ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১

ফাগুনের আগুনরঙে সাজছে বসন্ত!

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফাগুনের আগুনরঙে সাজছে বসন্ত!

ছবি: সংগৃহীত

ফাগুনের আগমনে প্রকৃতি যেন নতুন করে প্রাণ পায়। শীতের জড়তা কাটিয়ে চারপাশ ভরে ওঠে উজ্জ্বল রঙের বাহারে। পলাশ, শিমুল, কৃষ্ণচূড়ার লাল-কমলা আভায় গাছগাছালি সেজে ওঠে এক অপরূপ সাজে। বাংলাদেশের এই বসন্ত যেন এক স্বপ্নময় রঙিন ক্যানভাস। কবি নজরুলের ভাষায়— "ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে, দোলে নটিনীর নূপুর / বাজে পল্লবে মঞ্জুরীতে"— বসন্তের এই সৌন্দর্য যেন প্রকৃতির সুরের মূর্ছনা।

বসন্ত মানেই নতুন কুঁড়ির উঁকি দেওয়া, ফুলের সুবাসে বাতাস ভারী হয়ে ওঠা। ফাল্গুন মাসের শুরুতেই চারদিকে বয়ে যায় মৃদুমন্দ বাতাস, যা শীতের অবসাদকে ভুলিয়ে দেয়। মধুমাস চৈত্রে প্রকৃতি আরও পরিপূর্ণতা পায়, আমের মুকুলের ঘ্রাণ মন ভরিয়ে দেয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন— "এদিন আজি কোন ঘরে গো খুলে দিল দ্বার?"— প্রকৃতিও যেন আপন সৌন্দর্য উজাড় করে দেয় এই ঋতুতে।

বসন্ত মানেই ভালোবাসা, উচ্ছ্বাস আর উৎসবের মাস। পহেলা ফাল্গুনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসন্ত উৎসব উদযাপিত হয়। নারীদের হলুদ শাড়ি, পুরুষদের পাঞ্জাবি, মাথায় ফুলের মুকুট—সব মিলিয়ে বসন্ত যেন এক আনন্দের জোয়ার নিয়ে আসে। এই ঋতুতেই বাঙালি প্রাণ খুঁজে পায়, প্রেম জেগে ওঠে। তাই তো জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন— "তবু বসন্ত আসে, তবু সে চঞ্চল— / বনলতা সেনের খোঁপায় ফুটে থাকে শিমুল-পলাশ।"

শুধু প্রকৃতি নয়, মানুষের মনেও বসন্তের প্রভাব পড়ে। শীতের বিষণ্নতা কেটে গিয়ে জীবন হয়ে ওঠে আনন্দময়। কবি-সাহিত্যিকরা বসন্তকে ঘিরে রচনা করেছেন অসংখ্য কবিতা, গান, গল্প। এই ঋতু প্রেমের অনুভূতি গভীরতর করে, হৃদয়ের ক্যানভাসে আঁকে রঙিন স্বপ্ন।

ফাল্গুনের আগমনে বাংলাদেশ হয়ে ওঠে আরও সুন্দর, আরও রঙিন। এই ঋতু শুধু প্রকৃতির রূপবদলের বার্তাই আনে না, বরং আমাদের মনে প্রেম, ভালোবাসা আর নতুন আশার সঞ্চার ঘটায়। তাই তো কবিরা বলেন— "আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে, এই বাংলায়।" বসন্ত আসুক বারবার, ভালোবাসার সৌরভ ছড়িয়ে যাক প্রতিটি হৃদয়ে।

আসিফ

×