রক্তে শর্করার মাত্রা কতটুকু থাকা স্বাভাবিক? আর কতটুকু থাকলে ডায়াবেটিস? এ নিয়ে অনেকের মনে অনেক রকম ধারণা রয়েছে। চলুন জেনে নেয়া যাক, শর্করার পরিমাণ কতটুকু হলে ডায়াবেটিস হবে সেটি জেনে নেয়া যাক!
রক্তে শর্করা পরিমাপ করার জন্য তিনটি সময় নির্ধারণ করা হয়। একটি খালি পেটে, আরেকটি খাওয়ার পর এবং অন্যটি গড় তিন মাসে (HbA1c) পর। তিন সময়েই আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ আলাদা আসবে। স্বাভাবিক মাত্রার তারতম্য ঘটতে পারে ব্যক্তির বয়স, লিঙ্গ এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা অনুযায়ী।
একজন সাধারণ মানুষ এবং ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার স্বাভাবিক মাত্রা সম্পর্কে জেনে নিন...
খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা- সাধারণ: ৭০ থেকে ৯৯ মিগ্রা/ডিএল, ডায়াবেটিক হওয়ার মতো অবস্থা: ১০০ থেকে ১২৫ মিগ্রা/ডিএল, ডায়াবেটিক হলে: ১২৬ মিগ্রা/ডিএল বা তার বেশি। সকালে খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা ভাল, যখন আপনি কমপক্ষে ৮ ঘন্টা কিছু খাননি। খালি পেটে রক্তে শর্করার মাত্রা ইনসুলিনের প্রতি আপনার শরীরের সংবেদনশীলতা প্রতিফলিত করে।
সকালে নাস্তার পর রক্তে শর্করার মাত্রা- সাধারণ: ১৪০ মিগ্রা/ডিএল- এর কম, ডায়াবেটিক হওয়ার মতো অবস্থা হলে: ১৪০ থেকে ১৯৯ মিগ্রা/ডিএল, ডায়াবেটিক: ২০০ মিগ্রা/ডিএল বা তার বেশি। নাস্তার পর রক্তে শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করা খাওয়ার পরে শরীর কীভাবে গ্লুকোজ প্রক্রিয়া করছে তা জানতে সহায়তা করে। একজন সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে এই স্তর খাওয়ার ১-২ ঘন্টা পরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। দুপুরের খাবারের পর রক্তে শর্করার মাত্রা: সাধারণ: ১৪০ মিগ্রা/ডিএল- এর কম, প্রাক-ডায়াবেটিক অবস্থা: ১৪০ থেকে ১৯৯ মিগ্রা/ডিএল, ডায়াবেটিক হলে: ২০০ মিগ্রা/ডিএল বা তার বেশি। দুপুরের খাবারের পর রক্তে শর্করার মাত্রা প্রাতঃরাশের পরের অবস্থার সমান হওয়া উচিত। এই সময় রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি থাকে।
রাতের খাবার পরবর্তী রক্তে শর্করার মাত্রা- সাধারণ: ১৪০ মিগ্রা/ডিএল এর কম, প্রাক-ডায়াবেটিক অবস্থা: ১৪০ থেকে ১৯৯ মিগ্রা/ডিএল, ডায়াবেটিক হলে: ২০০ মিগ্রা/ডিএল বা তার বেশি।
রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখার টিপস:
-নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
-স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার খেতে হবে।
-মিষ্টি এবং জাঙ্ক ফুড খাওয়া কমিয়ে দিতে হবে।
যদি আপনার ওজন বেশি হয় তাহলে নিয়মিত রক্তে শর্করার পরিমাণ পরীক্ষা করুন।আপনার পরিবারের কারও ডায়াবেটিসের ট্র্যাক রেকর্ড থাকে বা আপনার বয়স ৪৫ বছরের বেশি হলে বাড়তি সতর্ক হতে হবে। রক্তে শর্করার খুব বেশি বৃদ্ধি (হাইপারগ্লাইসেমিয়া) এবং খুব কম হওয়া (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) উভয়ই বিপজ্জনক হতে পারে।
হাইপারগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি): এটি চোখ, কিডনি, স্নায়ু এবং হৃদয়ের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার মাত্রা কম): মাথা ঘোরা, দুর্বলতা এবং অজ্ঞান হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
এমএম