ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৮ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

মঞ্চে আসছে আলিয়ঁসের প্রযোজনা ‘হকারদের গান’ 

সংস্কৃতি প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ১৯:৩৭, ১৭ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৯:৩৯, ১৭ মার্চ ২০২৫

মঞ্চে আসছে আলিয়ঁসের প্রযোজনা ‘হকারদের গান’ 

গ্যোয়েটে ইনস্টিটিউটে হকারদের গান নাটকের মহড়ার দৃশ্য, ছবি: জনকণ্ঠ

নাটক মানে শুধুই  নিছক বিনোদন নয়। সেই সুবাদে মঞ্চনাটকে বিনোদনের সঙ্গে উপস্থাপিত হয় উপলব্ধির বাস্তবতা। শোনা যায় জীবনের প্রতিধ্বনি। ধরা দেয় চারপাশের চেনা জগত। খুঁজে পাওয়া যায় থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনের গল্প। তেমনই  এক নাটক ‘সংস অব হকারস’ বা ‘হকারদের গান’।

এই নাটকে মজাচ্ছলে উঠে এসেছে  হকারদের জীবিকা থেকে জীবন সংগ্রামের কথকতা। বাংলা ভাষার সঙ্গে কিছুটা ইংরেজির মিশেলে সজ্জিত ভিন্নধর্মী প্রযোজনাটি মঞ্চে নিয়ে আসছে ফরাসি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা।

বৃহস্পতিবার  বেলা সাড়ে তিনটায়  শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালার এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার  হলে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে। শুক্রবার একই ভেন্যু ও  সময়ে প্রযোজনাটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী হবে। বিনা দর্শনীতে দর্শকরা  উপভোগ করতে পারবেন এই দুই প্রদর্শনী। এজন্য ইমেলে নিবন্ধন করতে হবে [email protected]  ঠিকানায়।  

নাটকটি রচনার পাশাপাশি নির্দেশনা দিয়েছেন ফরাসি লেখক ও নির্দেশক যাযি আয়ুন। গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলছে নাটকটি মঞ্চে  নিয়ে আসার প্রস্তুতি।  সেই সূত্র ধরে বর্তমানে জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র  ধানমন্ডির গ্যোয়েটে ইনস্টিটিউট আঙিনায় প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে মহড়া। প্রযোজনাটিকে স্বার্থক করে তুলতে নিদের্শকসহ মঞ্চশিল্পীরা উজার করে দিচ্ছেন নিজেদের  শ্রম ও মেধাকে।   

প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে যাযি আয়ুন বলেন, ‘হকারদের গান’ একটি হাস্যরসাত্মক নাট্য প্রচেষ্টা। এ নাটকে জীবিকার সঙ্গে  এবং উঠে এসেছে হকারদের সংগ্রামী জীবন। তারা শহরের মধ্যে মানবতা ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শহরের বিশৃঙ্খল জীবনের মধ্যে হকাররা বিভিন্ন পণ্য সুপার মার্কেটের  চেয়ে সস্তা দামে  বিক্রি করে সাধারণের সহজ করে তোলে। সংলাপের সঙ্গে নৃত্য-গীত  এবং পুতুলনাচের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে অভিনয়শিল্পীরা ফরাসি নাট্যশৈলী ‘গ্র্যান্ড গুইনিওল’  কৌশলের প্রয়োগ  করেছেন। 

হকারদের গান শীর্ষক প্রযোজনাটি মূলত  একটি হাস্যরসাত্মক শিল্পিত প্রয়াস। মঞ্চশিল্পীদের উচ্চারিত সংলাপের  মাঝে ধরা দিয়েছে সড়কে ঘুরে বেড়ানো হকারদের জীবিকা ও সংগ্রামী জীবনের কথা। এ নাটকের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নাট্যকার ও নির্দেশক যাযি আয়ুন দৈনন্দিন জীবনের প্রতি তার ভালোবাসার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

আমাদের চারপাশে দৃশ্যমান অথচ তুচ্ছ বিবেচনায় উপেক্ষিতÑএমন নানা বিষয়কে তিনি সযত্নে ধারণ করেছেন প্রযোজনাটিতে। রসবোধের আশ্রয়ে  সেসব বিষয়সমূহকে একটির সঙ্গে অপরটিকে সংযুক্ত করেছেন। সব মিলিয়ে নাটকটিতে দর্শককে বাংলাদেশী হকারদের ঝড়ো এবং রঙিন জগতে নিয়ে যাওয়ার রসদ রয়েছে।  সেই জগতে সম্মিলন ঘটেছে তিনটি পৃথক  গল্পের।  সেখানে একইসঙ্গে হাস্যকর ও অদ্ভুত পরিস্থিতির উদ্ভব হয়।

সংলাপে বাংলা ভাষার  সমান্তরালে উচ্চারিত হয় ভাঙা ইংরেজি। এর বাইরে  নাচ-গান এবং পুতুলনাচ ও ক্লাউনিংয়ের সমন্বয়ে  প্রযোজনাটি হয়ে উঠেছে বৈচিত্র্যময়। হাস্যরসের মাধ্যমে  নাটকের  চরিত্রগুলো  ছুঁয়ে যাবে দর্শকের মনন। ঘটনাপ্রবাহে যুক্ত হয়েছে দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পৃক্ত তিনটি গল্প। এই গল্পগুলো হলো ‘গোপন বিষয়’, ‘চোরকে পুরস্কৃত করা’ ও ‘প্রতিযোগিতা’।

এক  ঘন্টাব্যাপ্তির প্রযোজনাটিতে অভিনয় করেছেন চার অভিনয়শিল্পী। তারা হলেন, ইমাম হোসেন, এম এস রানা, পি  কে ফজল ও সুরাইয়া টি. মউ। সহকারী নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেছেন প্রজ্ঞা টি. রুবায়াত ও ফরজানা আক্তার। কোরিওগ্রাফির জন্য সঙ্গীত করেছেন রাহুল আনন্দ। সুর ও সংগীতে রয়েছেন গোপি  দেবনাথ। কোরিওগ্রাফি করেছেন  ফরহাদ এ. শামীম। আলোক পরিকল্পনায় রয়েছেন মুখলেসুর রহমান। প্রপস নির্মাণ করেছেন তানজি কুন ও স্বাতী ভদ্র।   পোশাক  পরিকল্পনা করেছেন নিশি বাহেদ।

মনোয়ার/শহীদ

×