ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১

গাছের নাম বেহায়া, ঔষধিগুণ অনেক

প্রকাশিত: ০১:৩৪, ১২ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০১:৩৬, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

গাছের নাম বেহায়া, ঔষধিগুণ অনেক

ছবি: সংগৃহীত

দেশের প্রতিটি অঞ্চলেরই একটি পরিচিত গাছ ঢোলকলমি। অঞ্চলভেদে ঢোলকলমি একেক এলাকায় একেক নামে পরিচিত। এ গাছকে অনেক এলাকায় বেহায়া নামেও ডাকা হয়।

নাম যেমনিই হোক তবে ঢোলকলমি ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন না এ রকম লোকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। অতিপরিচিত এ গাছটি প্রকৃতি থেকে দিন দিন কমে যাচ্ছে।

হালকা বেগুনি বা হালকা গোলাপি পাপড়িবিশিষ্ট এ ফুল দেখতে অনেকটা মাইক আকৃতির।

এর মঞ্জরিতে ৪-৮ ফুল থাকে। সবুজের মাঝখানে ফুটে থাকা ফুলগুলো যেন মন ভালো করে দেওয়ার মতো সুন্দর।

ঢোলকলমি নিয়ে ৯০ দশকের দিকে দেশজুড়ে ভয়ঙ্কর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। ওই সময় গাছ নিয়ে গুজব রটেছিল যে, গাছে থাকা এক ধরনের কালো রঙের পোকা মানুষের সংস্পর্শে এলে মানুষটির মৃত্যু হতে পারে। এ গুজবের ফলে ঢোল কলমির ওপর বড় ধরনের ধাক্কা পড়ে।

এতে ঢোলকলমির অস্তিত্ব সংকটে পড়ে। এ উদ্ভিদটি যেকোনো পরিস্থিতিতে টিকে থাকার ক্ষমতা থাকায় কোথাও কোথাও এখনো উপকারী উদ্ভিদটি চোখে পড়ে।

জানা গেছে, ঢোলকলমি একটি বহুল ব্যবহৃত গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এটি কনভলভালাসি পরিবারের উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস সুদূর দক্ষিণ আমেরিকার পেরু ও বলিভিয়ার পাহাড়ি এলাকায়। এটি যত্ন ছাড়াই নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে। এরা দ্রুত বংশবিস্তার করে। এক সময় গ্রামবাংলায় ঢোল কলমি গাছ রোপণ করে পুকুর ও জলাশয়ের বেড়া স্থাপনে ব্যবহার করা হতো। এ উদ্ভিদে ঔষধিগুণও বিদ্যমান।

এ ছাড়া উদ্ভিদটি কাগজ তৈরির কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। রান্নাবান্নায় জ্বালানির কাজেও ব্যবহার করা হয় ঢোলকলমি। এ ফুল সারাবছরই কমবেশি ফোটে। তবে বর্ষার সময় এ ফুলটি বেশি দেখতে পাওয়া যায়। কিছু এলাকায় স্থানীয়দের কাছে এটি বেহায়া গাছ নামেই বেশি পরিচিত।

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে এ গাছের ভেষজ গুণাগুণের কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। ঢোলকলমির গাছের পাতা ফুল ও কষ মানবদেহের চর্মরোগসহ নানা রোগ নিরাময়ে ব্যবহার করা হয়।

ঢোলকলমি ফুল সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি মানুষের নানা রোগে ভেষজ ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এ গাছের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপদান থাকার কারণে মানবদেহের নানা রোগ নিরাময়ে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

এম.কে.

×