
ছবি: সংগৃহীত
ঢালিউডের একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিকা পারভীন পপি দীর্ঘদিন ধরে ছিলেন লোকচক্ষুর আড়ালে। পাঁচ বছর ধরে কোনো শোবিজ আয়োজনে দেখা যায়নি তাকে, এমনকি সামাজিক মাধ্যম থেকেও নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। তবে হঠাৎ করেই তার ব্যক্তিগত জীবন, স্বামী ও সন্তান নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। আর এর সূত্রপাত তার আপন বোনের করা একটি মামলা থেকে।
পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে আইনি লড়াই
সম্প্রতি খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় পপির বিরুদ্ধে পৈতৃক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ এনেছেন তার মা ও বোন ফিরোজা পারভীন। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন, কারণ ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই পপি পরিবারসহ ঢাকায় থাকতেন এবং কখনো তাদের মধ্যে বড় কোনো দ্বন্দ্বের খবর পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের পর এবার নিজেই মুখ খুলেছেন পপি। গণমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, “আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। আমি আইনিভাবে লড়াই করব। মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।”
পপি দাবি করেন, তার নামে ছয় কাঠা জমির দলিল রয়েছে, তবে মা ও বোনেরা সেটি দখলে রেখেছেন। এমনকি তিনি যে ঘর তৈরি করেছিলেন, সেখান থেকে প্রতি মাসে প্রায় ৬০ হাজার টাকা ভাড়া আসে, যা পুরোপুরি তার পরিবারই ভোগ করছে।
মায়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
কেবল সম্পত্তির বিরোধই নয়, পপি আরও অভিযোগ করেছেন যে তার মা তার সংসার ভাঙার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন,
“আমি সব সময় পরিবারকে আগলে রেখেছি, নিজের শখ-আহ্লাদ বিসর্জন দিয়েছি। অথচ সেই মা-ই আমার স্বামী ও সন্তানকে মিডিয়ায় বাজেভাবে উপস্থাপন করেছেন। আমার শেষ আশ্রয় যে ব্যক্তি, যিনি আমার জীবনের দায়িত্ব নিয়েছেন, তাকেও অসম্মান করা হয়েছে।”
পপি আরও দাবি করেন, “আমার মা শ্বশুরবাড়িতে ফোন করে নানা মিথ্যাচার করেছেন, এমনকি আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য বলেও উসকানি দিয়েছেন।”
‘আমি আমার হক ছাড়ব না’
অভিনেত্রীর কণ্ঠে তীব্র ক্ষোভ ঝরেছে তার মা-বোনের প্রতি। তিনি বলেন, “যাদের উপকার করেছি, তারাই আমার ক্ষতি করছে। শ্বশুরবাড়িতেও আমাকে অসম্মানিত হতে হচ্ছে। আমি চাইনি আমার ব্যক্তিগত বিষয় মিডিয়ায় আসুক, কিন্তু তারাই সব প্রকাশ করেছে।”
সর্বশেষ, নিজের প্রাপ্য জমি নিয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার হক ছেড়ে দেব না। প্রয়োজনে এতিমখানা বা মাদ্রাসায় দিয়ে দেব, কিন্তু তাদের দেব না। যারা আমার সম্মান নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে, তাদের জন্য আমার কাছে কিছু নেই।”
এখনো এই মামলা নিয়ে কোনো চূড়ান্ত রায় হয়নি, তবে পপি জানিয়েছেন, তিনি আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন এবং নিজের প্রাপ্য ফেরত পাবার জন্য লড়বেন। ঢালিউডে একসময় রাজত্ব করা এই অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত জীবনের এই সংকটের ইতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তা এখন দেখার বিষয়।
কানন