
ছবি: সংগৃহীত।
নীতার পরিচয় কেবল রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের কর্ণধার মুকেশ আম্বানির স্ত্রী হিসেবে নয়, বরং একজন সফল উদ্যোক্তা, শিক্ষানুরাগী, সমাজসেবী ও সংস্কৃতির অভিভাবক হিসেবে। তাঁর জীবনযাত্রা, চিন্তাধারা ও কর্মযজ্ঞে এক অনন্য সংমিশ্রণ দেখা যায় জ্ঞান, সৌন্দর্য ও সাহসিকতার। ভারতের ক্রীড়া ও শিক্ষা খাতে তাঁর অবদান যেমন অনস্বীকার্য, তেমনই পারিবারিক দায়িত্ব ও সামাজিক কর্তব্য পালনে তাঁর দৃঢ়তা একটি প্রজন্মের নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
চলুন, দেখে নেওয়া যাক—নীতা আম্বানির জীবন থেকে আমরা কী কী শিক্ষা নিতে পারি।
১. স্বপ্ন দেখার সাহস এবং তা বাস্তবায়নের সংকল্প:
একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে থেকে ভারতের অন্যতম প্রভাবশালী নারী হওয়ার যাত্রাটা সহজ ছিল না। নীতা তাঁর নৃত্যশিল্পী হিসেবে জীবন শুরু করেন এবং ধীরে ধীরে নিজের পরিচয় গড়ে তোলেন রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে। তিনি দেখিয়েছেন, সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দেওয়া যায়।
২. শিক্ষা ও সমাজসেবায় বিনিয়োগের গুরুত্ব:
তিনি বিশ্বাস করেন—শিক্ষা হলো পরিবর্তনের চাবিকাঠি। এ বিশ্বাস থেকেই জন্ম নেয় ধীরুভাই আম্বানি ইন্টারন্যাশনাল স্কুল। শহরের মধ্যবিত্ত এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ দিতে তিনি কাজ করে চলেছেন নিরলসভাবে।
৩. নারীর ক্ষমতায়নে দৃঢ় অবস্থান:
নীতা আম্বানি একজন নিঃসন্দেহে শক্তিশালী নারীর প্রতিচ্ছবি, যিনি পরিবার সামলে ব্যবসা এবং সমাজসেবার মতো বৃহৎ কাজগুলোর ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। তিনি দেখিয়েছেন—নারীরা শুধু ঘরের নয়, দেশের নেতৃত্বও দিতে পারে।
৪. সংস্কৃতির সংরক্ষণ ও উদ্ভাবনের মেলবন্ধন:
ভারতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে তাঁর উদ্যোগ, বিশেষ করে ক্লাসিকাল ডান্স এবং শিল্পচর্চায় তাঁর আগ্রহ, তাঁকে একটি বৃহৎ সাংস্কৃতিক দূত হিসেবে গড়ে তুলেছে। একই সঙ্গে তিনি আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার পৃষ্ঠপোষকতাও করেছেন।
৫. ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীর নেতৃত্ব:
মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের অন্যতম কর্ণধার হিসেবে তিনি শুধু একজন মালিকই নন, বরং একটি দলের আত্মা। খেলাধুলাকে শুধু বিনোদন নয়, একটি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করার শক্তি হিসেবেই দেখেন তিনি।
নীতা আম্বানির জীবন কেবল বিলাসিতার নয়, বরং এক সুষম ভারসাম্য যেখানে আছে পরিবার, সমাজ, সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং নেতৃত্বের এক অসাধারণ মিলন। তাঁর থেকে আমরা শিখতে পারি—একজন নারী যখন নিজের পরিচয় নিজের হাতে গড়ে তোলে, তখন সে কেবল একজন ব্যক্তি নয়, একটি প্রজন্মের জন্য পথপ্রদর্শক হয়ে ওঠে।
নুসরাত