
ঈদের কেনাকাটায় সতর্কতামূলক ৮ টি জরুরি বিষয়:
পবিত্র মাহে রমজানের ঈদকে সামনে রেখে ঈদের কেনাকাটার প্রচণ্ড ভিড় বিপণী বিতনগুলোতে। এই ভিড়ের মধ্যেই কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয় বা ঘটনার সম্মুখীন আপনি হতে পারেন।এই গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতামূলক বিষয়গুলো মেনে চললে আপনার কেনাকাটা হবে ঝামেলামুক্ত ও আনন্দদায়ক ।এক্ষেত্রে ৮টি গুরত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা উচিত।
জাল নোট থেকে সাবধান:
ঈদের বাজারে জাল টাকার সংখ্যা বেড়ে যায়। টাকা লেনদেনে সতর্ক থাকুন। জাল নোট শনাক্ত করার উপায়গুলো জেনে নিন এবং এক্ষেত্রে কারও সাহায্য নিতে পারেন। নোট যাচাই করার জন্য কাউন্টারফিট মানি ডিটেক্টর কলম সঙ্গে রাখতে পারেন। ফুটপাত বা সন্দেহজনক দোকানে লেনদেন করার সময় ভালোভাবে যাচাই করুন এবং লেনদেন থেকে বিরত থাকুন।
অনলাইনে সাবধানে কেনাকাটা করুন:
এই গরমে ঘরে বসেই আপনি আপনার পছন্দের কেনাকাটা করে নিতে পারেন। স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে চাইলে অনলাইন হতে পারে ভালো বিকল্প মাধ্যম। তবে এক্ষেত্রে বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট ও পরিচিত পেজ থেকে অর্ডার করুন,প্রতারিত হবার সুযোগ কম থাকে ,যাচাই বাছাই করে নিন। বিক্রেতার রিভিউ দেখে নিন এবং ক্যাশ অন ডেলিভারি বা নিরাপদ পেমেন্টের ওপর আস্থা রাখুন।
পকেটমার, প্রতারিত চক্র থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা:
ঈদের কেনাকাটায় বড় বা ছোট দোকানগুলোতে মানুষের ভীড় থাকে । শপিংমল বা বিপণিবিতানে পকেটমার ও ছিনতাইকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। তাই বেশি নগদ টাকা না নেওয়াই ভালো। ব্যাগ, মুঠোফোন বা মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদ জায়গায় রাখা। নারীরা ব্যাগ কাঁধে রাখার পরিবর্তে বুকের দিকে রাখুন বা শক্তভাবে ধরে রাখুন, পুরুষেরা সামনের পকেটে মানিব্যাগ,মোবাইল ফোন রাখাতে পারেন।
ছোট’ শিশুদের প্রতি খেয়াল রাখা:
আমরা ঈদ কেনাকাটায় ছোট বাচ্চা, শিশুদের নিয়ে যাই। এতে অতিরিক্ত ভীড়ে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রায়ই ঘটে। তাই ছোটদের হাত শক্ত করে ধরে রাখুন। প্রয়োজনে তাদের পকেটে আপনার ফোন নম্বর ও ঠিকানা লেখা কাগজ দিয়ে রাখুন। প্রয়োজনে তাদের কাছে আপনার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে রাখতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয়, অপ্রয়োজনে শিশুদের বাজারে না নিয়ে যাওয়া।
কেনাকাটার ক্ষেত্রে গ্যাপ দেয়া উচিত:
রমজানে রোজা রেখে কেনাকাটা করা অনেকটাই চ্যালেঞ্জ হয়। অতিরিক্ত গরমে একটানা কেনাকাটা না করে বিরতি বা গ্যাপ দিয়ে শপিং করা উচিত। অনেকে রোজা রেখে দীর্ঘক্ষণ কেনাকাটা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই কেনাকাটায় বের হলে হালকা পোশাক পরুন, সানগ্লাস ব্যবহার করুন। বিশ্রামের প্রয়োজন হলে বিশ্রাম নিন। সন্ধ্যার পর কেনাকাটা করা তুলনামূলক আরামদায়ক ।
কেনাকাটায় অবশ্যই সঠিক দাম যাচাই করুন:
ঈদের বাজারে অনেক দোকানি অতিরিক্ত দাম হাঁকান। এক্ষেত্রে অবশ্যই সঠিক দাম নিশ্চিত করতে হবে। তাই দরদাম করে পছন্দের জিনিসটি কিনুন। তার আগে বিভিন্ন দোকান ঘুরে দাম যাচাই করে নিতে পারেন। তাহলে ঠকার আশঙ্কা কম থাকে।
অতিরিক্ত নগদ টাকা বহন করবেন না:
ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা এখন বেশ সহজ। তাই প্রয়োজনে মোবাইল ব্যাংকিং, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করুন। যদি নগদ টাকা নিতেই হয়, তবে দিনের বেলায় এবং যথেষ্ট নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।
অফার বা চমকপ্রদ ডিসকাউন্ডের ফাঁদ থেকে বিরত থাকুন:
‘বাই ওয়ান গেট ওয়ান’ বা ‘ শতকরার ওপর বিশেষ ছাড়’—এ ধরনের অফার দেখে হুট করে কেনাকাটা করে ফেলবেন না। এসব অনেক সময় শুধুই প্রচারণার কৌশল হয় এবং পণ্যের দাম আদতে কম থাকে না। তাই কেনার আগে দাম যাচাই করে দেখুন এবং প্রয়োজন ছাড়া অপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনে টাকা নষ্ট করবেন না।
ঈদ উপলক্ষে প্রিয়জন ও নিজের জন্য কেনাকাটায় আনন্দ আছে নিঃসন্দেহে।বর্তমান পরিস্থিতিতে বাহিরে অতিরিক্ত সময় থাকবেন না,দিনেই কেনাকাটা শেষ করুন , ভিড়ে সাবধান থাকুন, হিসাব করে খরচ করুন, আর সবকিছুর মধ্যে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তাকে সবার আগে রাখুন।
মেহেদী হাসান