ডা. তাসনিম জারা
ডা. তাসনিম জারা সম্প্রতি তার একটি ভিডিও বার্তাতে পুত্র সন্তান হওয়ার কিছু কুসংস্কার এবং এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা প্রদান করেন এবং এর পর তিনি বলেন,পুত্র সন্তান পাওয়ার জন্য নানা ধরনের পদ্ধতি ও কৌশলের কথা বিভিন্ন সময়ে প্রচলিত ছিল। কিছু পদ্ধতি ছিল সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক, কিছু ছিল অযৌক্তিক, আর কিছু শুধু কুসংস্কারের উপর ভিত্তি করে তৈরি। আজকের যুগে এগুলো শোনার পর হাস্যকর মনে হলেও, একসময় এগুলো বেশ জনপ্রিয় ছিল এবং মানুষ সেগুলোতে বিশ্বাসও করত।
একজন বিজ্ঞানী একসময় একটি বই লিখেছিলেন, যেখানে তিনি উল্লেখ করেছিলেন যে, ছেলে সন্তান পেতে হলে পুরুষদের অণ্ডকোষ কেটে ফেলা কার্যকর হতে পারে। তার দাবি ছিল, এই পদ্ধতি ছেলে সন্তান পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করবে। যদিও এই ধরনের ধারণা এখন অবৈজ্ঞানিক বলে প্রমাণিত, তবুও বইটি সেই সময় বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল। বইটির নাম ছিল “The Art of Living Boy”, অর্থাৎ পুত্র সন্তান পাওয়ার কৌশল। এই বইয়ের অনেক কপি বিক্রি হয়েছিল, যা প্রমাণ করে যে মানুষ তখন কতটা কুসংস্কারের শিকার ছিল।
বর্তমান সময়ে "বিলিংস মেথড" নামে একটি পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। এটি মূলত একটি প্রাকৃতিক পারিবারিক পরিকল্পনার পদ্ধতি, যা নারীর ডিম্বস্ফোটনের (ovulation) সময় শনাক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। যদিও এটি মূলত সন্তান ধারণের জন্য পরিকল্পনার একটি প্রক্রিয়া, অনেকেই এটিকে পুত্র সন্তান পাওয়ার উপায় হিসেবে ভুলভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করেন।
বিলিংস মেথড ছাড়াও বিভিন্ন সময় এমন অনেক গবেষণার কথা শোনা যায়, যেখানে বলা হয় কোন সময় সহবাস করলে ছেলে সন্তান হতে পারে বা মেয়ে সন্তান হতে পারে। এসব পদ্ধতির কার্যকারিতা কখনোই বিজ্ঞানসম্মতভাবে প্রমাণিত হয়নি।
বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা: ছেলে বা মেয়ে সন্তান হওয়ার কারণ
পুত্র বা কন্যা সন্তান নির্ধারণ হয় পুরুষের শুক্রাণুর মাধ্যমে। পুরুষের শুক্রাণুতে দুটি ধরনের ক্রোমোসোম থাকে—X এবং Y।X ক্রোমোসোম নারীর ডিম্বাণুর X ক্রোমোসোমের সঙ্গে মিলিত হলে কন্যা সন্তান হয়। Y ক্রোমোসোম নারীর ডিম্বাণুর X ক্রোমোসোমের সঙ্গে মিলিত হলে পুত্র সন্তান হয়।
ডিম্বাণু সবসময় X ক্রোমোসোম বহন করে, আর সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে তা নির্ভর করে পুরুষের শুক্রাণুতে কোন ধরনের ক্রোমোসোম রয়েছে। এর বাইরে কোনো পদ্ধতি বা কৌশলে এই প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
রাসেল