
চারদিকে শুধু গুলি আর গুলির শব্দ। রাস্তায় লাশ হয়ে পড়ে আছে কারো ভাই, কারো সন্তান, আবার কারো স্বামী। কেপে উঠছে এলাকা।
জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে নাটকের মাধ্যমে। সোমবার সন্ধ্যায় মঞ্চায়িত হলো নাটক ‘লাশের দেশে’। মাদারীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে নাটকটি দেখতে ভীড় জমায় শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সের মানুষ। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনা ঠাই পায় নাটকে। সেখানে ফুটিয়ে তোলা হয় স্বৈরাচারী সরকারের অত্যাচারের গল্প।
স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয় বহু মানুষকে, সেটিও বোঝানো হয়েছে ৪০ মিনিটের নাটকে। এমনকি বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জনতার উপর কিভাবে পুলিশ গুলি বর্ষণ করেছে তাও বর্ণনা করা হয়েছে। নতুন গল্প নিয়ে লেখা নাটকটিতে অংশ নিতে পেরে খুশি শিল্পীরা। জানান ভাল লাগার কথাও।
সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ও জুয়েল কবিরের রচনায় এতে অংশ নেয় মাদারীপুর জেলার ১৬ জন শিল্পী। দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনে ঘটে যাওয়া সব ঘটনা তুলে ধরার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের স্বৈরাচারের গল্প রয়েছে নাটকটিতে। পাশাপাশি ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও তার আগের ঘটনা যাতে নতুন প্রজন্ম ভুলে না যায় এজন্য নাটকটি লেখা হয়েছে বলে জানান নাট্যকার। সবক্ষেত্রে চীরতরে বৈষম্য দূর করতে এমন নাটকের বিকল্প কিছু নেই। পাশাপাশি সমাজকে পরিবর্তন আনতে নিয়মিত নাটক মঞ্চায়িত করা বলে মনে করেন আয়োজকরা।
ডা. সোহেল আহম্মেদ বলেন, লাশের দেশে এই নাটকের নাম। নাম শুনেই বোঝা যায় কি নির্মম অত্যাচারের বিষয় রয়েছে নাটকে। গ্যলারি জুড়ে দর্শকের মাঝে নাটকটি দেখে অনেক কিছু শিখেছি।
অভিনয় শিল্পী আজম কামাল বলেন, ফ্যাসিবাদী নাটকটি মঞ্চায়িত করার আগে প্রায় একমাস শিল্পীরা অনুশীলন করেছে। দর্শকদের আনন্দ দেয়াই ছিল শিল্পীদের মূল লক্ষ্য।
শিল্পী মাহাবুব আলম বলেন, দর্শকদের সর্বোচ্চ দেয়ার চেষ্টা করেছি সবাই। পরিশ্রমও করেছিলাম আমরা। আশা করছি দর্শকদের ভাল লেগেছে নাকটটি।
নাটকটির রচয়িতা জুয়েল কবির বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় সেটি নাটকে তুলে ধরা হয়েছে। পাপাশাশি স্বৈরাচার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে পুলিশের ভূমিকার বিষয়ও ঠাই পায় এখানে। যা দেখে দর্শকরা খুবই আনন্দ পেয়েছে।
মাদারীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল হাসান মিলন বলেন, বৈষ্যমবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গল্প তুলে ধরা হয় নাটকটিতে। এটি দেখতে ভীড় জমায় নানা বয়সের মানুষ। শিল্পীরাও চমৎকার অভিনয় করেছে।
মাদারীপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে শুধু মাদারীপুর নয়, সারাদেশেই এমন নাটক মঞ্চায়িত হচ্ছে। এই গণহত্যা সর্ম্পকৃত নাটকটিতে সাধারণ মানুষের অনেক শিক্ষনীয় বিষয় রয়েছে। যা নতুন প্রজন্মের জানা খুবই প্রয়োজন।
সুবল/সাজিদ