ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদন 

জরুরিভিত্তিতে আরও ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানি হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৫৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩; আপডেট: ১০:৩৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

জরুরিভিত্তিতে আরও ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানি হচ্ছে

আরও ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানি করা হবে

দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আরও ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইন আমদানি করা হবে। দরপত্র ছাড়াই এই স্যালাইন কিনতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বর্তমান ডেঙ্গুজ্বর মারাত্মক আকার ধারণ করায় ও হাসপাতালগুলোতে স্যালাইনের সংকট হওয়ার কারণে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে দ্রুত স্যালাইন আমদানির প্রস্তাব দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। 


বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে  স্যালাইন আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া এ দিন সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে ভোজ্যতেল, ডাল, সার ক্রয়সহ ১১ ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে এক হাজার ৪৯১ কোটি ৬৫ লাখ ৯৬ হাজার ৩২৩ টাকা।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০ লাখ ব্যাগ স্যালাইনের মধ্যে ১২ লাখ পিস নরমাল স্যালাইন (১০০০ মিলিলিটার) ও ৮ লাখ পিস গ্লুকোজ স্যালাইন (১০০০ মিলিলিটার) আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৯.১৯ কোটি টাকা।

দেশের ডেঙ্গু পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করায় গত ১৩ আগস্ট স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় চলতি অর্থবছর সাত লাখ ব্যাগ নরমাল স্যালাইন (১০০০ মিলিলিটার) এবং গ্লকোজ স্যালাইন (১০০০ মিলিলিটার) কেনার সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে তিন লাখ ব্যাগ আইভি ফ্লুইড সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনা হয়েছে, যা মঙ্গলবার থেকে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে সরবরাহ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অতীতের যেকোনো সময়ের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গু রোগী বেড়ে যাওয়ায় ইনজেকটেবল স্যালাইনের চাহিদা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়েছে। 


বর্তমানে সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্যালাইনের সংকট কিছুটা কাটলেও প্রাইভেট হাসপাতাল ও ফার্মেসিতে স্যালাইনের সংকট অনেক বেশি। স্যালাইন সংকটের কারণে ডেঙ্গু রোগীর পাশাপাশি সার্জারি, ডায়ালাইলিসসহ অন্যান্য রোগীরাও সমস্যায় পড়ছে। বাধ্য হয়ে রোগীর স্বজনরা তিন থেকে চারগুণ দামে স্যালাইন কিনছে।

দেশে আইভি স্যালাইনের দাম সর্বোচ্চ ৯০-১০০ টাকা হলেও তা কোথাও কোথাও ৫০০ টাকা দরেও কিনতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। এ খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্বাভাবিক সময় প্রতি মাসে স্যালাইনের চাহিদা ছিল ৪০-৫০ লাখ ব্যাগ। এখন তা বেড়ে ২.৪০-৩ কোটি ব্যাগ হয়েছে। বর্তমানে ছয়টি কোম্পানি উৎপাদনে আছে।

এর মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপ সর্বোচ্চ দিনে ৩০,০০০ ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন করছে। কোম্পানিগুলো তিন শিফটে পূর্ণ উৎপাদন সক্ষমতায় মাসে ৬৫ লাখ পর্যন্ত যোগান দিতে পারবে।


এ ছাড়া নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে এক কোটি ৪৫ লাখ লিটার ভোজ্যতেল ও ২৬ হাজার টন ডাল ক্রয়সহ ১১ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভা শেষে অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ২১তম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৩১তম সভা হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ২টি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১১টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। 


এ ছাড়া সভায়, মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় আড়িয়াল খাঁ নদীর তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিং’ প্রকল্পের ভেরিয়েশন প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রকল্পের প্যাকেজ নং-৪৮ এর পূর্ত কাজ খুলনা শিপইয়ার্ড লি. এর সঙ্গে ৩৬৭ কোটি ২৮ লাখ ৪৮ হাজার ৯৫০ টাকায় ক্রয়ের চুক্তি করা হয়। 

×