ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১

সব মাথাব্যথাই কি মাইগ্রেইন?

মাথা ব্যাথায় করণীয়

প্রকাশিত: ২১:১৩, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মাথা ব্যাথায় করণীয়

ছবিঃ সংগৃহীত।

মাথাব্যথা বা হেডএক হল একটি খুব সাধারণ সমস্যা, তবে এটি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে এবং তার মধ্যে মাইগ্রেইন একটি বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা। মাইগ্রেইন সাধারণত একেবারে সুনির্দিষ্ট উপসর্গের সঙ্গে সম্পর্কিত, তবে সব মাথাব্যথা মাইগ্রেইন নয়।

মাইগ্রেইন হল এক ধরনের নিউরোলজিকাল সমস্যা যা সাধারণত তীব্র ও পালসেটিং (ঝাঁকানো) ধরনের মাথাব্যথা সৃষ্টি করে। এটি প্রায়ই মাথার একপাশে অনুভূত হয়, যদিও কখনও কখনও দুইপাশে বা পুরো মাথাতেও হতে পারে। অনেক মাইগ্রেইন আক্রান্ত ব্যক্তি দেখতে সমস্যা অনুভব করেন (যেমন অন্ধকার দাগ, ঝাপসা দেখা ইত্যাদি)।মাইগ্রেইন মাথাব্যথার সঙ্গে বমি বা বমি বমি ভাব সৃষ্টি করতে পারে। মাইগ্রেইন আক্রান্ত ব্যক্তিরা হালকা বা শব্দের প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। কিছু সময় খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যেতে পারে।

মাথাব্যথা সাধারণত একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এর কারণ বিভিন্ন হতে পারে। মাথাব্যথা অনেক সময় গুরুতর কিছু সংকেত দেয় না, তবে এর সঠিক কারণ চিহ্নিত না হলে উপযুক্ত চিকিৎসা নেয়া উচিত। মাথাব্যথা শুরু হলে প্রথমে নিজের শরীরকে বিশ্রাম দিন। অযথা চাপ বা কাজের প্রতি মনোযোগ না দিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকুন। একান্ত প্রয়োজন না হলে কোনো পরিশ্রম করবেন না।

মাথাব্যথার অন্যতম কারণ হতে পারে শরীরে পানির অভাব। তাই, পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। বিশেষত, যদি আপনার মাথাব্যথা ডিহাইড্রেশনের কারণে হয়ে থাকে, তাহলে পানি পান করলে তা কমাতে সাহায্য করবে। কিছু মাথাব্যথা (বিশেষত মাইগ্রেইন) আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই, মাথাব্যথা অনুভব করলে অন্ধকার ও শান্ত স্থানে বিশ্রাম নেওয়া ভালো।

মাথার উপর ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক দিলে ব্যথা কমে যেতে পারে। কিছু মানুষ ঠাণ্ডা পানির সেঁক পছন্দ করেন, আবার কিছু মানুষ গরম পানির সেঁক দিতে পছন্দ করেন। মাথার পেছনে অথবা গলা, কাঁধের আশেপাশে সেঁক দিতে পারেন। মাথাব্যথা কমানোর জন্য সাধারণ ব্যথানাশক যেমন প্যারাসিটামল, আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসপিরিন ব্যবহার করতে পারেন। তবে নিয়মিত মাথাব্যথায় ওষুধের ব্যবহার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

অনেক সময় কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রীনে দীর্ঘসময় কাজ করার কারণে মাথাব্যথা হয়। এতে চোখে চাপ পড়ে এবং মাথাব্যথা সৃষ্টি হয়। তাই যদি স্ক্রীনের সামনে দীর্ঘ সময় থাকেন, তাহলে কিছু সময় পর পর বিশ্রাম নিন। কিছু খাবার যেমন ক্যাফেইন, চকলেট, প্রসেসড খাবার, বা অত্যাধিক মশলাদার খাবার মাথাব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে। সুতরাং, মাথাব্যথা হওয়ার সময় এসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। মানসিক চাপ বা স্ট্রেস মাথাব্যথার বড় কারণ হতে পারে। তাই মাথাব্যথা হওয়ার আগে বা এর সময় স্ট্রেস কমানোর জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, যোগ বা মেডিটেশন করতে পারেন।

যদি মাথাব্যথা ক্রমাগত বা খুব তীব্র হয়ে থাকে, কিংবা মাথাব্যথার সঙ্গে অন্য উপসর্গ (যেমন বমি, ঝাপসা দেখা, ভাষা বা স্মৃতির সমস্যা) থাকে, তবে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। দীর্ঘস্থায়ী বা তীব্র মাথাব্যথা কখনও কখনও অন্য গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে, যেমন মাইগ্রেইন, টেনশন হেডএ্যাক, বা ক্লাস্টার হেডএ্যাক। হালকা এক্সারসাইজ মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। হাঁটা, স্ট্রেচিং, যোগাসন বা ধীর গতির ব্যায়াম করতে পারেন। তবে খুব বেশি ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে মাথাব্যথা বেড়ে যেতে পারে, সুতরাং হালকা এক্সারসাইজই সেরা।

Faruk

×