ছবিঃ সংগৃহীত।
আমাদের সমকালীন নাগরিক জীবনে টেলিভিশন মানেই যেন হিন্দি সিরিয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাইলেও কি, না চাইলেও কি সবাইকে এক রকম সেগুলো দেখতে বাধ্য হতে হচ্ছে। কারণ পরিবারের মা, বোন, চাচিরা এখন টেলিভিশন বলতে শুধু হিন্দি সিরিয়ালই বোঝেন। সারা দিন রিমোট হাতে এ ধরনের ভারতীয় হিন্দি সিরিয়ালে বুঁদ হয়ে থাকেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব চ্যানেলে চলতে থাকে বিভিন্ন নামের ধারাবাহিক টিভি সিরিয়াল।
আগে যেখানে সন্ধ্যার পর পরিবার-পরিজনের সবাই মিলে একসঙ্গে গল্পগুজব করত, সবাই সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করত, সেখানে এখন এই হিন্দি সিরিয়াল দেখে মানুষ শিখছে কীভাবে অন্য পরিবারের ক্ষতি করা যায় কিংবা বউমা তার শাশুড়িকে বা শাশুড়ি বউমাকে শায়েস্তা করে তার নানান ফন্দি।
কীভাবে পরিবারের অন্যকে হেনস্থা করা যায়, কীভাবে অন্যের সংসার ভাঙা যায়, বাবা-মায়ের সঙ্গে ছেলের কিংবা বউয়ের সঙ্গে ছেলের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা যায় তার মন্ত্র হিন্দি টেলিভিশন সিরিয়াল থেকেই আমাদের সমাজে ঢুকছে।
তবে বর্তমানে ভারতীয় সিরিয়ালের চেয়ে পাকিস্তানি ড্রামার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু অভিনেতা অভিনেত্রী নয় বরং কাহিনী, গল্প, চিত্র সব মিলিয়েই পাকিস্তানি ড্রামা জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। পাকিস্তানি ড্রামার গল্পগুলো সমাজের নানা সমস্যা গুলো তুলে ধরে এবং বাস্তবিক হওয়ায় মানুষ সহজে নিজেদের সাথে মেলাতে পারে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দুই দেশের মানুষের জীবন যাপনে মিল থাকার কারনেও জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১০ টি জনপ্রিয় পাকিস্তানি ড্রামা-
(১) জিন্দেগী গুলজার হ্যেয়:
এক যুগ আগের এই সিরিয়ালকে পাকিস্তানি ড্রামা ইতিহাসের সর্বোৎকৃষ্ট সিরিয়াল বলা হয়। এত চমৎকার ফিলগুড সিরিয়াল এরপর আর হয় নি।
(২) মেরে পাস তুম হো:
পাকিস্তানি ড্রামা ইতিহাসের সর্বোচ্চ টিআরপি পাওয়া ড্রামা। মধ্যবিত্ত এক লোকের গল্প বলা হয় যে স্ত্রীকে ব্যাপক ভালোবাসলেও টাকার জন্য তাকে ছেড়ে যায় স্ত্রী।
(৩) আলিফ:
পাকিস্তানি ড্রামা ইতিহাসের অন্যতম সেরা সিরিয়াল হিসেবে আলিফের নাম থাকবে সবসময়। স্পিরিচুয়াল রোমান্টিক এই ড্রামা দর্শকদের এক নতুন জগতে নিয়ে যাবে
(৪) কাহানি:
পাকিস্তানের গতানুগতিক ধারার ড্রামা পাল্টে দেয় এই সিরিয়ালটি। সিরিয়ালের গল্প আবর্তিত হয় এক বোনকে ঘিরে যে তার ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে চায়।
(৫) এহদ এ ওয়াফা:
বন্ধুত্বের গল্প নিয়ে নির্মিত এহদ এ ওয়াফা। এতে চারজন বন্ধুর গল্প বলা হয়। জীবনের ভুল ভ্রান্তি স্যাক্রিফাইস সবই ওঠে আসে এতে।
(৬) পারিজাদ:
পাকিস্তানি মর্ডান টাইম ড্রামার মধ্যে বেস্ট ড্রামা ধরা হয় পারিজাদ কে। এই ড্রামায় একজন সহজ সরল ও সেনসিটিভ মানুষের কথা বলা হয় যিনি তার প্রেম ও প্রাত্যহিক জীবনে ব্যালেন্স করে চলছেন।
(৭) ইয়াকিন কা সাফার:
এই ড্রামায় তিনটি পরিবারের গল্প দেখানো হয়। যেখানে ওঠে আসে অনেক স্পর্শকাতর বিষয়।
(৮) দিওয়াঙ্গী:
২০১৯ সালের এই সিরিয়াল ভালোবাসার পাগলামির দিকটি বেশি সামনে এনেছে। ভালোবাসার জন্য একজন ধনী ব্যবসায়ী কি কি কান্ড ঘটাতে পারে সেটাই দেখানো হয়েছে এই সিরিয়ালে।
(৯) ইশক মুরশিদ:
২০২৩ সালের সবচেয়ে জনপ্রিয় ড্রামা। পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ভারতে ঝড় তুলেছিলো। এই সিরিয়ালে ভালো লাগার কেন্দ্রবিন্দু ছিলো দুলাল ও দুরিফিশানের রসায়ন।
(১০) কাভি ম্যায় কাভি তুম:
দীর্ঘ প্রায় এক দশক পরে ফাহাদ মোস্তফা কামব্যাক করেছেন এই সিরিয়াল দিয়ে। এই ড্রামা ব্লকবাস্টার হবার মূল রহস্য মোস্তফা আর সারজিনা জুটির খুনসুটি প্রেম। এই সিরিয়াল এত জনপ্রিয় হয় যে এর শেষ পর্ব সিনেমা হলে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ইসরাত