ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১

ফিটনেস ধরে রাখার রহস্য জানালেন কুসুম শিকদার

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ২৪ মার্চ ২০২৫

ফিটনেস ধরে রাখার রহস্য জানালেন কুসুম শিকদার

বাংলাদেশের প্রখ্যাত অভিনেত্রী কুসুম শিকদার, যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ক্যারিশমাটিক উপস্থিতি এবং ব্যক্তিগত জীবনের নানা দিক নিয়ে প্রায়শই আলোচনায় আসেন, সম্প্রতি এক টেলিভিশন প্রোগ্রামে তার জীবনযাত্রা, ফিটনেস ও ক্যারিয়ার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। 

কুসুম শিকদার, যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়ই ঝড় তোলেন, সম্প্রতি একটি প্রোগ্রামে তার ফিটনেস এবং জীবনধারা নিয়ে আলোকপাত করেছেন। তার মতে,“যে সমস্ত কাজ বা যে সমস্ত মানুষ আমাকে স্ট্রেস দেয় বা কষ্ট দেয়, আমি তাদের সাথে খুব একটা উঠাবসা করি না। আমি চেষ্টা করি, মনটা সবসময় সতেজ এবং ফ্রেশ রাখার। এই কাজের জন্যই মানুষ আমাকে ভালোবাসে, আর কেউ কেউ একটু পাগলামি করে বেশি, তবে আমি সেসব এড়িয়ে চলি।”

এছাড়া কুসুম শিকদার জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তার জনপ্রিয়তা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তিনি একে উপভোগ করছেন। তিনি বলেন,“আসলে আমার ভালো লাগে, কারণ আমি পজিটিভ মনের মানুষ। আমি নেগেটিভ কিছু ভাবি না। আমি যখন ক্যারিয়ার থেকে একটানা আট বছর বিরতি নিয়েছিলাম, তখন এসব ট্রেন্ড ছিল না। কিন্তু গত দু-তিন বছর ধরে সোশ্যাল মিডিয়ার এই পরিবর্তন এসেছে। আমি এটার সাথে মানিয়ে নিতে পেরেছি এবং এনজয় করছি।”


একটি মজার ঘটনা শেয়ার করে কুসুম শিকদার জানালেন তার নামের রহস্য।“আমার মা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের খুব বড় ফ্যান। যখন তিনি প্রেগনেন্ট ছিলেন, তখন তিনি ‘ঘাটের কথা’ নামক গল্পটি পড়ছিলেন, যেখানে প্রধান চরিত্রের নাম ছিল কুসুম। তখনই মা ঠিক করেন, যদি মেয়ে হয়, তার নাম রাখবেন কুসুম। মজার ব্যাপার হলো, আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে আমি ‘ঘাটের কথা’ নাটকে কুসুম চরিত্রটি প্লে করেছিলাম। সুতরাং, আমার নামের পেছনে এমন একটি সুন্দর ও স্পেশাল গল্প রয়েছে, যা আমাকে আরো অনেক ভালো লাগায়।”

কুসুম শিকদারের ভক্তরা তাকে শুধু পছন্দই করেন না, তারা তার প্রতি তাদের ভালোবাসাও প্রকাশ করেন। সোশ্যাল মিডিয়াতে, অনেকেই কুসুমের সাথে সেলফি তুলে তা পোস্ট করেন, আবার কিছু ভক্ত তাকে প্রোফাইল পিকচারে ব্যবহার করেন। তবে, কুসুম কখনোই এই ভালোবাসাকে বিরক্তি হিসেবে দেখেন না।

তিনি বলেন,“আমি এটাকে বিরক্ত বলবো না। মানুষের ভালোবাসা পাওয়া, এটা আসলে শিল্পীদের জন্য অনেক বড় অর্জন। আমরা কাজ করি মানুষের জন্য, আর এই কাজের মাধ্যমে তারা আমাদের ভালোবাসে। হ্যাঁ, কেউ কেউ একটু বেশি পাগলামি করে, তখন আমি তাদের ইগনোর করি। এখন তো উপায়ও আছে, যেমন ব্লক করা। তবে সত্যি বলতে, মানুষের ভালোবাসা পেয়ে খুব ভালো লাগে, কারণ এটাই আমাদের কাজের ফল।”

উপস্থাপক কুসুমের বয়স নিয়ে একটি প্রশ্ন করেন। কুসুমের আউটলুক দেখে অনেকেই মনে করেন তিনি অনেক কম বয়সী, অথচ তিনি বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের একজন। কুসুম এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন খুব স্বাভাবিকভাবে,“এটা সবাই জানে, আগামী ১২ এপ্রিল, ইনশাআল্লাহ, যদি বেঁচে থাকি, আমার বয়স হবে ৪৪।”

তবে ৪৪ বছর বয়সেও কিভাবে তিনি নিজের শরীর ও মনকে তরুণ রাখতে পারেন, তার রহস্য কী? কুসুম বলেন,“অবশ্যই আমি ভীষণ পজিটিভ। আমি হাসি-খুশি থাকি, মনটাকে সতেজ রাখি এবং আমি একটা জিনিস মেনটেন করি-যে সমস্ত কাজ বা মানুষ আমাকে স্ট্রেস দেয়, আমি তাদের সাথে খুব একটা যোগাযোগ করি না। আমি শুধু তাদের সাথে থাকি যারা আমাকে পজিটিভ এনার্জি দেয়। ভালো কাজের ভালো মানুষের সাথে সময় কাটাতে চেষ্টা করি, আর সেজন্য মনটা সতেজ থাকে।”

কুসুম শিকদারের ব্যক্তিগত জীবনও একটি আলোচিত বিষয়। অনেকেই জানতে চান, তিনি বিবাহিত কি না এবং কেন তার স্বামী কখনো তার সাথে দেখা করেন না। কুসুম এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন এমনভাবে,“আমি আমার ব্যক্তিগত জীবন খুবই গোপনে রাখি। আমি যখনই কোনো কিছু ব্যক্তিগতভাবে করি, সেটা খুব লো প্রোফাইলে রাখি। আমি বারবার বলেছি, আমি একজন স্বাধীন চেতা মানুষ। আমার সঙ্গে যেই থাক, সেটা আমার বয়ফ্রেন্ড, হাজবেন্ড অথবা অন্য কেউ, আমি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। আমি আমার স্বাধীনতা খুব ভালোবাসি।”

 

কুসুম শিকদারের এই অনবদ্য জীবনশৈলী, তার পজিটিভ মনোভাব, ফিটনেস রুটিন, এবং তার অনন্য ব্যক্তিত্ব নিশ্চয়ই তার ভক্তদের জন্য এক অনুপ্রেরণা। তাঁর জীবনযাত্রার প্রতিটি পদক্ষেপ, সবসময় একটি সুন্দর এবং শক্তিশালী বার্তা বহন করে,নিজেকে ভালো রাখো, পজিটিভ থেকো, এবং কখনোই জীবনে তোমার স্বাধীনতা হারিও না। কুসুম শিকদারের মতো একজন প্রেরণাদায়ী শিল্পী, যিনি নিজের জীবনকে সবসময় ভালোভাবে উপভোগ করতে জানেন, আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করবে।

সূত্র:https://tinyurl.com/5rjjt6kk

আফরোজা

×