ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

এই নীল মনিহার—লাকী আখান্দের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

শরিফুল রোমান, মুকসুদপুর, গোপালগঞ্জ

প্রকাশিত: ২১:৫০, ২১ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২১:৫১, ২১ এপ্রিল ২০২৫

এই নীল মনিহার—লাকী আখান্দের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

ফাইল ছবি

“এই নীল মনিহার” গানের সুরস্রষ্টা, গায়ক ও সংগীত পরিচালক লাকী আখান্দের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। বাংলা সংগীতজগতে এক অনন্য নাম লাকী আখান্দ, যিনি তার সৃষ্টি দিয়ে কোটি শ্রোতার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।

১৯৫৬ সালে ঢাকার পাতলাখান লেনে জন্ম নেওয়া এই শিল্পীর সংগীতে হাতেখড়ি হয় বাবার কাছেই। মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি এইচএমভি পাকিস্তানের সুরকার হিসেবে এবং ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ভারতের সংগীত পরিচালক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত শিশু শিল্পী হিসেবে অংশ নিয়েছেন রেডিও ও টেলিভিশনের সংগীতানুষ্ঠানে।

১৯৮৪ সালে ‘সরগম’ ব্যানারে প্রকাশিত হয় তার প্রথম একক অ্যালবাম লাকী আখান্দ, যেখানে স্থান পায়—‘আগে যদি জানতাম’, ‘আমায় ডেকোনা’, ‘মামুনিয়া’, ‘এই নীল মনিহার’, ও ‘হৃদয় আমার’—এর মতো আজও জনপ্রিয় গানগুলো।

তিনি ছিলেন ব্যান্ডদল হ্যাপী টাচ-এর অন্যতম সদস্য। তার ছোট ভাই হ্যাপী আখান্দের সঙ্গে গড়ে ওঠে সুর আর কণ্ঠের এক অনন্য যুগলবন্দি। ১৯৭৫ সালে হ্যাপীর একটি অ্যালবামে লাকী গান লেখেন, সুর করেন ও গেয়েও ছিলেন। ‘নীল নীল শাড়ি পরে’, ‘হঠাৎ করে বাংলাদেশ’ সহ একাধিক গানে দুই ভাইয়ের কণ্ঠ পাওয়া যায়।

১৯৮০ সালে সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ঘুড্ডি চলচ্চিত্রের সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে তিনি চলচ্চিত্র সংগীতেও রেখেছেন স্মরণীয় অবদান। তার প্রকাশিত অ্যালবামগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—পরিচয় কবে হবে (১৯৯৮), বিতৃষ্ণা জীবনে আমার (১৯৯৮), আনন্দ চোখ (১৯৯৯), আমায় ডেকোনা (১৯৯৯), ও দেখা হবে বন্ধু (১৯৯৯)।

ভাই হ্যাপী আখান্দের অকাল প্রয়াণে তিনি এক সময় সংগীতচর্চা থেকে সরে যান। পরবর্তীতে বাংলাদেশ বেতারের সংগীত পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সংগীতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৬৯ সালে পাকিস্তানি আর্ট কাউন্সিল থেকে ‘বাংলা আধুনিক গান’ বিভাগে পদক লাভ করেন।

দীর্ঘদিন ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগে ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আজ, শিল্পীর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সেই সুরকারকে, যিনি "এই নীল মনিহার"-এর মতো চিরসবুজ গান দিয়ে বাংলা সংগীতকে করেছেন সমৃদ্ধ।

এসএফ 

×