
সম্প্রতি একটি বেসরকারী টেলিভিশনে“প্রযোজক কিংবা শিল্পীদের কাছে নির্মাতারা জিম্মি- আসলেই কী তাই?” শীর্ষক বিষয় নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় নাট্যপরিচালক ও অভিনয়শিল্পী শহীদুজ্জামান সেলিম এবং প্রখ্যাত নাট্যপরিচালক চয়নিকা চৌধুরী।
আলোচনার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল, ডিরেক্টরদের কাজ, সম্মান, এবং গৌরবের বিভিন্ন আঙ্গিক।শহীদুজ্জামান সেলিম এবং চয়নিকা চৌধুরী তাদের আলোচনা এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার মাধ্যমে চলচ্চিত্র এবং নাট্য নির্মাণ শিল্পের সমৃদ্ধি, ডিরেক্টরদের কাজের মূল্যায়ন এবং শিল্পীদের প্রতি সঠিক সম্মান ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
অতিথি শহীদুজ্জামান সেলিম অনুষ্ঠানে বলেন, “আমি বলব, এটা আগে ছিল না।আমাদের নাটকের ইতিহাসে এই বিষয়গুলো শুরু হয়েছে গত কয়েক বছর ধরে। তো এই কয়েক বছরের ইতিহাসে দেখা যাচ্ছে যে, ডিরেক্টরদের সম্মান এবং গৌরবের জায়গা হারিয়ে গেছে। এই যে সম্মান হারানো বা ঋত সম্মান পুনরুদ্ধার করা, এটি আমাদের এইবারকার নির্বাচনের ইশতেহারের একটি প্রধান বিষয়।”
শহীদুজ্জামান সেলিম আরও বলেন,“ঋত গৌরব ফিরিয়ে আনা, তো কীভাবে ফিরিয়ে আনা যায়? এখন যদি ক্যাপ্টেন অফ দা শিপ খালাসীর চাইতে কম মেধা সম্পন্ন হন, তাহলে তো খালাসী ক্যাপ্টেনের উপরে একটু মাতব্বরি করবেই।”
তিনি জানান,“ তাই ক্যাপ্টেনকে তার যোগ্যতম জায়গায় বা ঠিক পথে চালু করতে যে প্রক্রিয়াগুলো ব্যাকগ্রাউন্ডে করা দরকার, সেগুলো সারা বছরব্যাপী নানা প্রশিক্ষণ, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, স্টাডি সাইকেল, বড় বড় ক্লাসিক্যাল ফিল্ম দেখা, বাংলাদেশের বড় বড় কাজ দেখা এবং কীভাবে প্রি-প্রোডাকশনগুলো ভালো করা যায়, কীভাবে কম্পোজিশন বা লাইট ক্যামেরার কাজগুলো ভালো করা যায়,এই ধরনের প্রশিক্ষণগুলো সারা বছরব্যাপী চলবে। আর চয়নিকা চৌধুরী এই উপকমিটির প্রধান।”
চয়নিকা চৌধুরী জানান, “আমরা যে সিন্ডিকেটের কথা বলছি বা যে বিষয়টি এসেছে, যেখানে ক্যাপ্টেন অফ দা শিপের উপরে মাতব্বরি হচ্ছে, সেই মাতব্বরিগুলো আসলে, আমি ডিরেক্টরস গিল্ডের মাধ্যমে আমরা মিলে বন্ধ করতে চাই।”
চয়নিকা চৌধুরী আরও বলেন, “এই যে সিন্ডিকেট ভিউ এবং অন্যান্য বিষয় উঠে এসেছে, আমার কাছে মনে হয় যে একজন ডিরেক্টরের যে শেখর, সেটা আসলে স্ট্রং হওয়া উচিত। যেমন ধরুন, আমি যদি ‘ক’ নামক একজন ব্যক্তি, আমি এখন অপূর্বকে নিয়ে কাজ করছি। আমি ‘ক’—আমাকে কেউ চিনে না। আমি এখন অপূর্বকে নিয়ে কাজ করব, মেহজাবিনকে নিয়ে কাজ করব। যখন আমি ‘ক’ বলি, তখন নাটকের ভিউ আসলে ‘ক’-এর নয়, এটি মেহজাবিন এবং অপূর্বর ভিউ। আমি তখনই স্যালুট দেব যদি ‘ক’ একটি আননোন ছেলেমেয়ে বা যে সত্যিই অভিনয় জানে, এমন একজন ডিরেক্টর হয় এবং যাদের নিয়ে কাজ করলে সেই পরিমাণ ভিউ আসে, তখন বলা যাবে যে ‘না, উনি ডিরেক্টর’।”
“তাই, আমার কাছে মনে হয়, প্রত্যেক ডিরেক্টরের জন্য এটা আসা উচিত, আমরা আগে আমাদের নামটাকে প্রতিষ্ঠিত করি, এবং আমরা যেন মানুষ চিনে দাঁড়িয়ে থাকি।”
চয়নিকা চৌধুরী আরও বলেন,“ডিরেক্টরের কাজটা শুধু পরিচালনা নয়, তার কাজটা হলো একটি প্রকল্পে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান। কাজের শুরুর থেকে শেষ পর্যন্ত যত ছোট বড় সিদ্ধান্ত, সবকিছুর সাথে সম্পর্কিত থাকে ডিরেক্টরের সিদ্ধান্ত। তাই, তাদের সম্মান এবং গৌরব ফিরিয়ে আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
তারা পেশাগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এবং একযোগভাবে কাজ করার মাধ্যমে এই শিল্পের ভবিষ্যৎ উন্নতির প্রতি তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
সূত্র:https://tinyurl.com/42ac9ttv
আফরোজা