ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২ পৌষ ১৪৩১

ত্রিভুজ প্রেমে পুরুষও সমানভাবে কষ্ট পায়: শত্রুঘ্ন সিনহা

প্রকাশিত: ১৩:১৪, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

ত্রিভুজ প্রেমে পুরুষও সমানভাবে কষ্ট পায়: শত্রুঘ্ন সিনহা

ছবি: সংগৃহীত

স্ত্রী পুনমকে প্রতারণার কথা স্বীকার করে শত্রুঘ্ন সিনহা বললেন— "ভালবাসার ত্রিভুজে শুধু নারী নয়, পুরুষও সমানভাবে কষ্ট পায়।"

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা সম্প্রতি লেহরেন রেট্রোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন যে তিনি স্ত্রী পুনম সিনহার সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন, যখন তার জীবনে সহ-অভিনেত্রী রীনা রায় ছিলেন। নাম উল্লেখ না করে তিনি স্বীকার করেন যে জীবনে তিনি "ভুল" করেছিলেন এবং এই ত্রিভুজ প্রেম তার মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। পুরুষদেরও ভালোবাসার জটিল সম্পর্কের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে জানান এই অভিজ্ঞ অভিনেতা।

শত্রুঘ্ন সিনহাকে তার জীবনের সেই সময় নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়, যখন পুনম এবং রীনা রায় দুজনেই তার জীবনে ছিলেন। তিনি বলেন, “আমি কারও নাম উল্লেখ করব না। তবে আমি আমার জীবনের সমস্ত নারীর প্রতি কৃতজ্ঞ। তাদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই, আর কখনও ছিলও না। আমি তাদের সম্পর্কে কোনো খারাপ ভাবনা পোষণ করি না। বরং তারা আমাকে আরও ভালো মানুষ হতে সাহায্য করেছে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “যখন একজন পুরুষ প্রকৃতপক্ষে ভালো মনের মানুষ এবং একই সঙ্গে দুটি সম্পর্কের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকে, তখন তার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর অনেক প্রভাব পড়ে। আপনি অপরাধবোধ অনুভব করেন। যখন আপনি প্রেমিকার সঙ্গে বাইরে থাকেন, তখন মনে হয় স্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন। আর যখন স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন, তখন প্রেমিকার প্রতি অন্যায় করার অনুভূতি হয়। আপনি নিজেকে প্রশ্ন করেন, ‘আমি কি তাকে খেলনা বানিয়ে রেখেছি?’”

জীবনের "ভুল" সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে শত্রুঘ্ন সিনহা বলেন, “আমি নিশ্চিতভাবে জীবনে ভুল করেছি। পটনা থেকে উঠে এসে এমন গ্ল্যামার আর জৌলুসের দুনিয়ায় এসে পথ হারানো ছিল স্বাভাবিক। তারকাখ্যাতি কীভাবে সামলাতে হয়, তা জানতাম না। মানুষ এ জগতে সহজেই হারিয়ে যায়। আমার পাশে কোনো অভিভাবক ছিল না, যে আমাকে সঠিক পথ দেখাবে। তবে পুনম আমার জীবনে আসার পর তিনি আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন।”

রীনা রায়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, “আমি নাম উল্লেখ করতে চাই না, তবে ওই ব্যক্তির সঙ্গে যা কিছু ঘটেছে, আমি কৃতজ্ঞ। তার কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছি এবং অনেক কিছু শিখেছি। আমার কোনো অভিযোগ নেই।”

শত্রুঘ্ন সিনহা আরও বলেন, “আমি বলতে চাই, শুধু ত্রিভুজ প্রেমে থাকা নারীরাই ভোগেন না, পুরুষরাও সমানভাবে কষ্ট পান। এমন পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে একজন পুরুষেরও লড়াই করতে হয়, এমনকি সে নিজেও যদি সম্পর্কের এই জটিলতা থেকে মুক্তি চায়।”

১৯৭৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত কালীচরণ সিনেমার সেটে শত্রুঘ্ন সিনহা ও রীনা রায়ের প্রথম দেখা হয়। এরপর তারা মিলাপ, সংগ্রাম, সৎ শ্রী আকাল এবং চোর হো তো অ্যায়সা-এর মতো ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেন। এই সময় তারা একে অপরের কাছাকাছি আসেন। কিন্তু পরে শত্রুঘ্ন সিনহা পুনমের সঙ্গে বিয়ের ঘোষণা দেন।

রাজীব শুক্লার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে শত্রুঘ্ন সিনহা তার এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, “জীবনে এমন সময় আসে, যখন সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু একবার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে, তা সব সময় সবার পক্ষে যায় না।”

মেহেদী কাউসার

×