ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) নিয়ে আতঙ্ক ক্রমশ বাড়ছে। প্রথমে চীনে এই ভাইরাস ঘিরে তোলপাড় শুরু হলেও বর্তমানে ভারত বাংলাদেশসহ আরও কিছু দেশে এই ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে শুধু মাস্ক পরা বা পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিলেই চলবে না; শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই ভাইরাস প্রতিরোধে দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, জিঙ্ক, প্রোবায়োটিক এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি।
সংক্রমণ প্রতিরোধে কী খাবেন?
১. ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার: কমলালেবু, লেবু, আঙুর, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি ফল ও সবজি খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। ভিটামিন সি ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
২. কাঁচা রসুন ও হলুদ: কাঁচা রসুনে থাকা অ্যালিসিন ও কাঁচা হলুদের কারকিউমিন অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদের রস সামান্য নুন মিশিয়ে খালি পেটে খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
৩. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: মাছ, আখরোট, তিসির বীজ, বাদাম এবং সয়াবিনে ওমেগা-৩ পাওয়া যায়। এটি শ্বাসতন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
৪. প্রোবায়োটিক খাবার: টক দইয়ের মতো প্রোবায়োটিক খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য বজায় রেখে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করে।
৫. সবুজ শাকসবজি: পালং শাকসহ বিভিন্ন শাকসবজির অল্পমাত্রায় ওমেগা-৩ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদান শরীরকে সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে।
কোন খাবার থেকে দূরে থাকবেন?
১. অতিরিক্ত চিনি, ঠান্ডা পানীয় ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। এগুলো শরীরে প্রদাহ বাড়ায়।
২. অতিরিক্ত ভাজাপোড়া, তেল-মসলা সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
৩. রাস্তার কাটা ফল ও স্যালাড খাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
৪. অ্যালকোহল এবং অতিরিক্ত নুনযুক্ত খাবার কমাতে হবে।
৫. প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটজাত খাবার পরিহার করা উচিত।
অতিরিক্ত কিছু পরামর্শ:
১. শরীরচর্চা বা নিয়মিত ব্যায়াম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
২. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা ও ঘুমের প্রতি যত্নশীল হওয়া জরুরি।
৩. মানসিক চাপ কমাতে যোগব্যায়াম বা ধ্যান করার অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে।
৪. ঠান্ডা বা জ্বরের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
এই ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সচেতনতা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনই মূল চাবিকাঠি। তাই সময় থাকতে সঠিক পদক্ষেপ নিন।
নাহিদা