ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

ঘরোয়া পদ্ধতিতে সারিয়ে তুলুন বিরল রোগ রিংওর্ম

প্রকাশিত: ১৯:১৯, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৯:২২, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫

ঘরোয়া পদ্ধতিতে সারিয়ে তুলুন বিরল রোগ রিংওর্ম

ছবি: সংগৃহীত

রিংওয়ার্ম যা দাদ নামেও পরিচিত, একটি সাধারণ ফাংগাল সংক্রমণ যা ত্বকে গোলাকার দাগ সৃষ্টি করে। এটি শুধু ত্বকে নয়, বরং মাথার ত্বক, নখ এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে। এই সংক্রমণ থেকে মুক্তি পেতে অ্যান্টিফাংগাল ওষুধ ব্যবহার করা হয়, যা বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়, যেমন ক্রিম, মলম, লোশন, পাউডার এবং মুখে খাওয়ার ওষুধ।

সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করে সংক্রমণের তীব্রতা ও অবস্থানের উপর। তবে চিকিৎসা সঠিকভাবে না করলে এটি ত্বকের বড় অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এই প্রতিবেদনে রিংওয়ার্ম ও ফাংগাল সংক্রমণের চিকিৎসা, এড়িয়ে চলার বিষয় এবং ডাক্তারের পরামর্শের গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।

ঘরোয়া চিকিৎসার উপায়
অ্যান্টিফাংগাল ক্রিম ব্যবহার: ওষুধবিহীন (ওভার দ্য কাউন্টার) অ্যান্টিফাংগাল ক্রিম, যেমন ক্লোট্রিমাজল, মাইকোনাজল, বা টার্বিনাফিন, নিয়মিত সংক্রমিত স্থানে লাগান। সাধারণত ২ থেকে ৪ সপ্তাহ ধরে ক্রিম ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায়।

ত্বক শুকনো রাখা: সংক্রমিত স্থানে আর্দ্রতা জমতে দেবেন না। ত্বক সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন। সংক্রমিত অংশে আলাদা তোয়ালে ব্যবহার করুন এবং তা প্রতিদিন ধুয়ে পরিষ্কার করুন।

নারকেলের তেল: এতে অ্যান্টিফাংগাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে। দিনে ২-৩ বার ত্বকে লাগান।
টি ট্রি অয়েল: তুলায় কয়েক ফোঁটা নিয়ে সংক্রমিত জায়গায় ব্যবহার করুন। এটি ফাংগাস ধ্বংস করতে কার্যকর।

হলুদের পেস্ট: হলুদের মধ্যে প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিফাংগাল উপাদান রয়েছে।হলুদ পেস্ট তৈরি করে সংক্রমিত স্থানে লাগান। শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দিনে ২-৩ বার এই পদ্ধতি প্রয়োগ করুন।
অ্যালোভেরা জেল: অ্যালোভেরা ত্বকের লালচে ভাব কমায় এবং আরাম দেয়। তাজা অ্যালোভেরা পাতা কেটে জেল বের করে নিন। সংক্রমিত স্থানে সরাসরি লাগান। দিনে কয়েকবার ব্যবহার করুন।
আপেল সিডার ভিনেগার: ভিনেগার ফাংগাস ধ্বংসে অত্যন্ত কার্যকর। তুলায় কয়েক ফোঁটা আপেল সিডার ভিনেগার নিন। সংক্রমিত স্থানে লাগিয়ে শুকাতে দিন। দিনে ২-৩ বার এই পদ্ধতি প্রয়োগ করুন।
নিমপাতার ব্যবহার: নিমে প্রাকৃতিক অ্যান্টিফাংগাল ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে।কিছু নিমপাতা পানিতে সিদ্ধ করে ঠান্ডা করুন। এই পানি দিয়ে সংক্রমিত জায়গা ধুয়ে ফেলুন। নিমের পেস্টও লাগানো যেতে পারে।
নারকেল তেল ও লেবুর রস: নারকেল তেল ফাংগাস ধ্বংসে সহায়ক এবং লেবুর রস সংক্রমণ শুকাতে সাহায্য করে। ১ চা চামচ নারকেল তেলে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে লাগান। দিনে ২ বার এই মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
বেকিং সোডা: বেকিং সোডা সংক্রমিত জায়গার আর্দ্রতা শুষে নিয়ে ফাংগাস প্রতিরোধে সাহায্য করে। বেকিং সোডা ও পানির পেস্ট তৈরি করুন। এটি সংক্রমিত স্থানে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন ১-২ বার করুন।
প্রোবায়োটিক খাবার: ইয়োগার্ট বা দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক খাবার খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। সংক্রমণ দ্রুত ভালো হয়।

ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহারের আগে সংক্রমিত জায়গা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন। সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী হলে বা ছড়িয়ে পড়লে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এগুলো সহায়ক পদ্ধতি হিসেবে কার্যকর, তবে ডাক্তারের দেওয়া চিকিৎসা অনুসরণ করাও গুরুত্বপূর্ণ।

নাহিদা

×