ছবি: সংগৃহীত
শিশুর জন্য মায়ের দুধই হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম খাবার, যার কোনো বিকল্প নেই। নবজাতকের জন্য বুকের দুধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি শিশুর সঠিক বিকাশ ও স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। মায়ের দুধে থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিবডি শিশুর প্রথম টিকার কাজ করে, যা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, শিশুকে প্রথম ৬ মাস শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানো উচিত এবং এর পরও শিশুকে অন্তত দুই বছর পর্যন্ত মায়ের দুধ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। মায়ের দুধে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সঠিক পরিমাণে থাকে, যা শিশুর সুস্থতা এবং বিকাশের জন্য অপরিহার্য। এতে রয়েছে প্রোটিন, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ভিটামিনসহ অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যা শিশুর শরীরের প্রয়োজনীয়তার সাথে মিল রেখে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হয়।
মায়ের দুধের উপকারিতার মধ্যে রয়েছে-
- শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য গঠনে সাহায্য।
- শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো এবং বিভিন্ন রোগ যেমন ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ইত্যাদি থেকে রক্ষা করা।
- শিশুমৃত্যুর হার কমানো।
- মায়ের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখা।
- শিশু ও মায়ের মধ্যে একটি শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বুকের দুধ শিশুর ক্যানসার, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং বিভিন্ন মারাত্মক রোগের ঝুঁকি কমায়। শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে বছরে ৮ লাখেরও বেশি শিশুর মৃত্যু রোধ করা সম্ভব।
এছাড়া, মায়ের দুধ অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী, কারণ এটি প্রস্তুত করতে কোনো আলাদা খরচ বা ঝামেলা নেই। এর পাশাপাশি মায়ের দুধ শিশুদের মেধা ও বুদ্ধির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে, যা কৃত্রিম খাবারের মাধ্যমে সম্ভব হয় না।
বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহে শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়, যাতে বিশ্বজুড়ে সব মা-বাবা তাদের শিশুদের জন্য সঠিক ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে পারে।
শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশে বুকের দুধ খাওয়ানো নিশ্চিত করতে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করে প্রত্যেক মা তাদের সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর গুরুত্ব বুঝতে পারবেন।
তাবিব