সংগীতশিল্পী সঞ্জীব চৌধুরী স্মরণে মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএসসির সঞ্জীব চত্বরে ‘সঞ্জীব সন্ধ্যা’র আয়োজন করে ঢাবি সাংস্কৃতিক ইউনিয়ন
‘যারা জুলাই হত্যাকাণ্ড করেছিল যেকোনো মূল্যে তাদের বিচার করা হবে। নজরুলকে উপভোগ্য ও আনন্দময় করে তুলতে হবে’- বাংলা একাডেমিতে মঙ্গলবার বিকেলে নজরুল ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে আমাদের নজরুল’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন আইন ও বিচার উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক লতিফুল ইসলাম শিবলীর সভাপতিত্বে এতে আলোচক ছিলেন দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, কবি আব্দুল হাই শিকদার ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিটির সদস্য ডা. জাহেদ উর রহমান।
আসিফ নজরুল আরও বলেন, নজরুল আমাদের জাতীয় চেতনার অংশ। তার বিপ্লবী চেতনা আমাদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করেছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে নজরুলের গান ও কবিতা আমাদের প্রেরণা যুগিয়েছিল ও উদ্দীপ্ত করেছিল। নজরুলের ‘আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে, তোমার ছেলে উঠলে পরেই রাত পোহাবে তবে’ কবিতার মধ্য দিয়ে তিনি অন্ধকার থেকে জুলুম ও নির্যাতন থেকে জাতিকে মুক্ত করার জন্য জীবনবাজি রেখে রাজপথে নেমেছিলেন আর বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। বিদ্রোহী চেতনার মধ্য দিয়ে অনন্য রক্ত জাগানিয়া লেখার মধ্য দিয়ে কবি নজরুল ইসলাম গণঅভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের উজ্জীবিত করেছিলেন। যার কারণে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে নজরুল অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক ছিলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, আমাদের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক-সামাজিক চর্চার মধ্যে জাতীয় কবিকে চর্চার কোথাও কোনো ছাপ পাইনি। জাতীয় কবিকে যেভাবে চর্চা করতে হয়, যেভাবে উদযাপন করতে হয় সেভাবে দেখিনি। সারাজীবন দেখেছি রবীন্দ্র চর্চা। যতরকম চর্চা আছে, গান হোক, নাচ হোক আবৃত্তি হোক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বেতার টিভি সব জায়গাতেই সবচে বেশি প্রাধান্য দেখেছি রবীন্দ্র চর্চা। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনে রাজনৈতিক সামাজিক চরিত্রে নজরুল অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তিনি বিদ্রোহের কবি।
সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান বলেন, জাতিকে কলংকমুক্ত করার জন্য তরুণরা নিজেদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন। তরুণদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে।
আব্দুল হাই শিকদার বলেন, সাংস্কৃতিক বিপ্লবের জন্য নজরুলচর্চা অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। যে তরুণের কানে সব সময় বাজে ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ লাথি মার ভাঙরে তালা, সেই তরুণ বিপ্লবের চেতনায় জেগে উঠবে সেটাই স্বাভাবিক। আশা করছি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নজরুলের সঠিক মূল্যায়ন করবে। কারণ বরাবরের মতো এবারের ২৪ এর বিপ্লব আর অভ্যুত্থানে নজরুল আমাদের কাছে অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক ছিলেন। সারাদেশের দেয়াল লিখন, গান কবিতা ও গ্রাফিতিতে বারবারই নজরুলের বিদ্রোহী ও বিপ্লবী চেতনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
সবশেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন ড. নাশিদ কামাল, ব্যান্ডসংগীত পরিবেশন করে র্যাবেল ব্যান্ড ও আবৃত্তি করেন টিটো মুন্সী।