ছবি: সংগৃহীত
সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্বাংশে একটি প্রবালদ্বীপ। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে ‘পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা’ ঘোষণা করে সরকার। সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ২০২৩ সালে ১৪ টি বিধি-নিষেধ দিয়ে কয়েকটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘সেন্টমার্টিনের ৪১ ভাগ প্রবাল ক্ষয় হয়ে গেছে, এটা হচ্ছে জাতীয় পরিসংখ্যান। আন্তর্জাতিক সব গ্রহণযোগ্য জার্নালে বলা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে ২০৪৫ সালের মধ্যে সব কোরাল ক্ষয় হয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপটা ডুবে যাবে। তখন পর্যটনটা থাকবে কোথায়? তিনি বলেন, ‘সেন্টমার্টিনটা বাঁচাব, একই সঙ্গে পর্যটনটাও বাঁচাতে হবে। পর্যটনটা আমরা কিন্তু নিষেধ করিনি।’
গত ২৮ অক্টোবর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ক্ষেত্রে কিছু বিধি- নিষেধ আরোপ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে সেন্টমার্টিনে নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে হবে, নভেম্বর মাসে দ্বীপটিতে পর্যটকরা রাতে থাকতে পারবেন না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতে থাকতে পারবেন, পর্যটকের সংখ্যা প্রতিদিন গড়ে ২ হাজারের বেশি হওয়া যাবে না, দ্বীপে রাতে আলো জ্বালানো যাবে না, শব্দদূষণ সৃষ্টি করা যাবে না, বার বি কিউ পার্টি করা যাবে না।
সেন্টমার্টিন সামুদ্রিক কাছিমের প্রজনন ক্ষেত্র। এখানে ৬৮ প্রজাতির প্রবাল, ১৫১ প্রজাতির শৈবাল, ১৯১ প্রজাতির মোলাস্ট বা কড়ি জাতীয় প্রাণী, ৪০ প্রজাতির কাঁকড়া, ২৩৪ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ, পাঁচ প্রজাতির ডলফিন, চার প্রজাতির উভচর প্রাণী, ২৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ১২০ প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৭৫ প্রজাতির উদ্ভিদ, দুই প্রজাতির বাদুড়সহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বসবাস ছিল এককালে। এসব প্রজাতির অনেকগুলো এখন বিলুপ্তির পথে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে এসব জীববৈচিত্র্য।
তাবিব