ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

মস্তিস্কের বারোটা বাজায় যে অভ্যাস

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ১৬ জানুয়ারি ২০২৫

মস্তিস্কের বারোটা বাজায় যে অভ্যাস

ছবি : সংগৃহীত

অনেকেরই বাইরে যেতে ইচ্ছে করে না। নিজের ঘরে শুয়ে-বসে কিংবা হেডফোনে গান শুনে সময় কাটাতে ভালো লাগে। কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাসগুলো আপনার মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর?

হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুল, ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার্স অ্যান্ড স্ট্রোকসহ বিভিন্ন গবেষণার ভিত্তিতে মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর ১১টি অভ্যাস এবং সেগুলো থেকে পরিত্রাণের উপায় তুলে ধরা হলো:

১. অপর্যাপ্ত ঘুম

অপর্যাপ্ত ঘুম মস্তিষ্কের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর। প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম না হলে নতুন কোষ গঠিত হয় না। এতে স্মৃতিশক্তি, মনোযোগ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়। ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমার্সের ঝুঁকিও বাড়ে।

পরামর্শ:

  • ঘুমের আগে ডিভাইস ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
  • ঘর অন্ধকার ও আরামদায়ক করুন।
  • মাথা ঢেকে ঘুমাবেন না।

২. সকালের নাস্তা এড়িয়ে যাওয়া

সকালের নাস্তা মস্তিষ্কের জন্য জরুরি। নাস্তা বাদ দিলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পরামর্শ:

  • প্রোটিন এবং পুষ্টিকর উপাদানে ভরপুর নাস্তা করুন।

৩. পর্যাপ্ত পানি না খাওয়া

মস্তিষ্কের ৭৫ শতাংশই পানি। পানির অভাবে মস্তিষ্কের টিস্যু সঙ্কুচিত হয়ে যায়।

পরামর্শ:

  • দিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করুন।

৪. অতিরিক্ত চাপ ও শুয়ে-বসে থাকা

দীর্ঘ সময় মানসিক চাপ নেওয়া এবং শুয়ে-বসে থাকা মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করে।

পরামর্শ:

  • চাপ কমাতে মেডিটেশন বা ব্যায়াম করুন।
  • প্রতি আধা ঘণ্টায় কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন।

৫. গুগল সার্চের ওপর নির্ভরশীলতা

প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারে স্মৃতি ও চিন্তাশক্তি দুর্বল হয়।

পরামর্শ:

  • হিসাব নিজে করার চেষ্টা করুন।
  • শব্দজট, পাজল, সুডোকু ইত্যাদি খেলুন।

৬. হেডফোনে উচ্চ শব্দে গান শোনা

হেডফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার শ্রবণশক্তি কমায়, যা মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে।

পরামর্শ:

  • ভলিউম ৬০ শতাংশের নিচে রাখুন।
  • প্রতি ঘণ্টায় কিছুক্ষণ বিরতি দিন।

৭. একা থাকা ও সামাজিক না হওয়া

একাকিত্ব বিষণ্নতা, উদ্বেগ এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

পরামর্শ:

  • বন্ধু ও পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান।

৮. নেতিবাচক চিন্তা ও সঙ্গ

নেতিবাচক চিন্তা মস্তিষ্কের টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত করে।

পরামর্শ:

  • ইতিবাচক চিন্তা চর্চা করুন।
  • নেতিবাচক মানুষের সঙ্গ এড়িয়ে চলুন।

৯. অন্ধকারে সময় কাটানো

অন্ধকারে বেশি সময় থাকলে মস্তিষ্কে বিষণ্নতা দেখা দেয়।

পরামর্শ:

  • প্রতিদিন সূর্যের আলোতে কিছুক্ষণ সময় কাটান।

১০. ভুল খাদ্যাভ্যাস

অতিরিক্ত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড মস্তিষ্কের ধমনীগুলোতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল জমা করে।

পরামর্শ:

  • পুষ্টিবিদের পরামর্শে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করুন।
  • ধূমপান ও মদপান এড়িয়ে চলুন।

১১. অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইম

স্ক্রিন টাইম বেশি হলে মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

পরামর্শ:

  • স্ক্রিন থেকে নির্দিষ্ট বিরতি নিন।
  • ফোন পকেটে না রেখে ব্যাগে রাখুন।

মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে সচেতন হোন এবং দৈনন্দিন অভ্যাসে ইতিবাচক পরিবর্তন আনুন।

মো. মহিউদ্দিন

×