সংগৃহীত ছবি
আগে শোনা যেত বয়স ৪০ কিংবা ৫০ হলে কারো হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। ভয়ের বিষয় হচ্ছে, ২০ বছরের যুবকও এখন হার্ট এটাকে মারা যাচ্ছে। এর কারণ রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। যখনই রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায় তখন স্ট্রোকের আশঙ্কা বেড়ে যায়। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন এর মাধ্যমে আমরা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে পারি। এই দশটি পছন্দের খাবার বর্জন হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে পারে।
১. মাছের মাথা ও মাছের ডিম: মাছের মাথা ও মাছের ডিম খুবই পুষ্টিকর। তবে যাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আছে বিশেষ করে রক্তে প্রোটিনের পরিমাণ অনেক বেশি তারা এটি পরিমিত খাবেন, প্রয়োজনে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
২. চিংড়ি মাছ: হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার এই চিংড়ি মাছ। বিশেষ করে চিংড়ি মাছের মাথায় থাকে ক্ষতিকর ফ্যাট কোলেস্টেরল। ৩.৫ আউন্স রান্না করা স্যামন মাছে যেখানে ৬২ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে সেখানে একই পরিমাণ চিংড়ি মাছে থাকে ১৮৯ গ্রাম কোলেস্টেরল। তাই একান্তই চিংড়ি মাছ খেতে হলে চিংড়ি মাছের মাথা বাদ দিয়ে খাবেন।
৩. ঘি: বিশুদ্ধ ঘি স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তবে দৈনিক আধা চামচ থেকে এক চামচ। যদি হৃদরোগ থাকে তাহলে আধা চামচ এর চেয়েও কম এমনকি হৃদরোগের মাত্রা বেশি হলে ঘি বর্জন করা উচিত। এর পাশাপাশি মাখন, ডালডা এবং পরিশোধিত তেল কোনোভাবেই খাওয়া উচিত নয় ।
৪. নারকেল: নারকেল দেহের জন্য খুবই উপকারী। বিশেষ করে যারা থাইরয়েড হরমোনের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য নারকেল খাওয়া খুবই ভালো। তবে অতিরিক্ত নারকেল খাওয়া ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই কতটুকু নারকেল খাচ্ছেন সেদিকে খেয়াল রাখুন। প্রতিদিন কোনোভাবেই ৫০ গ্রামের বেশি নারকেল খাওয়া যাবে না।
৫. কলিজা, মগজ, হাড়ের মজ্জা: এগুলো আমরা বাঙালিরা খুব আয়েশ করে খাই। কিন্তু এতে প্রচুর পরিমাণ কোলেস্টেরল থাকে যা হৃদরোগীদের জন্য ক্ষতিকর। তাই যতদিন পর্যন্ত রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না আসছে সে পর্যন্ত এগুলো খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে।
6. রেডমিট: রেডমিট বলতে আমরা গরুর মাংসকেই বুঝে থাকি। রেডমিট ভেঙ্গে দেহে কামির চায়েল নামক একটি যৌগ তৈরি হয়। যা খেলে অক্সাইড নিঃসরণ হয়, আর এর কারণে আর্টারিতে ব্লকের সৃষ্টি হয়। তাই হৃদরোগ বেশি থাকলে গরুর মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিন।
৭. তৈলাক্ত ও ভাজাপোড়া খাবার: অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা তৈলাক্ত খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায়। তার উপর পরিশুদ্ধ তেল। এতে ক্যালোরি থাকে না বললেই চলে। উল্টো যুক্ত হয় ক্ষতিকর কিছু কোলেস্টেরল। তাই রাস্তার পাশে হোক কিংবা বাসায় বানানো হোক ভাজাপোড়া খাবার যত বর্জন করা যায় ততই মঙ্গল।
৮. ডিমের কুসুম: প্রতিদিন একটা পরিপূর্ণ ডিম যে কোন মানুষের জন্য খুবই উপকারী। সেক্ষেত্রে আপনি যদি একের অধিক ডিম খান তাহলে মাথায় রাখতে হবে হৃদরোগ আছে কি না। হৃদরোগ থাকলে একটা ছাড়া বাকিগুলো কুসুম ছাড়া সাদা অংশ খেতে হবে।
৯. মিষ্টি: চিনি দিয়ে মিষ্টি করা যে কোন খাবার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। আপেলের মিষ্টি, আনারসের মিষ্টি খান কোন সমস্যা নেই কিন্তু চিনি দিয়ে বানানো মিষ্টি দেহের জন্য খুব ক্ষতিকর। একইভাবে কোকাকোলা, পেপসি সহ কোল্ড ড্রিঙ্কস এ যেহেতু চিনি আছে সেগুলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর, এমনকি আইসক্রিমও।
১০. ফাস্টফুড: আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন জার্নাল প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী যারা প্রতি সপ্তাহে নিয়মিতভাবে একবার ফাস্টফুড খায় তাদের স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ বেশি। যারা একের অধিক ২/৩ বার খায় তাদের এ সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। আর যারা সপ্তাহে চারবার কিংবা তারও বেশি ফাস্টফুড খায় তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ।
JF