ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১

হাড়ের ক্যান্সার

ডা. মো. সিরাজুস সালেহীন

প্রকাশিত: ২১:০৩, ২১ অক্টোবর ২০২৪

হাড়ের ক্যান্সার

হাড়ের ক্যান্সার বা টিউমারের লক্ষণ

হাড়ের ক্যান্সার বা টিউমারের লক্ষণ ও চিকিৎসা পদ্ধতি

হাড়ের ক্যান্সার হলো যখন অস্বাভাবিক কোষসমূহ আপনার হাড়ে অগণিত রকমে বৃদ্ধি পায়। এটি স্বাভাবিক হাড়ের কোষ ধ্বংস করে। এটি আপনার হাড়ে হতে পারে বা আপনার শরীরের অন্যান্য অংশ থেকে সেখানে ছড়িয়ে যেতে পারে (এটি মেটাস্টেসিস বলে)। হাড়ের ক্যান্সার অত্যন্ত দুর্লভ। অধিকাংশ হাড়ের টিউমার বেনাইন হয়, অর্থাৎ এটা ক্যান্সার নয় এবং আপনার শরীরের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়ায় না। তবে তা আপনার হাড় কে দুর্বল করতে পারে এবং হাড় ভাঙা বা অন্য সমস্যা করতে পারে। 
প্রাইমারি হাড় ক্যান্সার

এটি একটি ক্যান্সারি টিউমার। বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত না কেন, এটির কারণ কী, তবে আপনার জেনেটিকের ভূমিকা থাকতে পারে। উদাহরণ হলো: 
* অস্টিওসারকোমা- সাধারণত টিনএজার বা যুবকদের হয়ে থাকে 
* ইউইংস সারকোমা- সাধারণত ৫ এবং ২০ বছরের মধ্যে ঘটে।
* কন্ড্রোসারকোমা পাওয়া যায় ৪০ এবং ৭০ বছরের মধ্যে। 
সেকেন্ডারি হাড় ক্যান্সার 
এক্ষেত্রে ক্যান্সার সাধারণত শরীরের অন্য অংশ থেকে শুরু হয়ে পরবর্তীতে হাড়কে আক্রান্ত করে থাকে, যাকে মেটাসটেটিক ক্যান্সার ও বলা হয়। সাধারণত স্তন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার, ফুসফুস ক্যান্সার থেকে সেকেন্ডারি হাড় ক্যান্সার হতে পারে।
হাড় ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায় যে কারণে
* ক্যান্সার চিকিৎসা : অন্যান্য অঙ্গের ক্যান্সারের চিকিৎসা হিসেবে রেডিয়েশন, স্টেম সেল ট্রান্সপ্ল্যান্ট, বা নির্দিষ্ট কিছু কেমোথেরাপি ওষুধ ব্যবহার করলে হাড় ক্যান্সার হতে পারে
* জেনেটিক্স বা বংশগত কারণ। 
* পেজেটস ডিজিজ অব বোন। এই বেনাইন হাড় অবস্থা আপনার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
হাড় ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ
* আক্রান্ত স্থান ফুলে ওঠা।
* আক্রান্ত স্থানে ব্যথা যা হাঁটা-চলা বা কাজকর্মের সঙ্গে বাড়ে।
* জ্বর।
* ওজন কমে যাওয়া। 
* কাশি। 
* লক্ষণবিহীন-ঘটনাক্রমে অন্য সমস্যার জন্য এক্স-রে করতে গিয়ে হাড়ের ক্যান্সার ধরা পরতে পারে।
হাড় ক্যান্সার ডায়াগনোসিস
এটি ডায়াগনোসিসের জন্য প্রয়োজন রোগীর ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা,  ইমেজিং যা হলোÑ এক্স-রে, সিটি স্ক্যান, এমআরআই স্ক্যান, পেট স্ক্যান, বোন স্ক্যান এবং কিছু ল্যাবরেটরি পরীক্ষা- আলফা ফিটো প্রোটিন, কারসিনো এম্ব্রায়নিক এন্টিজেন। তবে সুনিশ্চিতভাবে হাড়ের ক্যান্সার নির্ণয় করার জন্য বায়োপসি করা প্রয়োজন। 
হাড় ক্যান্সার চিকিৎসা
* বিনাইন টিউমারের ক্ষেত্রে- নিয়মিত পর্যবেক্ষণ। 
* ম্যালিগ্ন্যান্ট টিউমারের ক্ষেত্রে-অঙ্গ সংরক্ষণ অপারেশন। এখানে ক্যান্সারসহ অংশটি কেটে বাদ দিয়ে আর্টিফিশিয়াল মেটালিক ইমপ্লান্ট বসানো হয়।  
* অ্যাম্পুটেশন
* যদি একটি টিউমার বড় হয় বা নার্ভ এবং রক্তনালীগুলো পর্যন্ত পৌঁছে যায়, তখন পুরো অঙ্গটিই অপারেশন করে ফেলে দেওয়া হয়। 
* রেডিয়েশন থেরাপি। 
* কেমোথেরাপি। 
হাড় ক্যান্সার এবং তার চিকিতসার ফলাফল নির্ভর করে ক্যান্সারটির ধরন ও স্টেজের ওপর। সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসা নিলে হাড়ের ক্যান্সার নিরাময় করা সম্ভব। 

লেখক : সহযোগী অধ্যাপক (অর্থোপেডিক অনকোলজি অ্যান্ড মাস্কুলোস্কেলেটাল টিউমার)
জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (পঙ্গু হাসপাতাল) চেম্বার : আলোক হাসপাতাল লি. মিরপুর-৬
যোগাযোগ : ১০৬৭২

×