ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

অনেক ক্ষেত্রে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি হাঁটা চলা করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে

হাড় ক্ষয় কখন ও কেন হয়

ডা. শেখ মো. শেখ সাদী

প্রকাশিত: ০০:৫৮, ১৭ অক্টোবর ২০২৩

হাড় ক্ষয় কখন ও কেন হয়

হাড় ক্ষয় রোগ

হাড় ক্ষয় রোগ কি?
অস্টিওপরোসিস বা হাড় ক্ষয় বলতে শরীরে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়াকে বুঝায়। রোগটিতে হাড়ের ঘনত্ব কমে হাড় ছিদ্রযুক্ত, দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়।
হাড় ক্ষয় কখন এবং কেন হয়?
একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষের হাড় ক্ষয় হতে থাকে। এ ধরনের পরিবর্তনে হরমোনের প্রভাব থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে মূলত ইস্ট্রোজেন এবং পুরুত্বের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ঘাটতিতে এটা দেখা যায়। এই হরমোনগুলো কমে গেলে হাড় থেকে দ্রুত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি বের হয় এবং হাড় ক্ষয় শুরু হয়। বিশেষ করে মেয়েদের মেনোপোজের (মাসিক বন্ধ) পরে এটি বেশি হয়। এই রোগে তাই নারীরাই বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। 
হাড় ক্ষয় রোগের ঝুঁকি :
অসংশোধন যোগ্য : 
বয়স : ৬৫ বছর
স্ত্রী লিঙ্গ
মেনোপেজ : ৪৫ বছর
হাইপোগোনাডিজম
অতি খর্বাকৃত
সংশোধন যোগ্য : 
ধূমপান
অপুষ্টি
কোমল পানীয় ও মদ্যপান
ভিটামিন ডি এর অভাব
মেডিকেল ঝুঁকি : 
দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা
চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত  স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন
অন্যান্য হরমোনজনিত রোগ :
হাইপার-থাইরয়েডডিজম
হাইপার-প্যারাথাইরয়ডিজম
কুসিং সিনড্রম, এডিসন্স ডিজিস
ঝখঊ,
কিডনির অকার্যকারিতা
উপসর্গ : সাধারণত মানুষ পিঠ এবং কোমরের ব্যথা নিয়ে আসেন। কারও কারও দৈহিক উচ্চতা কমে গিয়ে কুজো হয়ে যান। মেরুদ- এবং কোমরের পাশাপাশি হাতের কব্জি পায়ের কুচকির হাড়ের ক্ষয়ের প্রবণতা বেশি। এ রোগে সংগোপনে মেরুদ-ে ফাটল বা চিড় ধরে এবং ঠুনকো আঘাতেই ভেঙে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি হাঁটা চলা করাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
এমনকি প্রথমত কোনো শারীরিক লক্ষণ ও থাকে না তাই এটিকে বলে নীরব ঘাতক।
শনাক্তকরণ : কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা আছে ঝুঁকি চিহ্নিত করার জন্য এবং কিছু আছে হাড়ের ঘনত্ব পরিমাপ করার জন্য। এরমধ্যে ইগউ পরীক্ষাটি বহুল ব্যবহৃত টেস্ট। 
চিকিৎসা : চিকিৎসার চেয়ে রোগটি প্রতিরোধই উত্তম।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা ও প্রতিদিন ১৫-৩০ মিনিট সূর্যের আলোতে থাকা।
- ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার দুধ, দই জাতীয় খাবার, পুডিং, দই, সামুদ্রিক মাছ, সবুজ শাক-সবজি ও তাজা ফল-মূল গ্রহণ।
- ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা।
- ডায়াবেটিস, লিভার ও কিডনির রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা।
ওষুধ : চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।

লেখক : অর্থোপেডিক, ট্রমা, আর্থ্রোস্কপি ও স্পাইন সার্জন, জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও
পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান-নিটোর (পঙ্গু হাসপাতাল)।
কনসালটেন্ট, আলোক হেলথকেয়ার লি.
পল্লবী ব্রাঞ্চ, ঢাকা।

×