ছবি: সংগৃতহত।
শিশুরা সাধারণত চঞ্চল স্বভাবের হয়, তবে কখনও কখনও তাদের অতিরিক্ত চঞ্চলতা দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা তৈরি করতে পারে। অতিরিক্ত চঞ্চলতা ও অমনোযোগিতা শিশুর মানসিক সমস্যার কারণ হতে পারে, যা সাধারণত অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিসঅর্ডার (এডিএইচডি) নামে পরিচিত।
এডিএইচডি একটি স্নায়ু বিকাশজনিত আচরণগত সমস্যা, যার ফলে শিশুর মনোযোগ বজায় রাখতে সমস্যা হয় এবং অতিরিক্ত উত্তেজনা বা চঞ্চলতার সৃষ্টি হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জিনগত কারণে এ রোগের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। জমজ শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা ৯০% পর্যন্ত হতে পারে এবং বাবা-মায়ের মধ্যে যদি এ রোগ থাকে, তাহলে শিশুর মধ্যে ৫০% সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া মস্তিষ্কের গঠনগত পরিবর্তন, স্নায়ুবিক রাসায়নিক পদার্থের তারতম্য, হরমোনজনিত সমস্যা, মস্তিষ্কের প্রদাহ এবং পরিবেশগত কারণে এই রোগ হতে পারে।
পুষ্টিবিদ আয়শা সিদ্দিকা জানান, বর্তমানে অনেক বাবা-মা তাদের বাচ্চার এডিএইচডি লক্ষণগুলো স্বাভাবিক মনে করে এড়িয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে মোবাইল বা টিভি দেখিয়ে খাওয়ানো এবং অন্যান্য ভুল অভ্যাসের কারণে শিশুর মনোযোগ বিঘ্নিত হচ্ছে। বাবা মায়েরাও এখন আর বাচ্চার মনযোগ আকর্ষণ করতে পারছে না। ফলে বয়স বারার সাথে সাথে এ অভ্যাসগুলো তাদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
সাধারণত ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে এডিএইচডি দেখা যায়, এবং বিশেষ করে ১-৪ বছর বয়সের শিশুরা এই সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হয়। অতিরিক্ত চঞ্চলতা, আবেগপ্রবণতা এবং কাজের প্রতি অমনোযোগিতার কারণে শিশুর স্কুল ও বাসায় সমস্যা দেখা দেয়, এবং প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটে। এই রোগ পৃথিবীজুড়ে শতকরা ৫% শিশুদের মধ্যে পাওয়া যায় এবং ছেলেশিশুর মধ্যে এটি ৩ গুণ বেশি দেখা যায়।
এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুদের প্রথম লক্ষণ সাধারণত অমনোযোগিতা এবং অতিরিক্ত উত্তেজনা। তবে সঠিক চিকিৎসা এবং প্রাথমিক পর্যায়ে মনোযোগ দেওয়া হলে তাদের পরিস্থিতি উন্নত করা সম্ভব।
সূত্র: https://www.facebook.com/share/r/1B2J6Pr3HJ/
সায়মা ইসলাম