ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

সংস্কৃতিতে বড় একটা সংস্কার আনা সম্ভব

প্রকাশিত: ১৯:৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

সংস্কৃতিতে বড় একটা সংস্কার আনা সম্ভব

এবারের নির্বাচন আপনার চোখে কেমন ছিল?
একটা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন হয়েছে, যেটা আগেও হয়ে এসেছে। এজন্য আমি খুশি। এটা আসলে অভিনেতাদের নেতা নির্বাচন তো, তাদের চোখে নেতা হতে পারেন এমন ২১ জনকে নির্বাচন করেছেন তারা। সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো, এটা কোন প্যানেলভিত্তিক নির্বাচন নয়। প্রত্যেকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করেছেন। আর আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি যে, অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচনে জিতবে ২১, হারবে না কেউ।
 প্রথমবার অভিনয়শিল্পী সংঘের সভাপতি হয়ে কি অনুভব হচ্ছে?
আমি এ ব্যাপারে খুব নির্লিপ্ত ছিলাম। কারণ আমি আগে থেকেই এটা বিশ্বাস করেছি যে, আমার প্রতিপক্ষ আব্দুল্লাহ রানা জিতলেও আমার জয়, আবার আমি জিতলেও তার জয়। আমার কাছে বরং এই জয় যতটা আনন্দের, তার চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের। কারণ সামনে আমাকে ঠিকমতো কাজ করে দেখাতে হবে।
অভিনয়শিল্পী সংঘ সাধারণ শিল্পীদের কতটুকু কাজে আসে বলে মনে করেন আপনি?
আমার জানা মতে, সংগঠনটি সব সময় শিল্পীদের কল্যাণেই কাজ করে। অতীতে যে কোনো শিল্পীর দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের আগের যে কেবিনেট ছিল, তারাও কিন্তু দারুণ অ্যাক্টিভ ছিল। শিল্পীদের স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক সহায়তা এমনকি সংগঠনের জন্য একটা প্লটও তারা নিশ্চিত করেছিল। কিন্তু ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর সেটা দখল হয়ে গেছে। আমাদের বর্তমান কেবিনেটের চেষ্টা থাকবে, প্লটটি পুনরুদ্ধার করা। কারণ এটা ছিল সরকারি। আমরা সঠিক নিয়মেই প্লটটি পেয়েছিলাম। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করব শীঘ্রই।
আপনার মেয়াদে কোন কাজটি বাস্তবায়নে সবচেয়ে প্রাধান্য দিতে চান?
অভিনয় যে একটা পেশা সেটাই এখনো রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত নয়। ফলে অভিনেতা বা নেতা হিসেবে আমার সর্বপ্রথম চাওয়াই হলো অভিনয়কে পেশা হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া। এই কাজটি আমার আগের নেতারাও করতে চেয়েছেন। আমি চাইব সেটি যেন বাস্তবায়ন হয়। এছাড়া আমাদের নতুন কমিটির কাজ হলো আগের কমিটি যে কাজগুলো শুরু করেছিল সেই কাজগুলোর পূর্ণতা আনা।
জুলাই বিপ্লবকে কেন্দ্র করে সংগঠনটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। সেই বিভক্তি এখন কতটা কেটেছে?
আমার মতে শিল্পীদের একটাই পরিচয় হওয়া উচিত, ‘অভিনয়শিল্পী’। এর বাইরে কে কোন দলের সমর্থক সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে থাকা ভালো। আমাদের বেলায় সেটা হয়নি। অভিনয়শিল্পী না হয়ে আমরা রাজনৈতিক দলের পরিচয়ে পরিচিত হয়েছিলাম। এর ফল তো দেখতেই পাচ্ছেন। কেউ এখন আর নিরাপদ নয়। সম্প্রতি টিপ পরার ঘটনায় মামলা হলো একাধিক শিল্পীর নামে। এটা কতটুকু ঠিক হলো জানি না। মাঝখান থেকে মনে হচ্ছে, শিল্পীরা এখনো অনিরাপদ। এই বলয় ভাঙতে হবে।
সম্প্রতি একাধিক অভিনয়শিল্পী ‘মব জাস্টিস’-এর শিকার হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে সংঘের ভূমিকা কেমন হবে?
যখনই এ ধরনের পরিস্থিতি হয়েছে অভিনয়শিল্পী সংঘ জোরালো প্রতিবাদ করেছে। তবে সবার প্রতিবাদের ভাষা তো আর এক হবে না। এই সংঘ কখনোই কোন মবের বিরুদ্ধে প্রতবাদস্বরূপ হাতাহাতি পর্যায়ে যেতে পারে না। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করব নেগোশিয়েট করতে। কখনোই আমরা আক্রমণাত্মক হবো না। তবে আমরা সব সময় শিল্পীদের স্বার্থ রক্ষায় পাশে থাকব, ন্যায়সঙ্গতভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করব।
সংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটের ১ শতাংশ চেয়েছেন। এই অর্থ পেলে তা কোন কোন খাতে খরচ করবেন আপনারা?
জাতীয় বাজেটের ১ শতাংশ মানে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার মতো। এটা নেহাত কম নয়! আগে তো সরকার অনেক বিষয়ে বাজেট দিয়েছিল, আমরা প্রপার খরচ করতে না পারার কারণে আবার সেটা ফেরতও গেছে। এবার ১ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ পেলে আমরা টাকাটা কোথায় কোথায় খরচ করব তারও একটা রোডম্যাপ তৈরি করেছি। যদি সরকার এ বাজেট আমাদের দেয় তাহলে সংস্কৃতিতে বড় একটা সংস্কার আনতে পারব।
আপনার এখন অভিনয়ে ব্যস্ততা কেমন?
মনমতো না হলে আর অভিনয় করতে চাই না। আমার যেমন অভিনয়ের প্রয়োজন আছে, তেমনি দেখতে হবে নির্মাতারও আমাকে প্রয়োজন কিনা। আবার নির্মাতার প্রয়োজন হলেই হবে না, আমার সঙ্গে চরিত্র ও গল্প মানায় কি না সেটাও একটা ব্যাপার। এতসব হওয়ার পরেই তো স্ক্রিনে দেখা যাবে। এই যে মাঝেমধ্যে দুই-একটা চলচ্চিত্রে অভিনয় করছি, এতেই সই।

প্যানেল

×