ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৮ ভাদ্র ১৪৩১

এত কিছু ভেবে গানটি প্রকাশ করিনি

প্রকাশিত: ২১:২৯, ২১ আগস্ট ২০২৪

এত কিছু ভেবে গানটি প্রকাশ করিনি

পারশা মাহজাবীন

সংগীতশিল্পী পারশা মাহজাবীন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের সঙ্গে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনিও। তবে তার অস্ত্র ছিল গান। মেধা শহীদদের নিয়ে ‘চলো ভুলে যাই’ শিরোনামের গান করে কাঁদিয়েছিলেন গোটা জাতিকে। আনন্দকণ্ঠের সঙ্গে সমসাময়িক নানা বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি...

নতুন বাংলাদেশ নিয়ে প্রত্যাশা কী? 
প্রত্যাশা অনেক। বলে শেষ করা যাবে না। রাতারাতি কিছু পাব না এটাও জানি। তবে দেশের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে। ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এখান থেকেই উঠে দাঁড়িয়ে ভালো কিছু করতে হবে। না হলে আমরা অনেক পিছিয়ে যাব। এমনিতেই পিছিয়ে গেছি। এটা শিল্পাঙ্গনসহ সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
শিক্ষার্থীদের পাশে থাকায় সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসিত হচ্ছেন। কেমন লাগছে? 
ভালো লাগছে। অনেক গুণী মানুষ আমার গান শুনেছেন, শেয়ার দিয়েছেন, মন্তব্য করেছেন। এতটা আশা করে গানটি প্রকাশ করিনি। অধিকাংশ মানুষ মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, গানটি শুনে তারা কেঁদেছেন। মানুষকে কাঁদাতে পারব চিন্তাই করিনি । এত তাড়াতাড়ি আমার জীবনে এ রকম কিছু ঘটবে ভাবিনি। এটা আমার জন্য বড় কিছু। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আপনার গান শিক্ষার্থীদের ভীষণভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। ওই জায়গা থেকে এ আন্দোলনে আপনার বেশ অবদান আছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
আমার জায়গা থেকে যতটুকু পেরেছি করেছি। ইচ্ছা ছিল আরও বেশি করার। কিন্তু পারিনি। পরে হয়তো পারব। এটি নিয়ে খুব বেশি বড়াই করতে চাই না। তবে আমি খুশি। কারণ, আমার গান সব শ্রেণির মানুষের মনের কথা হয়ে উঠেছিল। যে যার মতো করে গানটির সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছেন। 
শিক্ষার্থীদের হয়ে সুর তোলায় কোনো ঝামেলা পড়তে হয়েছিল?  
গানটি খুব ভাইরাল হয়েছিল বলেই হয়তো হুমকি-ধমকি আসেনি। এছাড়া প্রথমত আমি মেয়ে। ফলে, একটি বিশেষাধিকার আছে। দ্বিতীয়ত, গোটা দেশের মানুষ আমার সঙ্গে ছিলেন। এ কারণে আমার সঙ্গে কিছু করার আগে হয়তো চিন্তা করেছে। গানটির কোনো প্রচারণা করিনি। অন্যরা যেভাবে সুন্দরভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করেছেন, সেভাবেও করিনি। সাদামাটাভাবে প্রকাশ করেছিলাম। যা করার দেশের মানুষ করেছেন। আমি দ্বিতীয়বার শেয়ারও দেইনি। আমার কিছু করতেও পারত না। সেই সাহস আমার পরিবার দিয়েছিল। তারা সবসময় আমার ভালো কাজে যেমন সমর্থন করেন, এবারও করেছিলেন। 
তারপরও বাবা-মায়ের ভেতরে দুশ্চিন্তা কাজ করেনি? 
বাবা-মা চিন্তা করবেনই। অনেক  চিন্তা করছিলেন তারা। তবে তাদের এতটুকু বিশ্বাস ছিল যে আমি যেটা করছি, ভালো করছি। আমার পরিবার ভীষণ সাহসী। ছোটবেলা থেকে এ পর্যন্ত বাবাকে কখনও অন্যায়ের সামনে মাথা নত করতে দেখিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকবার মানুষকে বাঁচাতে দেখেছি তাকে। আমার পরিবারে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা আছেন। দাদি নিজে তার ছেলেমেয়েদের যুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। এ রকম সাহসী পরিবার দেখেই হয়তো খুব একটা সমস্যা হয়নি।
এবার কাজের প্রসঙ্গে ফেরা যাক...
এর মধ্যে ‘যদি তুমি আমার হতে’ শিরোনামের একটি মৌলিক গান প্রকাশ করেছি। নিজের কথা ও সুরে। সামনে নাটকেও দেখা যাবে আমাকে। সিনেমা থেকেও প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু অভিনয়ের ক্ষেত্রে পথটা বুঝেশুনে চলতে চাই। অভিনয়ের অনেকটাই শেখার বাকি। তিন বছর বয়স থেকে গান করি। কিন্তু অভিনয়ের ক্ষেত্রে একেবারেই নতুন। ফেব্রুয়ারি মাসে আমার অভিষেক। আরেকটু শিখে নামতে চাই। গান, মডেলিং, অভিনয় সবক্ষেত্রেই কাজ করতে চাই।

×