প্রীতি জিন্তা বলিউডে যাত্রা শুরু করেছিলেন ১৯৯৮ সালে 'দিল সে' সিনেমার মাধ্যমে, যেখানে তিনি একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। তবে অল্প সময়ের মধ্যে তার অভিনয়ের দক্ষতা ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে দর্শকরা তাকে নিজেদের প্রিয় তারকা হিসেবে গ্রহণ করেন।
রোমান্টিক, কমেডি থেকে শুরু করে অ্যাকশন, থ্রিলার-সব ধরনের সিনেমাতেই তার বিচিত্র অভিনয় সত্যিই নজর কেড়ে নিয়েছিল। অনেক সিনেমাই বক্স অফিসে সাফল্য অর্জন করেছে, আর এর মাধ্যমে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং প্রশংসা পেয়েছেন। আজ, তার ৫০ তম জন্মদিন উদযাপন করছেন।
জেন জিরা বলছে,আমরা আছি ১৯৯৮ সালে, এমন এক সময়ে, যদি কোনো বলিউড নায়িকা স্ক্রীনে গরম পোশাক পরেন, যা শ্বাস-প্রশ্বাসে কুয়াশা সৃষ্টি করে। ঠিক সেই সময়ে প্রীতি জিন্তা, পুরো শরীরে কালো পোশাক পরিহিত, নেক থেকে পা পর্যন্ত নিউ জিল্যান্ডের "অল ব্ল্যাকস" বিনি পরিহিত, গাইছেন ‘সোলজার, সোলজার’ ববি দেওলের সাথে, নিউ জিল্যান্ডের সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্যের মাঝে।
এমন একটি দৃশ্য ছিল যা বলার মতো, এলসা শ্যাপারেলির প্রিয় বিশেষণ ব্যবহার করলে, একেবারে চমকপ্রদ! এমনকি "কুচ কুচ হোতা হ্যায়" সিনেমাতেও, বছরের সবচেয়ে বড় বক্স অফিস হিট, চিরাচরিত শিফন ব্যবহার করে রাহুলকে তার ‘একমাত্র সত্য ভালোবাসার’ রূপটি দেখানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল।
তবে প্রীতি জিন্তার বিনি পরা চরিত্রের দৃশ্য হয়তো সেদিনের তুলনায় একটু কম বিস্ময়কর ছিল, যখন, মাত্র কয়েক মাস আগে, "দিল সে" সিনেমায় শাহরুখ খানের বিপরীতে তার অভিষেক হওয়ার সময়, দেশের সবচেয়ে বড় সুপারস্টারকেও তিনি এক অবাক করা প্রশ্ন দিয়ে স্তম্ভিত করেছিলেন: "আপনি কি এখনও কুমারী?"
আজ, তার অভিষেকের ছাব্বিশ বছর পরে এবং আট বছর পর, তিনি আবারও আমাদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরে আসছেন। তিনি রাজকুমার সান্তোষী পরিচালিত "লাহোর ১৯৪৭" ছবির মাধ্যমে ২০২৫ সালে চলচ্চিত্রে ফিরছেন, তবে তার শাস্ত্রীয় ফ্যাশন পছন্দ এবং চিরকাল তরুণ উদ্যমের জন্যই আজও বিভিন্ন প্রজন্মের দর্শকরা আরও কিছু দেখতে চান।
গত জুনে প্যারিসে তার একটি অবাক করা ভোগ বিশ্ব উপস্থিতি, রাহুল মিশ্রের সিকুইন ড্রেসে, দুই মিলিয়নেরও বেশি ভিউ পেয়েছিল ভোগ ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে। ভোগ ইন্ডিয়াকে দেয়া এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি এই লুকটি তৈরি করতে সক্রিয়ভাবে স্টাইলিস্ট সোনিকা গ্রোভারের সঙ্গে কাজ করেছিলেন। "আমি তাকে বলেছিলাম, আমি কিছু পুরনো ধাঁচের চেষ্টা করতে চাই, তাই কিছু নাটকীয়তা ও রহস্যের জন্য একটি ভেল যোগ করা উচিত। সেদিন আমি যেন এক মিলিয়ন ডলারের মতো অনুভব করছিলাম," তিনি বলেন।
এটি ছিল তার একমাত্র রেড-কার্পেট জয় নয়। মে মাসে কান চলচ্চিত্র উৎসবে তিনি সিমা গুজরালের শাড়ি এবং চোপার গহনা পরিধান করে একটি অবিস্মরণীয় উপস্থিতি তৈরি করেছিলেন। সেখানে তিনি সিনেমাটোগ্রাফার সন্তোষ শিবনকে "হোম্মেজ পিয়েরে অ্যাঞ্জেনিউ" পুরস্কৃত করেছিলেন। তার ক্যানস লুক সম্পর্কে তিনি বলেন, "আমি ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কিছু সিম্পল এবং ভারতীয় পোশাক পরতে চেয়েছিলাম।"
সপ্তাহান্তে প্যারিস কট্যুর সপ্তাহে, তার উপস্থিতি ছিল স্টেফেন রোল্যান্ড এবং রাহুল মিশ্রের পোশাকে, যা সত্যিকার অর্থে "ইন ওয়ে" ছিল। এতটুকু যেটা তিনি মনে করেছেন, "এটি আমাকে পরিধান করতে হবে, এটাই খুব সরল।"
আর বছরের পর বছর ধরে, প্রীতি জিন্তা নিজের চরিত্রের সাথে একাধিক রকমের কাস্টম পোশাক পরেছেন, যেমন "সাংঘর্ষ", "ক্যাহ কেহনা", "কোই...মিল গেয়া", "কাল হো নাহো", "ভীর-জারা", এবং আরও অনেক কিছু। তার স্টাইল ছিল শুদ্ধ, বাস্তবসম্মত, এবং কখনো কখনো অতিরিক্ত নাটকীয়তা এড়িয়ে চলা।
এখন, "লাহোর ১৯৪৭" ছবির মাধ্যমে তার ক্যারিয়ারের পরবর্তী অধ্যায় শুরু হচ্ছে এবং তিনি সেই "কমব্যাক" শব্দটি নিয়ে খানিকটা সতর্ক। "ক্যারিয়ারকে গুরুত্ব দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ, তবে একজন মহিলার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, জীবনে সবকিছু সঠিকভাবে হয় না। জীবনের তাড়া, এবং জীবনের পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্তের পেছনে অনেক সময় লাগে," প্রীতি বলেন।
প্রীতি জিন্তা ইন্সটাগ্রামে তার জীবনের কিছু ঝলক শেয়ার করেন: তার স্বামীর সাথে হলি উদযাপন, সন্তানদের সঙ্গে হাঁটা, তাদের মুখ ছাড়া ছবি, অথবা একটি পথের বেঞ্চে শুয়ে থাকা অবস্থায়। "আমি সবসময় বাস্তব থাকতে পছন্দ করি, কারণ আমি তেমনই," তিনি বলেন।
এখন, প্রীতি আবারও বড় পর্দায় ফিরে আসছেন, তার নিজস্ব সময়সূচী অনুসারে, এবং নতুন প্রজন্মের সামনে তার ফ্যাশন-ফরওয়ার্ড অঙ্গভঙ্গি এবং শক্তিশালী উপস্থিতি নিয়ে উজ্জ্বল হচ্ছেন।
সূত্র:https://tinyurl.com/ymyzsusd
আফরোজা
