ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ধ্রুপদী সুরে, নৃত্যের ছন্দে শ্রোতা ও দর্শকের মুগ্ধতা

সংস্কৃতি প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:০৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ধ্রুপদী সুরে, নৃত্যের ছন্দে শ্রোতা ও দর্শকের মুগ্ধতা

শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসবের একটি পরিবেশনা

শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সুরসুধা সবাইকে টানে না। তবে সংগীতের গভীরতাসন্ধানী শ্রোতাদের জন্য এই ধারার গান হয়ে ওঠে বিশেষ কিছু। সুর, তাল ও লয়ের খেলায় আলোড়িত হয় তাদের অন্তরাত্মা। সংগীতানুরাগীদের জন্য তেমন বিশেষ এক দিন ছিল  বুধবার। সেসব সুররসিকরা বসন্ত বিকেলে ছুটে গিয়েছিলেন শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে।

উচ্চাঙ্গ সংগীতের সুরের আবেশে কেটেছে তাদের সুন্দরতম সময়। তবে শুধু সুরের সমর্পিত ভুবনে থেমে থাকেনি আয়োজনটি। তাই শ্রবণের সমান্তরালে তারা দেখেছেন দৃষ্টিনন্দন নাচ। সেই সুবাদে মুদ্রার সঙ্গে অভিব্যক্তির সম্মিলনে উপস্থাপিত হয়েছে অনিন্দ্যসুন্দর নৃত্যশৈলী। হাত ও পায়ের কারুকাজের সঙ্গে  চোখ কিংবা মুখের অভিব্যক্তিময় নাচের উপস্থাপন রাঙিয়েছে দর্শক  হৃদয়। রাগাশ্রিত সুরের তাল ও লয়ের খেলায় ছন্দোময় সেসব অঙ্গ সঞ্চালন প্রশান্তির পরশ ছড়িয়েছে নৃত্যানুরাগীদের নয়নে।

আর এভাবেই ধ্রুপদী আঙ্গিকের গান ও নাচের পরিবেশনা মুগ্ধতা ছড়িয়েছে শ্রোতা-দর্শকের মনে। সব মিলিয়ে মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় সুন্দরতম সময় কেটেছে এই শহরের শিল্পরসিকদের। এভাবেই সুন্দরের ছবি এঁকে  শুরু হলো শিল্পকলা একাডেমির একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগ  আয়োজিত চার দিনব্যাপী শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্য উৎসব।

শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যচর্চাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে  অনুষ্ঠিত উৎসবের দ্বিতীয় দিন আজ বৃহস্পতিবার। এদিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল পাঁচটায়। এ ছাড়া আগামী ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি একই ভেন্যুতে একই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে এ উৎসব। 
উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহ্রহমান।  সভাপতিত্ব  করেন একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় ‘শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা’ শিরোনামের সমবেত নৃত্য দিয়ে শুরু হয় পরিবেশনা পর্ব।  নৃত্যটির পরিচালনা  করেন স্নাতা শাহরীন।  এর পর  ঠুমরি রাগাশ্রয়ী কণ্ঠসংগীত পরিবেশন  করেন কাব্যশ্রী রায় চৌধুরী।  সমবেত নৃত্য ‘পল্লবী’ পরিবেশন  করে নৃত্যছন্দ।

কত্থক ‘ঋতু বসন্ত ও তারানা’ শীর্ষক কত্থক নৃত্য পরিবেশন  করে রেওয়াজ পারফমার্স স্কুল। ভরতনাট্যম আশ্রিত ‘দেবী স্তুতি’ পরিবেশন করেন বৃষ্টি বেপারী। সংগীতে ধ্রুপদ পরিবেশন  করেন অভিজিৎ কুন্ডু। এ ছাড়া একভাবে কত্থক নৃত্য পরিবেশন  করেন মনিরা পারভীন, জুবায়ের হোসেন নাইম ও স্নাতা শাহরীন। জাভেলী নৃত্য পরিবেশন  করেন প্রিয়াংকা সরকার।

একক সংগীত পরিবেশন  করেন আলী এফ এম রেজোয়ান। মনিপুরি  নাচের আশ্রয়ে ‘শিব বন্দনা’ পরিবেশন  করেন ওর্য়াদা রিহাব। কণ্ঠসংগীতে ‘বেহাগ’ রাগ পরিবেশন  করেন অনিল কুমার সাহা। মনিপুরি নৃত্যনির্ভর ‘শিব স্তুতি পরিবেশন  করেন অর্পনা নিশি। সুরের আশ্রয়ে  বসন্ত  রাগে পরিবেশনা উপস্থাপন করেন শেখর ম-ল। ভরতনাট্যম আশ্রিত ‘পুষ্পাঞ্জলি’ শীর্ষক বৃন্দ নৃত্য  পরিবেশন করে কল্পতরু।
আজ বৃহস্পতিবার মনিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবে সিলেটের একাডেমি ফর মনিপুরি কালচারাল এন্ড আর্টস। ধ্রুপদ পরিবেশন করবেন সৌমিতা বোস।  ভরতনাট্যম পরিবেশন করবেন পূজা বৈষ্ণব। কত্থক নৃত্য পরিবেশন করবেন মন্দিরা চৌধুরী।  সুরের খেলায় রাগ-পূরবী পরিবেশন করবেন স্বরাজ সাহা । মনিপুরি নৃত্য পরিবেশন করবেন সামিনা হোসেন। কত্থক নাচ করবেন সুমাইয়া ইসলাম।

×