ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১

অস্বাস্থ্যকর খাবারে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে হাবিপ্রবির হাজার হাজার শিক্ষার্থী

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:০০, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৬:০১, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অস্বাস্থ্যকর খাবারে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে হাবিপ্রবির হাজার হাজার শিক্ষার্থী

অস্বাস্থ্যকর খাবার

অস্বাস্থ্যকর ও অপরিচ্ছন্ন খাবারে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে দিন পর করছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাইনিং ও ক্যান্টিনে মানসম্মত ও স্বল্প মূল্যের খাবারের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হোটেল ও রেস্টুরেন্ট নির্ভর হয়ে আছে শিক্ষার্থীরা। হোটেল গুলোর রান্নাঘরের অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশের কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহে ব্যর্থ হচ্ছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাঁশেরহাটের হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে দই মিষ্টি খেয়ে ফুড পয়জিনের স্বীকার হয়েছে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ বিষয়ে মেহেদী হাসান হৃদয় নামের শিক্ষার্থী তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, 'গত ৮ তারিখ আমার বন্ধু জন্মদিনের ট্টিট হিসেবে এক্স নিলয় হোটেল বর্তমান বাশেরহাট হাইওয়ে রেস্টুরেন্টে দই মিষ্টি খাওয়ায়। দই দেওয়ার সময় ওয়েটার ইমনকে বলে এটি খুব ভালো হবে খেয়ে দেখেন। আমরা ৭-৮ জন বন্ধু দই মিষ্টি খাই একটু পর থেকে আমাদের পেটে জ্বালাপোড়াসহ সন্ধার দিক থেকে আমাদের( আমি,ইমন,নিলয়,মুরাদ,ফয়সাল, শাফিন) সবার ৭-৮ বার বমি হয় । পরিস্থিতি এমন অবস্থা হয় যে আমাদের শারীরিক দুর্বলতা, ঘনঘন বমি এতোটাই হয়ে যায় এবং ব্লাডপ্রেশার ফল করার কারণে ভার্সিটি মেডিকেল ডাক্তার আমাদের ইনজেকশন  ওষুধ দেয় এবং দ্রুত মেডিকেল কলেজে এডমিট হতে বলে। 

এ ঘটনা ঘটার পরেরদিন আমার মার্কেটিং এর বন্ধু ভজন ধরও সেই হোটেল থেকে দই খায় এরপরের কথা না বলি ওর সাথেও ঘটে একই কাহিনী বমি করতে করতে ফুড পয়সনিং তারপর মেডিকেলে যেতে হয়।'

এছাড়াও বাঁশেরহাটের সাদিক হোটেলের খাবারে তেলাপোকা, নোংরা খাবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার খাবারে পোকা পাওয়ার অভিযোগ করেছে শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া কর্তৃপক্ষ জানায়, গতকালকে খিচুড়ি নিয়ে অভিযোগ আসার পর পরই ক্যাফেটেরিয়া কর্তৃপক্ষ খিচুড়ি সেল বন্ধ করে এবং রাধুনিকে কড়া ভাবে সতর্ক করে। এছাড়াও রান্নার সামগ্রী ভালোভাবে চেক করে কোনো সমস্যা পাওয়া যায় নি। এটা সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এবং দুর্ঘটনা বলা যেতে পারে। এর জন্য আমরা গত কালকেই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে ক্ষমা চেয়েছি। আবারো ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা আরো সচেতন হয়েছি। খাবারের মান ধরে রাখতে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এবং পরামর্শ আমাদের আরো সহযোগিতা ও সচেতন করছে। আমরা স্বাস্থ্যকর খাবার সরবরাহে বদ্ধ পরিকর।

এ বিষয়ে দিনাজপুর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মমতাজ বেগম জানান, আমরা তো সবসময় বাঁশেরহাটের হোটেল গুলোকে নজরদারিতে রাখতে পারি না। এর আগেও আমরা হোটেল গুলো ইন্সপেকশনে গেছি অনেক হোটেল কে জরিমানাও করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে আমরা আবারো যাবো। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আবারো মনিটরিং এ যাবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা বলেন, আমরা বিষয়টি খুব আন্তরিকতার সঙ্গে দেখছি। এখনো পুরোপুরি প্রক্টরিয়াল বডি তৈরি হয় নি। যার কারণে একটু অসুবিধা হচ্ছে। আমরা কয়েকদিনে মধ্যেই হোটেল গুলো মনিটরিং এ যাবো এবং নিয়মিত মনিটরিং করার প্ল্যান আছে। 

এছাড়াও হল সুপারদের সাথে বসে হলের ডাইনিং গুলো পুরো দমে চালু সহ খাবারের মান উন্নয়ন করারও পরিকল্পনা আছে। এতে শিক্ষার্থীদের হোটেল নির্ভরতা কমবে।

এসআর

×