ছবি: সংগৃহীত
ইন্দোরের মেয়ে মোনালিসার জীবন যেন এক রূপকথার গল্প। মহাকুম্ভমেলায় পাথরের মালা বিক্রি করতে গিয়েছিলেন সাদামাটা এই ষোড়শী। জীবনের কঠিন বাস্তবতার কারণে লেখাপড়ার সুযোগ পাননি। পরিবার চালানোর দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। কিন্তু হঠাৎ করেই ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়।
২০২৫ সালের কুম্ভমেলায় এক যুবকের তোলা তাঁর ছবি ভাইরাল হয় সমাজমাধ্যমে। সেই চোখের মায়া, নিষ্পাপ সৌন্দর্য নজর কাড়ে কোটি মানুষের। দেশজুড়ে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে— মোনালিসা। এই খ্যাতি যেমন তাঁকে পরিচিতি এনে দেয়, তেমনই তাঁর জীবনের মোড়ও বদলে দেয়।
মেলার সরলতাপূর্ণ জীবনে এই আকস্মিক খ্যাতি বিড়ম্বনা ডেকে আনে। মালা বিক্রির বদলে লোকজন মোনালিসাকেই দেখতে ভিড় জমাতে থাকে। ব্যবসা লাটে ওঠে। মেলা ছেড়ে হতাশ মোনালিসা ফিরে আসেন নিজের গ্রামে। কিন্তু এখানেই শেষ নয় তাঁর গল্প।
ভাইরাল হওয়া মোনালিসার প্রতি বিনোদন দুনিয়ার আগ্রহ বাড়তে থাকে। শোনা যাচ্ছে, দক্ষিণী সুপারস্টার অল্লু অর্জুনের পরবর্তী সিনেমা পুষ্পা ৩-এর নায়িকা হিসেবে তাঁকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই তিনি নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন, যা জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছে। এক ঝলক তাঁকে দেখার জন্যই লাখো মানুষ ভিড় জমাচ্ছে তাঁর চ্যানেলে।
যে মোনালিসা একসময় জীবনযুদ্ধে মালা বিক্রেতা ছিলেন, তিনিই এখন সম্ভাব্য রুপালি পর্দার তারকা। তবে তাঁর জীবনের এই উত্তরণ শুধু খ্যাতি বা ভোগ নয়, একটি অনুপ্রেরণার গল্প। নিজের সাদামাটা জীবনের কথা বলতে গিয়ে মোনালিসা বলেন, “বিদেশে পড়াশোনা করতে গেলে মা-বাবার দেখাশোনা করত কে? এই কারণেই প্রতি বছর মেলায় মালা বিক্রি করতে যাই।”
মোনালিসার গল্প আমাদের শেখায়, জীবনের যেকোনো পরিস্থিতি থেকেই আলোকিত পথে যাত্রা করা সম্ভব। হয়তো শিগগিরই তাঁকে দেখা যাবে রুপালি পর্দায়। ত্যাগের জীবন থেকে ভোগের পথে মোনালিসার এই যাত্রা নিঃসন্দেহে আধুনিক সমাজের এক বিরল উদাহরণ।
সূত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন
রিফাত