ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৯ মাঘ ১৪৩১

আসন্ন ভালোবাসা দিবস, আড়ালে রক্তাক্ত প্রেমের ইতিহাস

প্রকাশিত: ১৯:৪৯, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আসন্ন ভালোবাসা দিবস, আড়ালে রক্তাক্ত প্রেমের ইতিহাস

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ভ্যালেন্টাইনস ডে-র ঐতিহ্য মূলত রোমান্টিক প্রেমের কনসেপ্টে আবদ্ধ। প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেমিক-প্রেমিকারা এই দিনটি উদযাপন করেন কিন্তু জানেন কি, এই দিনের পেছনে থাকা সেইন্ট ভ্যালেন্টাইনের কাহিনি একেবারেই রোমান্টিক নয় বরং নৃশংস ও হৃদয়বিদারক?

ইতিহাসের বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, একাধিক সেইন্ট ভ্যালেন্টাইন থাকলেও সবচেয়ে প্রচলিত চরিত্রটি হল তৃতীয় শতকের রোমান পুরোহিত ভ্যালেন্টাইন দে টার্নি। ২৭০ খ্রিস্টাব্দে, রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নেন। তিনি যুদ্ধের জন্য পুরুষদের মনোযোগ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নারী-পুরুষের বিয়ে নিষিদ্ধ করেন। সম্রাটের এই সিদ্ধান্তে ভ্যালেন্টাইন ছিলেন আপত্তিকর। তিনি গোপনে প্রেমিক-প্রেমিকাদের বিয়ে দিতে শুরু করেন, যা জানাজানি হলে সম্রাট তাকে বন্দি করেন।

কারাগারে বন্দি অবস্থায় ভ্যালেন্টাইনকে পাহারা দিচ্ছিলেন জেলার অ্যাস্টেরিয়াস, যিনি তাকে তার দাবি করা অলৌকিক ক্ষমতার জন্য খোঁটা দিতেন। একদিন ভ্যালেন্টাইন প্রার্থনা করে অ্যাস্টেরিয়াসের জন্মান্ধ কন্যা জুলিয়াকে সুস্থ করে তোলেন। এই অলৌকিক ঘটনা দেখে অ্যাস্টেরিয়াস খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত হন এবং কারাগারের সকল ধর্মীয় বন্দিকে মুক্ত করে দেন।

এ ঘটনাটি সম্রাটকে ক্ষিপ্ত করে তোলে, এবং তিনি ২৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইন ও অ্যাস্টেরিয়াসকে মৃত্যুদণ্ড দেন। তার পর, ভ্যালেন্টাইন জুলিয়াকে একটি চিঠি লেখেন, যার শেষে তিনি স্বাক্ষর করেন, "ফ্রম ইয়োর ভ্যালেন্টাইন"। এই শব্দগুলো পরবর্তীতে ভালোবাসার প্রতীক হয়ে ওঠে।

এছাড়াও ভ্যালেন্টাইন মৃগীরোগ সারে দেওয়ার জন্যও বিখ্যাত ছিলেন। তিনি প্রেতাত্মার কবল থেকে রোগীদের মুক্ত করে তাদের সুস্থ করতে সক্ষম ছিলেন।

এভাবেই ভ্যালেন্টাইনস ডে-র অন্তর্নিহিত ইতিহাস একটি সাহসী, হৃদয়বিদারক গল্পের দিকে ইঙ্গিত করে, যা বর্তমানে ভালোবাসা, প্রেম, ও সম্পর্কের মহিমা তুলে ধরে।

আসিফ

×