ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১

চুম্বনে মাত্রা ছাড়ালেন ঋ-কিউ!

সংস্কৃতি ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:১৮, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চুম্বনে মাত্রা ছাড়ালেন ঋ-কিউ!

ছবিঃ সংগৃহীত

 আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব চুম্বন দিবস। কবির সুমনের গানে বলতে হয় "ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ব্যারিকেড করো প্রেমের পদ্যটাই, বিদ্রোহ আর চুমুর দিব্যি শুধু তোমাকেই চাই!"

গোলাপ, প্রস্তাব, প্রেমের ভালুক, প্রতিশ্রুতি, আলিঙ্গন দিবসের পর্ব পেরিয়ে উদ্দাম প্রেম। এ বার প্রেমিকার ঠোঁটে ঠোঁট রেখে ভালবাসার শপথ নেওয়ার পালা। হাত, কপাল, গাল পেরিয়ে প্রিয় সান্নিধ্যে প্রগল্ভ হওয়ার দিন।

হুবহু এই কাণ্ড ক’দিন আগে ক্যামাক স্ট্রিটের খোলা রাস্তায় ঘটিয়েছেন অভিনেত্রী ঋ সেন! সে দিন কিন্তু চুম্বন দিবস ছিল না! তা হোক। অভিনেত্রীর মতে, ভালবাসার আবার দিন ক্ষণ? বেশ কিছুটা একান্ত সময় কাটিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে আবেগে ভেসেছিলেন তিনি। স্থান-কাল ভুলে গলা জড়িয়ে গভীর চুম্বন এঁকে দিয়েছিলেন প্রেমিকের ঠোঁটে! ঋ-এর কথায়, “আমাদের চারপাশে কোনও ব্যারিকেড ছিল না। কেবল কিছুটা সময় যেন থমকে গিয়েছিল! হুঁশ ফিরতে দেখলাম, আশেপাশের যান চলাচল থমকে। পুলিশ বাঁশি বাজাচ্ছে।” পুরুষটি নাকি একটু লজ্জা পেয়ে গিয়েছিলেন।

ঋ বরাবর এ রকমই। একটু খামখেয়ালি, কিছুটা মেজাজি। অনেকটা হৃদয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে চলা এক জন। তাঁর খুব ঘনিষ্ঠ মানেই চুম্বন উপহার। সেটা গভীর চুমু, ভেজা চুমু না ঠোঁট ঠাসা চুমু? প্রশ্ন শুনে ফোনের ও পারে একপ্রস্ত হাসি। “আমার খুব ভাল বন্ধুদের জড়িয়ে যখন তখন গালে চুমু খাই। চকাম চকাম শব্দ তুলে। কোনও অস্বস্তি করে না।” একই ভাবে তিনি চুমু খান প্রিয় পোষ্য, বাড়ির বাকিদেরও। অর্থাৎ, সম্পর্ক বুঝে চুম্বনের প্রকারভেদে বিশ্বাসী তিনি। তাই চুমুর ধরন পাল্টে যায় ব্যক্তি বিশেষে। কখনও রাস্তায়, কখনও রেস্তরাঁয় তিনি অনায়াসে গাঢ় চুমু এঁকে দিতে পারেন প্রিয়র ঠোঁটে।

ঋ-এর কাছে চুম্বন যেন অনেক রোগের এক দাওয়াই। “ধরুন, খুব মন খারাপ আপনার। পছন্দের মানুষটি জড়িয়ে ধরে কাছে টেনে চুমু খেলেন। দেখবেন, নিমেষে মন তরতাজা!” উদাহরণও দিয়েছেন। বললেন, “মাস খানেক আগের কথা। অটোয় চড়েছি। খুব বয়স্কা একজন অটোতে উঠবেন। কিন্তু ভাড়া নিয়ে অস্বস্তিতে। সে দিন জোর করে তাকে অটোয় তুলে বলেছিলাম, তোমার ভাড়া আমি দেব। অটো থেকে নামার আগে সেই দিদা আমার গালে, মাথায় চুমু খেয়েছিলেন। মায়ের কথা মনে করে সে দিন হাপুস নয়নে কেঁদেছিলাম। আজকের দিনে এমন নিষ্পাপ আদর কোথায়?”

চুম্বন যে সব সময় সুখস্মৃতি বয়ে আনে তা নয়। কখনও কি বলপূর্বক ভাবে কেউ ছুঁয়েছে ঋ-এর ঠোঁট? “হ্যাঁ, ছুঁয়েছে”, স্বীকার অভিনেত্রীর। সেই সময় ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি নতুন। একটি দৃশ্যে তার গালে চুমু খাবেন অভিনেতা। তিনি জোর করে অভিনেত্রীর ঠোঁটে ঠোঁট রেখেছিলেন। সে দিন চুপচাপ হজম করেছিলেন ঋ। “এখন হলে ঠাসিয়ে চড় মারব”, উষ্মা তার।

কথার মাঝে দুষ্টু হেসে ঋ বললেন, “চুম্বন আমার কাছে শরীরী আশ্লেষে ডুব দেওয়ার পূর্ব মুহূর্ত! আমার চুমু তাই যে কোনও পুরুষকে নিমেষে কামনায় ভাসিয়ে দেয়। আজীবন সেই স্পর্শ মনে রাখতে বাধ্য করে। আমি তার পাশে থাকি বা না থাকি!” ঠিক যে ভাবে কৌশিক মুখোপাধ্যায় ওরফে কিউ-এর পরিচালনায় ‘গাণ্ডু’ ছবিতে অভিনয়ের অনেক দিন পরেও তাঁকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছিল পর্দার চুম্বন!

পরিচালক কৌশিক মুখোপাধ্যায়। কিউ নামেই তাঁর পরিচিতি। তার ছবিতে, তার কাজে চুম্বন আলাদা মাত্রা যোগ করেছে। চুম্বন দিবস তো আপনার দিন? সঙ্গে সঙ্গে ঝকঝকে জবাব, “রোজই আমার দিন। মানে চুমু খাওয়ার দিন! এই জন্যই তো কলকাতা ছেড়ে গোয়ায়। এখানে প্রকাশ্যে, যখন তখন, যেখানে সেখানে চুমু খাওয়া যায়। কেউ নীতিপুলিশি করে না!”

অথচ এই কলকাতাতেই তাঁর প্রথম চুম্বন! এক স্বল্প পরিচিত বিদেশিনী পার্ক স্ট্রিটে রাস্তার মাঝে জমাটি চুমু খেয়েছিলেন তাঁকে। কিউ তখন মাত্র দ্বাদশ শ্রেণি। “চুমু খেয়েই চিরতরে এই দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছিল সে। বাবার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, চুমুই যদি খেল তো চলে গেল কেন? বাবা বলেছিলেন, ‘বিদেশে এটাই রীতি। পুরনো মায়া বয়ে বেড়ায় না।’”
বিদেশে তো দেখা হলেই চুম্বন! এ ভাবে কথায় কথায় চুমু খেলে তার জৌলুস থাকে?

কিউয়ের কথায়, “আলবাত থাকে। আমার মনে হয়, ফি দিন ইচ্ছে হলেই চুমু খাও। মন ভাল থাকবে। সম্পর্ক গাঢ় হবে।” তাই সুযোগ পেলেই তাঁর বর্তমান সঙ্গিনী হেনার ঠোঁটে ঠোঁট ডোবাতে ভালবাসেন কিউ। রাস্তায়-ঘাটে, না কি আড়ালে আবডালে? পরিচালকের মতে, চুমুর কোনও নির্দিষ্ট স্থান-কাল থাকে না। “আপনি তখন রাস্তায়। আবেগ এসে ভাসিয়ে দিল আপনাকে। পাশে প্রিয় মানুষ। আপনি চুমু খাবেন না! আড়াল খুঁজবেন? ভালবাসা প্রকাশ করায় তো কোনও পাপ নেই। কোনও নীতি-নিয়মও নেই”, বললেন তিনি। চুম্বন দিবসের আলাদা কোনও গুরুত্ব নেই তার কাছে।

‘গাণ্ডু’ ছবির পর ঠিক এ ভাবেই ঋ-কে আদর করতেন কিউ, প্রেম দিবসের আগে এখনও টালিউড এই চর্চায় ভাসে। সামান্য থমকে গেলেন কি পরিচালক? সুদূর অতীত ঠেলে স্মৃতি জড়ো হল কিউয়ের কথায়, “১১ বছর একসঙ্গে ছিলাম আমরা। কয়েক কোটি চুমু খেয়েছি ওকে। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব?”

গৌতম/আসিফ

×