মেনস্ট্রুয়াল কাপ।
ঋতুস্রাবের সময়ে ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পনের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসাবে উঠে এসেছে মেনস্ট্রুয়াল কাপ-এর ব্যবহার। তবে এটি জনপ্রিয় হওয়ার পথে অন্যতম অন্তরায় মেনস্ট্রুয়াল কাপকে ঘিরে নানা রকম ভ্রান্ত ধারণা। মেনস্ট্রুয়াল কাপ যোনির ভিতরে প্রবেশ করাতে হয়, তাই অনেক অল্পবয়সি ও অবিবাহিত মেয়েরা এই কাপ ব্যবহার করতে ভয় পান। কিন্তু এই কাপ যেমন সুরক্ষিত, তেমনই যে কোনও বয়সের মেয়েরাই ব্যবহার করতে পারেন।
রাবার বা সিলিকনের তৈরি মেনস্ট্রুয়াল কাপ অনেকটা ছোট ফানেলের মতো দেখতে। ঋতুস্রাবের সময়ে এটি ভাঁজ করে যোনিপথ দিয়ে ঢুকিয়ে দিতে হয়। তার পরে সেটা ছাতার মতো খুলে গিয়ে জরায়ুমুখে আটকে যায়। ঋতুস্রাবের সময়ে এর মধ্যেই জমে ঋতুকালীন রক্ত। মেনস্ট্রুয়াল কাপ যোনির ভিতরে প্রবেশ করাতে হয়, তাই অল্পবয়সি ও অবিবাহিত মেয়েরা এই কাপ ব্যবহার করতে ভয় পান। কিন্তু এই কাপ যেমন সুরক্ষিত, তেমনই যে কোনও বয়সের মেয়েরাই এটি ব্যবহার করতে পারেন।
স্যানিটারি ন্যাপকিনের তুলনায় মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করা কেন বেশি সুবিধাজনক-
১. মেনস্ট্রুয়াল কাপ পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এক-একটি কাপ চাইলে পাঁচ বছর পর্যন্তও ব্যবহার করা যায়। শুধু জানতে হবে, কাপ পরিষ্কার করার ঠিক কায়দা। প্রতি মাসে ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে কাপটিকে স্টেরিলাইজ করে নিতে হবে। ব্যবহারের পরে মিনারেল ওয়াটার দিয়ে পরিষ্কার করে পুনরায় স্টেরিলাইজ করে নিয়ে নির্দিষ্ট পাউচে ভরে রাখুন। খোলা রাখবেন না। স্যানিটারি প্যাডের তুলনায় এই মেনস্ট্রুয়াল কাপ অনেক বেশি সাশ্রয়কর।
২. মেনস্ট্রুয়াল কাপের কারণে যোনিতে সংক্রমণের ঝুঁকি প্রায় থাকে না বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে কোনও জ্বালা ভাব অনুভূত হয় না। বরং স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করলে যোনির চারপাশে র্যাশ বেরিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। দীর্ঘ ক্ষণ একই প্যাড ব্যবহার করলে যোনিতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই বেশি। এতে জরায়ু-মুখের ক্যানসারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই প্যাডের তুলনায় মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করা কিন্তু অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।
৩. স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহারের সময়ে রক্ত জামাকাপড়ে লেগে যাওয়ার মতো আশঙ্কা থেকেই যায়। তবে মেনস্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি কম। মেনস্ট্রুয়াল কাপ পরে হাঁটাচলা, ঘুমোনো, খেলাধুলা- সবই অনেক বেশি সহজ হয়। প্যাড মোটেই পরিবেশবন্ধব নয়। তার বদলে মেনস্ট্রুয়াল কাপ অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব।
এম হাসান