
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের অন্যতম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই নিজেদের ছবি, স্ট্যাটাস বা ভিডিও পোস্ট করে থাকেন। তবে অনেক সময় এতে ট্রলের শিকার হয় অনেকে।
সম্প্রতি সময়ে সামাজিক মাধ্যমে একে অপরের বিভিন্ন বিষয়ে ট্রল করা একটি নতুন ব্যাধি বলা যেতে পারে। যারা ট্রল করছেন তারা এতে মজা পেলেও যিনি ট্রলের শিকার হচ্ছেন তারা এতে মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েন।
ট্রলের শিকার হয়ে অনেকে বিদ্ধস্ত হয়ে পাড়েন, এমন কি অনেকেই আত্মাহত্যার বেছে নেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি মাত্র পোস্ট মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে হাজার হাজার থেকে লাখ লাখ মানুষের কাছে। সেলিব্রিটিসহ, বর্তমানে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রেও এমন ঘটনা ঘটছে।
মূলত, ট্রলারদের মধ্যে সাইকোপ্যাথ বা অন্যকে দুঃখ পেতে দেখে আনন্দ পান এমন মানসিকতার মানুষ বেশি। নারী-পুরুষ যে সমান তালে ট্রল করেন। এমনকি মনে করা হয়, যারা ট্রল করেন তাদের মনে সহমর্মিতা ও অন্যকে বোঝার ক্ষমতা কম। অপর দিকে দুর্বল মানসিকতা, নিজেকে নিয়ে মেতে থাকা মানসিকতা, প্রবল আত্মসম্মানবোধ, ইগোইস্ট মানুষ ট্রলের শিকার হলে বেশি সমস্যাগ্রস্থ হন।
ট্রলে অন্যতম বড় প্রভাব পড়ে একাগ্রতা ও মনঃসংযোগে। অচেনা ব্যক্তির রুচিহীন আক্রমণ পরপর ধেয়ে এলে এমন বিক্ষিপ্ত হয়। যতক্ষণ না সেই পাল্টা উত্তর দেওয়া যাচ্ছে, তার জের চলতেই থাকে। আর সোশ্যাল সাইটে যেহেতু মন্তব্যের কোনও সময়সীমা থাকে না, তাই দেখা যায় একই পোস্টের মন্তব্য চলতেই থাকে অবিরাম।
ট্রলের শিকার হলে নিজেকে সামলাবেন যেভাবে
ইগনোর করা বা এড়িয়ে চলা
প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হল ট্রলদের ইগনোর করা। সাধারণত ট্রলরা মনোযোগ চায়, তাই তাদেরকে প্রতিক্রিয়া না দেওয়াই ভালো।
শান্ত থাকা
ট্রলদের আক্রমণাত্মক বা নেতিবাচক মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় শান্ত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। রাগান্বিত হয়ে বা আবেগপ্রবণ হয়ে প্রতিক্রিয়া দিলে তারা আরও উৎসাহিত হতে পারে।
পজিটিভ বা প্রফেশনাল প্রতিক্রিয়া
যদি ট্রলদের প্রতিক্রিয়া দেওয়া খুবই প্রয়োজনীয় হয়, তাহলে পজিটিভ বা প্রফেশনাল ভাষায় উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করুন। এতে তারা বোঝে যে আপনি পরিপক্ক এবং সম্মানজনক আচরণ করছেন।
ব্লক বা রিপোর্ট
যদি ট্রলিং খুবই বিরক্তিকর হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ব্লক বা রিপোর্ট ফিচার ব্যবহার করুন।
সাপোর্ট চাওয়া
আপনি যদি খুব বেশি চাপে থাকেন, তাহলে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের থেকে সাপোর্ট চাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তারা মানসিক সমর্থন দিতে পারে।
ট্রলদের উৎসাহ না দেওয়া
কখনোই ট্রলদের সঙ্গে বিতর্কে জড়াবেন না, কারণ এতে তারা আরও বেশি প্ররোচিত হতে পারে।
প্রাইভেসি সেটিংস আপডেট করা
আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টের প্রাইভেসি সেটিংস আপডেট করে ফেলুন যেন আপনার কনটেন্ট শুধু বিশ্বস্ত ব্যক্তিরাই দেখতে পারে।
পজিটিভ কনটেন্টে ফোকাস করা
আপনার চিন্তাভাবনা ট্রলদের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে পজিটিভ কনটেন্ট তৈরি বা শেয়ারে মনোযোগ দিন।
পেশাদারদের সহায়তা নেওয়া
যদি ট্রলিং মানসিকভাবে খুবই কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে, তাহলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে।
মেহেদী হাসান