মানুষের জীবনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটি হলো মানসিক আঘাত বা ট্রমার সঙ্গে বেঁচে থাকা।মানুষের সবচেয়ে বড় অসহায়ত্ব হল আমরা যে মানুষের থেকে কষ্ট পাই আমাদের ইচ্ছা থাকে সেই মানুষটাই সে আমাদের ক্ষত সারিয়ে যাবে।
কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। যে চলে যায়, সে একেবারেই চলে যায়। রেখে যায় গভীর ক্ষত, যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেরে উঠার বদলে জীবনের অংশ হয়ে যায়।
ড. সুষমা রেজা বলেন, "ট্রমা আসলে পুরোপুরি সারে না। আমরা এটাকে মেনে নেই। মেনে নেওয়া মানে হলো সেই কষ্টটাকে সঙ্গে নিয়ে চলা শেখা।" তাঁর মতে, ক্ষত সারিয়ে তোলা বা "হিলিং" শব্দটি এমন একটা ধারণা দেয় যেন কষ্ট পুরোপুরি দূর হয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবে, আমরা এই ক্ষতকে নিজের জীবনের অংশ হিসেবে মেনে নিই। এটা কোনো সহজ প্রক্রিয়া নয়। তবে এটিই আমাদের মানসিক শান্তি খুঁজে পেতে সাহায্য করে।
মেনে নেওয়ার প্রক্রিয়া
ট্রমা মোকাবিলা করতে হলে প্রথমে এটাকে স্বীকার করতে হয়। যে কষ্ট বা স্মৃতিগুলো আমাদের ভেতরে ক্ষত সৃষ্টি করেছে, সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। বরং মেনে নেওয়া যায় যে এগুলো আমাদের জীবনেরই অংশ।
নিজের দায়িত্ব নেওয়া
ট্রমা থেকে মুক্তি পাওয়ার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া। মানে হলো, নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া, সাহায্য চাইতে ভয় না পাওয়া এবং নিজের অনুভূতিগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।
ভাঙা থেকে শক্তিতে
ট্রমা সেরে না উঠলেও, তা আমাদের ভেতরে নতুন এক শক্তি এনে দিতে পারে। এই অভিজ্ঞতা থেকে আমরা নিজেদের আরও ভালোভাবে চিনতে পারি। আমরা শিখতে পারি, কষ্ট থাকা সত্ত্বেও কীভাবে সুখ খুঁজে নিতে হয়।
ট্রমার ক্ষত আসলেই কি সারে? হয়তো পুরোপুরি সারে না। কিন্তু আমরা যখন এটাকে মেনে নেই, যখন আমরা নিজের প্রতি দায়িত্ব নিতে শিখি, তখন সেই কষ্ট আমাদের জীবনকে থামিয়ে রাখতে পারে না। বরং সেই কষ্ট আমাদের আরও শক্তিশালী করে তোলে।
আফরোজা