ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা হলে করণীয়

প্রকাশিত: ২২:৩৩, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

গর্ভকালীন রক্তশূন্যতা হলে করণীয়

ছবি : সংগৃহীত

গর্ভাবস্থায় নারীদের স্বাস্থ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া। গর্ভকালে শরীরে ক্যালরির পাশাপাশি লৌহ বা আয়রনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। এই চাহিদা পূরণ না হলে দেখা দেয় রক্তস্বল্পতা, যা মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতে পারে।

গর্ভকালীন রক্তশূন্যতার লক্ষণ

গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতার বেশ কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। সেগুলো হলো:

  • প্রচণ্ড ক্লান্তি ও দুর্বলতা।
  • মাথা ঘোরা ও শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা।
  • দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন।
  • বুকে ব্যথা ও হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া।
  • ঠোঁট ও জিহ্বায় ক্ষত বা ঘা।
  • মানসিক অবসন্নতা ও খিটখিটে মেজাজ।

গর্ভকালীন রক্তশূন্যতায় ক্ষতির আশঙ্কা

গর্ভাবস্থায় রক্ত কম থাকলে মা ও শিশুর পুষ্টি কমে যায়। এটি গর্ভাবস্থার পাশাপাশি ডেলিভারির সময় নানা জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি এটি মা ও শিশুর মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।

রক্তস্বল্পতার কারণে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হতে পারে। পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ না হওয়ায় শিশুর শরীর ও মস্তিষ্কে প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছায় না। এমনকি শিশুর স্নায়ুর বিকাশে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি হতে পারে।

রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে করণীয়

গর্ভকালীন রক্তস্বল্পতা এড়াতে প্রয়োজন সচেতনতা ও সময়মতো সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া।

১. স্বাস্থ্য পরীক্ষা: গর্ভধারণের আগে ও পরে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো।

২. হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা: গর্ভকালীন সময় প্রতি তিন মাসে একবার করে রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পরীক্ষা করা।

৩. সঠিক পুষ্টি: কলিজা, মাংস, ডিম, সবুজ শাকসবজি, মটরশুঁটি, শিম, কলা, পেয়ারা ও আনারের মতো আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।

৪. ডাক্তারের পরামর্শ: আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট সেবন।

৫. সংক্রমণ প্রতিরোধ: কোনো সংক্রমণ থাকলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া।

 

গর্ভকালীন রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে নারীদের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য সচেতনতায় পরিবার, সমাজ ও স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত সবারই এগিয়ে আসা জরুরি। সঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিলে মা ও শিশু উভয়ের জীবন নিরাপদ রাখা সম্ভব।

মো. মহিউদ্দিন

×