ছবি: সংগৃহীত।
অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতির নাম সম্প্রতি আবার আলোচনায় এসেছে, তবে এবার তার অবস্থান নিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের সময় তিনি আন্দোলনকারীদের বিপক্ষে অবস্থান নেন, এবং আওয়ামী লীগপন্থি হিসেবে পরিচিত এই অভিনেত্রী ‘আলো আসবেই’ নামের এক বিতর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বেশ সক্রিয় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি তার জন্য বেশ কঠিন হয়ে ওঠে।
‘আলো আসবেই’ গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে বেশিরভাগ এখন সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়েছেন এবং অনেকেই একপ্রকার আত্মগোপনে চলে গেছেন। তবে জ্যোতি এর কিছুটা ব্যতিক্রম। সরকার পতনের পর তিনি শিল্পকলা অ্যাকাডেমিতে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সে সময় ছাত্র আন্দোলনের সমর্থক শিল্পীরা তার বিরুদ্ধে তোপ দাগেন।
সম্প্রতি নিজের অবস্থান এবং জীবনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, “একটি সিনেমায় কাস্টিং হয়, পরিচালক বাসায় এসে গল্প শোনালেন, জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুটিং। চরিত্র নিয়ে ভাবনা শুরু হয়, অনেকদিন পর শুটিং করতে ভালো লাগছিল। এরপর তিন দিন পর পত্রিকায় দেখলাম, আমার জায়গায় এক বিদেশি অভিনেত্রীকে কাস্ট করা হয়েছে!”
তিনি আরও জানান, একটি ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কোনো ধরনের দায়িত্বে থাকার কথা ছিল তার, কিন্তু পরে শোনা যায়, তাকে না দেখলেই ভালো। আরও একটি ঘটনায়, এক আপার মেয়ে তার বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানান, তবে সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গেলে আরেক অভিনেত্রী জানিয়ে দেন, জ্যোতিকা জ্যোতিকে সেখানে থাকতে হবে না।
এছাড়া, বাসস্থানের সম্পর্কেও নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। জ্যোতি জানালেন, এপ্রিল মাসে তিনি একটি নতুন বাসায় চলে যান, যেখানে তার কুকুর থাকত। বাড়িওয়ালা তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন, তবে জুলাই মাসে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হলে বাড়িওয়ালা তাকে জানান, তিনি নিরাপত্তা বিষয়ক কোনো দায়িত্ব নিতে চান না। আগস্টে তিনি জানিয়ে দেন, জ্যোতি যেন কুকুর নিয়ে বাসার নিচে না যান এবং তার বাসা ছাড়ার জন্য একপ্রকার চাপ প্রয়োগ করেন।
শেষ পর্যন্ত, বাড়িওয়ালা তাকে এক দিনের নোটিশে বাসা ছাড়তে বলেন। ১৬ আগস্ট তিনি ফোন করে জানিয়ে দেন, জ্যোতিকে বাসা ছাড়তে হবে। এক দিনের মধ্যে তিনি নিজের মালপত্র নিয়ে কুকুরসহ একটি গেস্টহাউজে চলে যান এবং নতুন বাসা নেন। তবে বাড়িওয়ালা তার দুই মাসের এডভান্স ফিরিয়ে দেননি।
এই অভিনেত্রী, যিনি হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত, আওয়ামী লীগের দলীয় পদ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালক ছিলেন, সরকার পরিবর্তনের পর শিল্পকলা একাডেমির চাকরি হারান।
নুসরাত