“২০০৮-২০১০ সালের কিছু মুহূর্ত! জীবনের যাত্রার এই সময়গুলো আমাকে গড়ে তুলেছে।” এমন আবেগঘন কথায় শুরু হয় চিরকুটের প্রধান ভোকাল ও গীতিকার শারমিন সুলতানা সুমির এক সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্ট। চিরকুটের গানের মতোই, এই পোস্টেও মিশে ছিল জীবনের গভীরতা, উপলব্ধি আর সংগীতের প্রতি অগাধ ভালোবাসা।
২০০২ সালে সুমির হাত ধরে শুরু হওয়া চিরকুট এখন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড। তবে সাফল্যের পেছনের গল্পে মিশে আছে অনেক পরিশ্রম, চড়াই-উৎরাই, আর জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। পোস্টে সুমি লিখেছেন, “আমি সবসময়ই একজন সাহসী এবং চিন্তাশীল মানুষ। জীবনে কখনো বিরক্ত হইনি, এমনকি খারাপ সময়েও। সবসময় শেখার চেষ্টা করেছি, মানুষকে পর্যবেক্ষণ করেছি। এই ভালোবাসা এবং শেখার আগ্রহ থেকেই চিরকুটের গানগুলো তৈরি হয়েছে।”
২০০৮ থেকে ২০১০ সাল ছিল চিরকুটের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সময়। সুমি স্মরণ করেন, কীভাবে এই সময়ে ব্যান্ডটি নিজেদের গড়ে তুলেছিল। তিনি বলেন, “প্রকৃতি, সৃষ্টি আর মানুষের ভেতর থেকে আমি জ্ঞান সংগ্রহ করেছি। ভালো মন, ভালো উদ্দেশ্য আর সঠিক সংযোগ খুঁজেছি। এগুলো বিরল হলেও খুবই শক্তিশালী।”
এই আবেগঘন পোস্টে সুমি তার জীবনের চড়াই-উৎরাইয়ের কথাও উল্লেখ করেন। “আমি কখনো জীবনের প্রতি অবজ্ঞা করিনি। সবসময় জানতাম, যেকোনো কিছু মুহূর্তেই বদলে যেতে পারে। এই উপলব্ধি আমাকে সংগীতের কাছে আরও নিবেদিত করেছে,” বলেন তিনি।
চিরকুটের সংগীত কেবল বিনোদন নয়; এটি জীবনের গল্প। সুমির নিজের কথায়, “চিরকুট শুধু একটি ব্যান্ড নয়, এটি আমার আত্মার প্রতিচ্ছবি। আমি আমার জীবনের সমস্ত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব সংগীতের হাতে তুলে দিয়েছি। সংগীত আমাকে কখনো হতাশ করেনি, বরং ভালোবাসা এবং শক্তি দিয়েছে।”
সুমির পোস্টের আরও একটি দিক ছিল ভবিষ্যতের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি লিখেছেন, “আমি অপেক্ষা করছি জীবনের পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য। কে আসবে, কে যাবে, কে সংযোগ করবে—এসব দেখার জন্য। কিন্তু আমি জানি, সংগীত, কঠোর পরিশ্রম আর শৃঙ্খলা আমাকে আরও ভালো কিছু এনে দেবে।”
চিরকুটের প্রতি ভক্তদের ভালোবাসা এই ব্যান্ডের শক্তি। সুমি তার পরিবার, বন্ধু, ভক্ত, সহকর্মী আর পৃথিবীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লেখেন, “আমার কাছে ভালোবাসা আছে, আর ভালোবাসা মানেই পুরো পৃথিবী। এই ভালোবাসা আমি তোমাদের সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই।”
চিরকুটের প্রতিটি গান যেন জীবনের একেকটি অধ্যায়। সুমির আবেগময় লেখাগুলো প্রমাণ করে, সংগীত তাদের কাছে কেবল একটি শিল্প নয়, এটি জীবনের গভীরতম সত্যের প্রকাশ।
সুমির নেতৃত্বে চিরকুটের এই যাত্রা যেন থেমে না যায়। তাদের সংগীত আরও হৃদয়ে জায়গা করে নিক, ছড়িয়ে পড়ুক ভালোবাসা আর শক্তি।
আফরোজা