ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একই গতিতে ছুটে চলছেন অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ। বিশেষ করে টিভি নাটকে তার পথচলা অন্যদের থেকে একটু ব্যতিক্রমই বলতে হয়। কখনো স্রোতের জোয়ারে তাকে গা ভাসাতে দেখা যায়নি। নিজের মতো করেই ক্যারিয়ার এগিয়ে নিয়ে চলছেন। ছোট পর্দার বাইরে সিনেমাতেও এ অভিনেতার অভিষেক হয়েছে। ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’ ও ‘ভালোবাসা এমনই হয়’ এ দুটি সিনেমায় দেখা গেছে তাকে। এর মধ্যে কেটে গেছে প্রায় ১০ বছর। এক দশক পর ফের বড় পর্দায় আসছেন তিনি। ২৯ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে আসছে তার নতুন সিনেমা ‘ভয়াল’। সার্টিফিকেশন বোর্ড চালু হওয়ার পর দেশের প্রথম প্রাপ্তবয়স্কদের সিনেমা হিসেবে এ গ্রেডে ছাড়পত্র পেয়েছে এ সিনেমাটি। বিপ্লব হায়দার পরিচালিত এ সিনেমায় ইরফানের বিপরীতে অভিনয় করেছেন আইশা খান।
১০ বছর পর বড় পর্দায় ফেরা নিয়ে ইরফান জানালেন, ‘বিশাল একটা ব্রেক। মানসিক প্রস্তুতি নিয়েই এতবছর পর ‘ভয়াল’ দিয়ে সিনেমায় আসছি। ভিন্ন কিছুর কথা চিন্তা করেই ফের সিনেমায় এসেছি। তার মানে এই না যে মারদাঙ্গা কিছু নিয়ে ফিরছি। সিনেমা তো বিভিন্ন রকম হতে পারে। সব ইন্ডাস্ট্রিতেই ভিন্ন ধরনের সিনেমা হয়। সবগুলো যে অ্যাকশন সিনেমা হয় এমন না। এটুকু বলতে পারি, ‘ভয়াল’ ভিন্ন আঙ্গিকের সিনেমা। সিনেমাটি নিয়ে প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভয়াল সিনেমার গল্প পাহাড়ি অঞ্চলের একেবারেই আলাদা একটি গল্প। যেটা কিনা নির্মাণ হয়েছে গ্রামের রাজনীতির ওপর একটি ছেলে ও মেয়ের সামাজিক অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে। পুরো গল্পটাই ভিন্ন। এমন গল্পের সিনেমা আমাদের দেশের আর কখনো হয়নি। প্রত্যেকটি কাজের ক্ষেত্রে যেমন প্রস্তুতি থাকে এটার ক্ষেত্রে একটু বেশিই ছিল। কারণ, পাহাড়ি অঞ্চলের যুবকের চরিত্রটা ধারণ করা ছিল একটু কঠিন। সেটা করতে সময় লেগেছে। আলাদা করে প্রস্তুতি নিয়েই শূটিংয়ে নেমেছি। বাকিটা দর্শক বলবে।’
নাটক, ওটিটির গণ্ডি পেরিয়ে ইরফান এখন নিয়মিত কাজ করতে চান সিনেমায়। তার কথায়, এখন আমি পুরোটা সিনেমায় মনোযোগী হতে চাই। সব ঠিকঠাক থাকলে সিনেমাতেই কাজ করব। এক্ষেত্রে দর্শকেরও একটা চাহিদার বিষয় আছে। কারণ, সবচেয়ে বড় বিচারক তো দর্শক। তারা যদি আমাকে চান তাহলে অবশ্যই সিনেমা করব।’
নাটকের ব্যস্ততা নিয়েও এ অভিনেতা কথা বলেন। তার ভাষ্য, ‘বড় পর্দার দিকে বেশি মনোযোগ বেশি দেওয়ায় নাটক কমিয়ে দিতে হয়েছে। আগে নিয়মিত নাটকে কাজ করতাম। এখন নাটকে কম অভিনয় করছি। গল্প ঠিকঠাক থাকলে মাসে হয়তো দুটি নাটকে কাজ করছি। আমি যেহেতু নাটকের ছেলে। তাই চাইলেই নাটক ছেড়ে দিতে পারব না। কারণ, আমার দর্শক এখান থেকেই তৈরি।’
নাটকের মান, উদ্ভট নাম ও ভিউয়ের অসুস্থ প্রতিযোগিতা নিয়ে প্রায়ই সমালোচনার শিকার তারকারা। বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন ইরফান। তার মতে, ‘এটাতে এখন কিছু করার নেই। এখনকার নাটক একটি ফরমেটে নির্মাণ হয়। ভিউটাই এখন নাটকের মূল বিষয়। যেটা পাশ-কাটানোর সুযোগ নেই। নাটকের ক্ষেত্রে টিভি চ্যানেলগুলোও এখন ইউটিউব কেন্দ্রিক। সুতরাং ইউটিউবে ব্যবসা করতে হলে দর্শক যেভাবে চাইবে সেভাবেই কন্টেন্ট দিতে হবে। এখনে কেউ সস্তা জিনিস দেখতে পছন্দ করে আবার কেউ মানসম্মত জিনিস দেখতে পছন্দ করেন। কিন্তু স্মার্ট কন্টেন্ট দেখার দর্শক ইউটিউবে অনেকটাই কম।’ বছর প্রায় শেষের দিকে। এ বছরের পরিকল্পনা কতটা পূরণ হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে ইরফন জানালেন, এ বছর সবার জন্যই খানিকটা ভিন্ন ছিল। বছরের শুরুতে নির্বাচন। বছরের মাঝে আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন। তারপরও যা চেয়েছি হয়ত সেরকম হয়নি। বছর শেষে একটা সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।