ছবি: সংগৃহীত
সন্তান ধারণের আগে নারীর শরীর ও মানসিক প্রস্তুতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সুস্থ সন্তান জন্মদানের জন্য আগে থেকেই কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও জীবনযাপনের নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। চিকিৎসকদের মতে, পরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণের প্রস্তুতি নিলে মা ও শিশু দুজনই সুস্থ থাকে।
গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক পূর্বের স্বাস্থ্য ইতিহাস, চলমান ওষুধ ও শারীরিক অবস্থা পর্যালোচনা করবেন। ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েড, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তস্বল্পতা ইত্যাদি সমস্যা থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে আনা জরুরি। কারণ এসব রোগ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে গর্ভকালীন বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
ওজন বেশি হলে নিয়মিত ডিম্বাণু নিঃসরণের সমস্যা হতে পারে, যা গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। পাশাপাশি গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-একলামশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। আবার স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন কম থাকলে শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হতে পারে। তাই ওজন স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।
পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ
গর্ভধারণের আগে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আঁশযুক্ত খাবার, ক্যালসিয়াম ও ফলিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া উচিত। ছোট মাছ, সামুদ্রিক মাছ, শাকসবজি, ডিম ইত্যাদি খাবার ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণে সহায়তা করে। ফলিক অ্যাসিড শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ু গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দিনে এক কাপের বেশি চা বা কফি পান না করাই ভালো, কারণ এতে থাকা ক্যাফেইন গর্ভাবস্থায় ক্ষতিকর হতে পারে।
ব্যায়াম ও সুস্থ জীবনযাপন
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখে। ধূমপান ও মদপান গর্ভপাত, শিশুর কম ওজন ও জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এসব অভ্যাস পরিহার করা প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন গ্রহণ
গর্ভধারণের আগে কিছু ভ্যাকসিন নেওয়া জরুরি। রুবেলা ভাইরাস গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটির কারণ হতে পারে। তাই রুবেলা অ্যান্টিবডি না থাকলে এমএমআর টিকা নেওয়া উচিত। এছাড়া ছয় বছরের মধ্যে টিটেনাস টিকা না নিলে সেটি গ্রহণ করা প্রয়োজন।
সন্তান ধারণের আগে সঠিক প্রস্তুতি গ্রহণ করলে মা ও শিশু উভয়ের সুস্থতা নিশ্চিত হয়। তাই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সুষম খাদ্যগ্রহণ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে গর্ভধারণে এগিয়ে যাওয়া উচিত।
তাবিব