ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৯ হাজার ছাড়ালো

স্টাফ রিপোর্টার॥

প্রকাশিত: ১৯:২০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ১৯ হাজার ছাড়ালো

দেশে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ

দেশে ক্রমেই বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ডেঙ্গু নিয়ে আরও ৪৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৭৫ জনে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরে মশাবাহিত রোগটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৭ জনে।


রবিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো  ডেঙ্গুবিষয়ক নিয়মিত প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।


প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ৪৮৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার ২৩৩ জন রয়েছেন। এছাড়া ঢাকা বিভাগে ৭৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৯ জন, খুলনায় ৩৯ জন ও বরিশালে ৪৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ১৯ হাজার ৭৫ জনের মধ্যে ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ নারী।


১ জানুয়ারি থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মৃত ১০৭ জনের মধ্যে ৫৩ দশমিক ৩ শতাংশ নারী এবং ৪৬ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ।


প্রতি বছর বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দেশে তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে ঢাকায় এক লাখ ১০ হাজার ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে চিকিৎসা নিয়েছেন দুই লাখ ১১ হাজার ১৭১ জন।


আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন তিন লাখ ১৮ হাজার ৭৪৯ জন। গত বছর এক হাজার ৭০৫ জন মশাবাহিত এই রোগে মারা গেছেন, যা দেশের ইতিহাসে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যু।


এর আগে ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন এক লাখ এক হাজার ৩৫৪ জন। ওই সময় চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীসহ প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।


২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। ওই বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়।


এছাড়া ২০২২ সালে ডেঙ্গু নিয়ে মোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই বছর মশাবাহিত  রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ২৮১ জন।


দেশে সাধারণত জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হলেও চলতি বছর এর আগেই এর দৌরাত্ম্য শুরু হয়ে গিয়েছিলো। আগস্ট মাসে দেশে একটা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়। নতুন সরকার আবার সিটি কর্পোরেশনের মেয়রদের অপসারণ করে। ফলে কর্পোরেশনগুলোর কাজের গতিতে অনেকটা স্থবিরতা এসেছে। মশা মারতে আগের মতো তৎপরতা আর দেখা যাচ্ছে না।

ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশংকা করছেন বিশেষজ্ঞরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার জনকণ্ঠকে বলেন, এখনো প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। তাই সেপ্টেম্বরের শেষে পরিস্থিতি কি দাঁড়াবে তা নিয়ে আমরা আতংকিত। আমরা ঢাকা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, চাঁদপুর, বরিশালসহ কয়েকটি জেলায় মশার ঘনত্ব পরীক্ষা করেছি। এসব জেলায় মশার ঘনত্ব অত্যধিক। এখনি মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। কার্যকর ব্যবস্থা বলতে শুধু সিটি কর্পোরেশন একা নয় সরকারের সবগুলো সংস্থার সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে মশা নিধনে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এবং অতি অবশ্যই এতে জনসধারণকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

এবি

×