কিডনি হলো আমাদের শরীরের একটি অপরিহার্য অঙ্গ, যা শরীরের বর্জ্য পদার্থ দূর করার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ রক্ত পরিশোধন কাজ করে। সুস্থ কিডনি থাকলে শরীর স্বাভাবিকভাবে কাজ করে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কিডনি খারাপ হলে তা বোঝা যায় কীভাবে?
কিডনির সমস্যা বুঝার লক্ষণ:
কিডনি ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সেটা বোঝা যায় শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থের নিয়ন্ত্রণে সমস্যা দেখা দিলে। সাধারণ ইউরিন পরীক্ষার মাধ্যমে প্রথম ইঙ্গিত পাওয়া যায়—যদি ইউরিনের ফ্যান শুকানোর পরেও অ্যালবুমিন বা প্রোটিন দেখা যায়, তবে সেটা কিডনি সমস্যার সম্ভাবনা জানিয়ে দেয়। এছাড়াও, স্পট ইউরিক অ্যাসিড টেস্ট কিংবা প্রোটিন টেস্ট করানোর মাধ্যমে কিডনির ফিল্টারিং ক্ষমতা বুঝা যায়।
কিডনি ফাংশন টেস্ট:
১. এজেডওয়াই (আলবুমিন-ক্রিয়েটিনিন রেশিও): যদি ইউরিন পরীক্ষায় প্রোটিনের পরিমাণ ৩০ মিলিগ্রাম থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম থাকে, তবে সেটা চিন্তার বিষয়। ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
২. ইএফআর (ইস্টিমেটেড গ্রেফিল্ড ফাংশন রেট): কিডনির কাজের মাত্রা বোঝানোর জন্য সাধারণত ৯০ ইএফআরকে স্বাভাবিক ধরা হয়। তবে ৬০ ইএফআর পর্যন্ত সমস্যা খুব চিন্তার বিষয় নয়। কিন্তু যদি কোনো তরুণের বয়স ২০ বছর এবং ইএফআর ৪০ হয়, তাহলে তা নিশ্চিতভাবে আরও গভীর তদন্তের দাবি রাখে।
কিডনি ভালো রাখতে করণীয়:
কিডনির যত্নে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিয়মিত ব্লাড প্রেসার ও সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা। এছাড়াও ধূমপান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল এবং হেভি মেটালযুক্ত হার্বাল চিকিৎসা থেকে দূরে থাকা দরকার। হারবাল চিকিৎসা যেমন ব্যথানাশক হয়, তা কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
বিভিন্ন হারবাল ওষুধ, যেখানে ভারী ধাতু—যেমন লেড, মার্কারি—থাকে, তা কিডনি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ফলে কিডনি সুস্থ রাখতে ব্যথানাশক ওষুধের প্রতি সচেতন থাকতে হবে।
কিডনি সুস্থ রাখা সহজ নয়, তবে সঠিক পরীক্ষা এবং সচেতন জীবনযাপনের মাধ্যমে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ভালো ডায়েটের মাধ্যমে কিডনির কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে হবে।
রিফাত