যাট ও উচ্চ ক্যালরি শরীরের ওজন ও ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত এসব খাবার গ্রহণ করলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ করেই বেড়ে যেতে পারে।
২. ব্যায়ামের অভাব:
আজকের ব্যস্ত জীবনে অনেকেই শারীরিক পরিশ্রমে মনোযোগ দেন না। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়, যা ডায়াবেটিসের অন্যতম কারণ হতে পারে।
৩. পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব:
ঘুমের অভাব শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করে। দীর্ঘমেয়াদী অনিদ্রা টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
৪. অতিরিক্ত মানসিক চাপ:
স্ট্রেসের কারণে করটিসল হরমোনের নিঃসরণ বেড়ে যায়, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়। দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।
৫. পারিবারিক ইতিহাস:
আপনার পরিবারের কারও যদি ডায়াবেটিস থেকে থাকে, তাহলে আপনার ঝুঁকিও বেশি। তাই সময় থাকতেই সচেতন হওয়া জরুরি।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয়
*সুস্থ ডায়েট অনুসরণ করুন: খাদ্যতালিকায় সবুজ শাক-সবজি, গোটা শস্য, ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার ও স্বাস্থ্যকর প্রোটিন রাখুন।
*নিয়মিত ব্যায়াম করুন: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, যোগব্যায়াম বা অন্য কোনো শারীরিক কসরত করা জরুরি।
*মানসিক চাপ কমান: ধ্যান ও শিথিলায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে স্ট্রেস কমিয়ে আনুন।
*পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
*চিনি ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় ও প্যাকেটজাত খাবার কমিয়ে আনুন।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন নয়, যদি আমরা সঠিক জীবনযাপন করতে পারি। তাই আগে থেকেই সচেতন হোন এবং সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
রিফাত