
সামিরা খান মাহি
জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামিরা খান মাহি। সম্প্রতি বেশকিছু নাটক করে আলোচনায় তিনি। তবে জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে নিজেকে মাপেন না এ গ্ল্যামারকন্যা। বরং অভিনয়ের ভুলত্রুটিগুলো শুধরে আরও ভালোভাবে নিজেকে মেলে ধরতে চান অভিনেত্রী। ক্যারিয়ার পরিকল্পনা নিয়ে তার ভাষ্য, ‘ক্যারিয়ারে ভালো কাজ যুক্ত করতে চাই। নাটক তো বরাবরই করছি; কিন্তু এ বছর আমি চাই, একটা-দুটো ভালো ওটিটি করি। সিনেমাটা তো স্বপ্ন; ওটা হলে হবে, না হলে নেই। এ ছাড়া বেছে নাটক করার চেষ্টা করছি। এটার একটা কারণ আছে। অনেক কিছুতে আমার অনেক দুর্বলতা আছে। কয়েকটা ক্লাস করা উচিত। ভোকাল প্র্যাকটিস করা উচিত। ভালো করে নাচটাও শেখা উচিত। শূটিংয়ের পাশাপাশি এই শিক্ষাগুলো নিতে চাই। এ সময়ে সিনিয়রদের অনেকেই কাজে নেই। তবে যারা আছেন তারা নতুনদের কি সাহায্য করেন? উত্তরে মাহি বলেন, ‘আমি নিজেকে আনলাকি বলব। কারণ সিনিয়র অভিনেত্রীদের সঙ্গে দেখাই হয় না। আগে বড় বড় ধারাবাহিক হতো। সব সিনিয়র তারকা শিল্পী একসঙ্গে কাজ করতেন। এখন হয়তো বছরে একবার কোনো অ্যাওয়ার্ড শোতে দেখা হয়, যেখানে সেভাবে কথা বলার সুযোগ হয় না। পুরুষ অভিনয়শিল্পীদের কাছ থেকেও আমরা অনেক কিছু শিখি; কিন্তু ফিমেল-ফিমেলের মধ্যে একটা ব্যাপার আছে। সিনিয়ররা দৃশ্যগুলো কীভাবে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেন, কেমন অভিনয় করেন, চরিত্রগুলো কীভাবে ফুটিয়ে তোলেন, সেটা দেখার সুযোগ একদমই হয় না। তবে যখনই কোনো সিনিয়র অভিনয়শিল্পীর সঙ্গে দেখা হয়, তখন তাকে খুব অবজার্ভ করি। চেষ্টা করি শেখার। ক্যারিয়ারে মাহির টার্নিং পয়েন্ট কোনটি? তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, যে সময়টায় ‘গার্লস স্কোয়াড’, ‘হাঙর’ করেছিলাম, তখন আরও কয়েকটি নাটকে খুবই ভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয় করেছি। এরপর থেকে দর্শক আমাকে সিরিয়াসলি নেওয়া শুরু করেছেন।’
আপনি যেমন কম সময়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, আপনার সমসাময়িক অন্যরাও পাচ্ছেন। আজকাল জনপ্রিয়তা পাওয়া কি সহজ হয়ে গেছে? এ প্রশ্নের উত্তরে মাহি বলেন, ‘একটা সময় সবাই টেলিভিশনে নাটক দেখতেন। এখন তো ইউটিউবে নাটক দেখেন। তাই অনেক শিল্পী আসবেন। এটাই স্বাভাবিক। তাদের মধ্য থেকে দর্শক ভালো লাগার অভিনয়শিল্পীকে গ্রহণ করবেন। আগে অনেক অপশন ছিল না। তা ছাড়া মেহজাবীন আপুদের সময়ে বেশির ভাগ শিল্পী প্রতিযোগিতা থেকে আসতেন। এখন ভালো কাজের মাধ্যমে আসছেন। তবে এটা বলব, আগের থেকে জনপ্রিয়তা একটু ইজি; কিন্তু জনপ্রিয়তা পেলেই হয় না, টিকিয়ে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি যে সময়ে শুরু করলাম, তখন আরও ২০ জনের মতো এসেছিলেন। সবাই তো আর ক্লিক করলেন না। এ ক্ষেত্রে এটাও বলা যায়, দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া এতটাও সোজা নয়। বিশেষ করে ভালোবাসা পাওয়াটা ভেরি ডিফিকাল্ট।’ এ সময়ে এসে কাউকে প্রতিযোগী মনে করেন মাহি? তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, তারা সবাই নিজস্বতা নিয়ে এসেছেন। যেমন আমার এটা বিশেষ দক্ষতা আছে, যেমন সিলেটি ভাষায় কথা বলতে পারি, যেটা দর্শক পছন্দ করেন। অনেকে আমাকে ভার্সেটাইল অভিনেত্রী বলেন। কেউ কেউ বলেন, তোমাকে বড়লোক (ধনী) চরিত্র দিলে ভালো করে করতে পারো। গ্রামের চরিত্র দিলেও ভালো করো। সুতরাং আমি কাউকে আমার প্রতিযোগী মনে করি না। কাউকে এমনটা মনে করলে হিংসার বিষয়টা চলে আসবে। আমি তো চাই সবার সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করতে।’ সিনেমাকে স্বপ্নের জায়গা ভাবেন মাহি। কোন ধারার সিনেমায় আগ্রহ তার? এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘হাওয়া’ দেখার পর সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা জেগেছে। আমি যদি কখনো সিনেমায় অভিনয় করি, তাহলে প্রথম সিনেমাটাই যেন এ রকম ধরনের গল্প হয়। অনেক সুন্দর আর গ্ল্যামার লাগতে হবে, এটা আমি চাই না। ক্যারেক্টারটা প্লে করে আসতে চাই। যেটা আমরা ‘হাওয়া’য় দেখেছি। ওখানে কিন্তু তুষিকে অনেক সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে, এমন না; কিন্তু চরিত্রটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।