
বহুমাত্রিক পরিচয়ের এক অনন্য শিল্পী বিপাশা হায়াত। সেই পরিচয়ের একটি হচ্ছে টিভি পর্দার নন্দিত অভিনেত্রী। এক সময় মঞ্চনাটকের অভিনয়েরও রেখেছেন কীর্তির স্বাক্ষর। অভিনয় করেছেন সিনেমাতেও। এই অভিনয়শিল্পীর পাশাপাশি তিনি একজন নাট্যকার ও চিত্রশিল্পী। আজ রবিবার বিপাশা হায়াতের জন্মদিন। ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক শিল্পীর নাম বিপাশা হায়াত। তবে এই মুহূর্তে তিনি দেশে নেই। স্বামী সন্তানের সঙ্গে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে।
বিপাশার জন্মদিনের একদিন আগে শনিবার কথা হয় তার বাবা বরেণ্য অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্মাতা আবুল হায়াতের সঙ্গে। স্মৃতিচারণ করে আবুল হায়াত বলেন, দেখতে দেখতে বিপাশা ৫৪ বছরে পা দিল। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যখন উত্তাল সারাদেশ। সেই সময়ে বিপাশার জন্ম। আমি তখন অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি। ২৩ মার্চ আমার স্ত্রীর কোলজুড়ে জন্ম নিল বিপাশা। রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালেই তার জন্ম। সেই অস্থির সময়ে তার জন্মের পর মালিবাগে বাসায় গিয়ে পরিবারসহ পাঁচ মাইল হেঁটে বিপাশার মা তাকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে যায় শ^শুরবাড়ি বেরাইদে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়টাতে শহর থেকে গ্রামই ছিল নিরাপদ। সাতদিন পর হাসপাতাল থেকে ফিরে গিয়ে আমি বিপাশার মুখ দেখি সেই শিশু বিপাশাই আজকের পরিণত বিপাশা। ’৫৪তে পা দিল। আমি গর্ব করেই বয়সটা উল্লেখ করি। জন্মদিন এলে নিশ্চয়ই বিপাশা হায়াতকে মিস করেনÑ এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল হায়াত বলেন, গত বছর আমার বই প্রকাশনা অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিপাশা দেশে এসেছিল। তখন তার মায়ের চোখের অপারেশন হলো। মায়ের পাশে থেকে চিকিৎসার পুরো দায়িত্বটা কাঁধে নিয়ে সবকিছু সম্পন্ন করে পুনরায় ফিরে যায় আমেরিকায়। ওই সময় কিন্তু বিপাশা না আসলেও পারত, কিন্তু এই যে আমার বই প্রকাশনা, মায়ের চোখের চিকিৎসা-সবকিছু মিলিয়ে ওর মনটাও আসলে মানছিল না। তাই সুদূর আমেরিকা থেকে ঢাকায় চলে এসেছিল। এটা পরম সত্যি যে সন্তান পাশে থাকলে বাবা-মায়ের মনটাই অন্য রকম থাকে, শান্তি বিরাজ করে। সাহস ও জোর থাকে মনের ভেতর। বিপাশা নেই, কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগে। তাই দূর থেকে তাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। সৃষ্টিকর্তা তাকে এবং তার স্বামী ও সন্তানকে ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন। শুভ জন্মদিন বিপাশা, আমরা তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি। ভীষণ মিস করি তোমায়।